লিয়াকত: রাজশাহী পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন খয়রার ধার গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসে মোফাজ্জল হোসেন (২৬) নামে এক যুবক গলায় ফঁাস দিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি তানোর উপজেলার চান্দুরিয়া ইউনিয়নের বাগধানী জুরানপুর গ্রামের ইসরাফিলের ছেলে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মাসে তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। কনে ৪ নং হরিপুর ইউনিয়নের খয়রার ধান গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে রিয়া খাতুন। কিন্তু বিয়ের কিছু দিন পরেই স্ত্রী রিযা জাসেত পারেন স্বাম িনেশায় আসক্ত। এরপর থেকে রিয়া তার শ্বশুর বাড়িতে যেতে অস্বীকার করেন।
এরপর রিয়ার বাবা মা তাকে বেশ কয়েকবার জোরপূর্বক স্বামীর বাড়িতে পাঠান। কিন্তু গত কয়েকদিন আগে শ্বশুরবাড়ি থেকে স্বামীসহ নিজ বাড়িতে এসে রিয়া খাতুন খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেন এবং নেশা খোর স্বামীর সংসার করবেন না বলে পরিবারের সদস্যদের জানান।
এ অবস্থায় মেয়ের বাবা ছেলের বাবাকে ডেকে নেন এবং চেয়ারম্যান এর কাছে বসে একটা ফায়সালা করে নেওয়ার কথা বলেন। সে মোতাবেক জামাই মোফাজ্জল হোসেনকে বিকেলে তার শশুর ও স্থানীয় বাসিন্দা, মাহাবুল ও কারিমের সহযোগিতায় হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় নিয়ে যান। পরদিন সকালে বসে কাবিননামা সহ সকল বিষয়ে ফায়সালা করার উদ্দেশ্যে আরিফ ও নিমাই চন্দ্র দাস নামে দুইজন গ্রাম পুলিশের হেফাজতে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে রাখা হয় তাকে। কিন্তু ফয়সালার আগের দিন রাতেই তিনি গলায় ফঁাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এ বিষয়ে ৪ নং হরিপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বজলে রেজভী আল হাসান মুঞ্জিল বলেন, ঘটনা সত্য। জামাই মোফাজ্জল হোসেনকে রাখা হয়েছিল ফয়সালা করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু রাতেই সে আত্মহত্যা করেছে বলে তিনি শুনতে পান। পরিষদে সারারাত আটকে রেখে বিচার করার কোন বিধান আছে কিনা চেয়ারম্যানের নিকট জানতে চাইলে তিনি কোন প্রকার সদুত্তর তিনি দিতে পারেনি।
এদিকে মৃত মোফাজ্জল ইসলামের শ্বশুর রফিকুল ইসলাম বলেন, মেয়েটা শ্বশুরবাড়ি যেতে না চাওয়ায় জামাইকে আমরা ফিরে যেতে বলি। কিন্তু ফিরে না গিয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে। তাই চেয়ারম্যানের স্বরনাপন্ন হয়ে তার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আবেদ করেন তিনি। পরে গলায় ফঁাস দিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে বলে জানতে পারেন বলে জানান শশুর। লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পোস্টমর্টেম এর জন্য পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ পেয়ে মোফাজ্জলের পরিবারের লোকেরা হাসপাতালে এসে এই মৃত্যুকে ‘অস্বাভাবিক’ দাবি করে বলেন, দেন মোহরের টাকা আদায় করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিলো। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে যানা যায়। এদিকে দামকুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, এবিষয়টি সম্পন্ন সিআইডি দেখছে এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো মামলা করেনি।