২০১৭-১৮ অর্থবছরের ১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রার এক হাজার শতাংশ বা ১০ গুণ কৃষিঋণ বিতরণ করেছে বাংলাদেশে কার্যরত বিদেশি ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। চলতি বছর ব্যাংকটি কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১ কোটি টাকা। ব্যাংকটি জুলাই-মে ১১ মাসে বিতরণ করেছে ১০ কোটি টাকা; যা লক্ষ্যমাত্রার হাজার ভাগ।
অতীতে প্রায় তিন বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অমান্য করে ব্যাংকটি কৃষিঋণ বিতরণ করেনি। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের অ্যাকাউন্টে রক্ষিত টাকা থেকে জরিমানা হিসেবে টাকা কেটে রেখেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, অতীতের জরিমানার টাকা প্রত্যাহারের জন্য ব্যাংকটি লক্ষ্যমাত্রার ১০ গুণ কৃষিঋণ বিতরণ করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশে কার্যরত রাষ্ট্রায়ত্ত, বিশেষ ও দেশি-বিদেশি সকল ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের ২ শতাংশ কৃষি খাতে বিতরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের পল্লী অঞ্চলে শাখা নেই বা বিশেষ অসুবিধার কারণে নিজেরা বিতরণ করতে পারবে না, সে সব ব্যাংককে দেশের ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা বা দেশের কৃষিপণ্য বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে তুলনামূলক কম সুদে বিতরণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যে সব ব্যাংক নির্দেশনা মোতাবেক কৃষিঋণ বিতরণ করবে না, বা কম বিতরণ করবে তাদের সমপরিমাণ টাকা জরিমানা দিতে হবে। সে সময় জরিমানার টাকা ও বাংলাদেশ ব্যাংকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে রাখার নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে পরবর্তী বছর লক্ষ্যমাত্রার পাশাপাশি আগের বছরের অনার্জিত লক্ষ্যমাত্রার সমপরিমাণ টাকা বিতরণ করলে জরিমানার টাকা ফেরত পাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছর ধরে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের বাংলাদেশের শাখা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনামতো ঋণ বিতরণ করছিল না। ফলে বারবার পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিভিন্ন হারে জরিমানা করে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-মে ১১ মাসের কৃষিঋণ বিতরণের তথ্য অনুযায়ী বিদেশি এই ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ১০ কোটি টাকা। একই সময়ে কৃষকের কাছে মেয়াদ শেষে ৮৪ লাখ টাকা আদায় করেছে ব্যাংকটি। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের কৃষকের কাছে ব্যাংকটির বিতরণ করা টাকা রয়েছে ১০ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এরমধ্যে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। যা মোট কৃষিঋণের প্রায় ১৯ শতাংশ।