খেলার খবর: এই বিশ্বকাপের সেরা তারকা কে? বলবেন, যে দুজনের মধ্যে একজনের হওয়ার কথা ছিল, তাঁরা তো নেই! দুজনেই তো হেরে বাড়ির পথ ধরেছেন। কিন্তু থাকলেও বা কী যায় আসত? অন্তত শেষ ষোলোরই পথটুকু পর্যন্ত। এই পথেই যে মেসি-রোনালদোকে টেক্কা দিয়েছেন নেইমার।সেটা ব্রাজিল যে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে আর আর্জেন্টিনা-পর্তুগাল বাড়ির পথ ধরেছে, সে জন্য নয়। এ নিখাদ পরিসংখ্যানের হিসাব। যেখানে নিন্দুকদের চোখে ‘বাতাসের ধাক্কায় মাটিতে পড়ে যাওয়া’ এই ছেলেটিই সেরা। প্রতিপক্ষের রক্ষণে সবচেয়ে বেশি শট (২৩) নেইমারের। এর মধ্যে গোলমুখে সবচেয়ে বেশি শট রাখতে পারা খেলোয়াড়টিও নেইমার। ১২টি শট তার লক্ষ্যে বা অন টার্গেট। কিন্তু এখানেই শেষ নয়!
ব্রাজিলের এই চার ম্যাচে নেইমার খেলেছেন তাঁর দলের জন্য, সতীর্থদের জন্য। প্রমাণ চাই? জেসুস-কুতিনহোদের জন্য সবচেয়ে বেশিসংখ্যক গোলের সুযোগও (১৬) সৃষ্টি করেছেন এই নেইমার। এসব পরিসংখ্যান নিশ্চয়ই প্রতিপক্ষের ট্যাকলে তাঁর বারবার পড়ে যাওয়ার দৃশ্যকে ভুলিয়ে দেবে। আর বারবার পড়ে যাওয়ার কথা যে উঠছে, পরিসংখ্যান সেখানেও কিন্তু নেইমারের পক্ষে। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিবার ফাউলের (২৩) শিকার হওয়া খেলোয়াড়টিও এই নেইমার। আর তা তিনি যেভাবেই সামলান, প্রতিপক্ষের ধেয়ে আসা খেলোয়াড়টিকে ড্রিবলিংয়ে আচ্ছন্ন করে ফেলার কৃতিত্বটাও তাঁর বেশি। এখন পর্যন্ত এই আসরে ৩৫টি সফল ড্রিবলিং করেছেন নেইমার।
ব্রাজিলের এই ফরোয়ার্ড আরেকটি জায়গায় মেসি-রোনালদোর চেয়ে এগিয়ে। দুটি বিশ্বকাপ মিলিয়ে এ পর্যন্ত ৬ গোল করলেন নেইমার। এ জন্য প্রতিপক্ষের গোলপোস্টে তাঁকে ৩৮টি শট নিতে হয়েছে। বিশ্বকাপে মেসি-রোনালদোদের ৬টি করে গোল করতে যথাক্রমে ৬৭ ও ৭৪টি করে শট নিতে হয়েছে। বিশ্বকাপে নেইমার রেকর্ডের কাছে ম্লান এ সময়ের সেরা দুই খেলোয়াড়। গোলসংখ্যায় মেসিকে তো ধরে ফেললেনই, রোনালদোও বেশি দূরে নয়। আর দুটি গোল করতে পারলে বিশ্বকাপ গোলে ২৬ বছর বয়সী নেইমার পেছনে ফেলে দেবেন দুই মহাতারকাকে। কে জানে, হয়তো এই বিশ্বকাপেই!
বিশ্বের এই অন্যতম সেরা দুই খেলোয়াড়ের চেয়ে বেশি কার্যকর। আর তাতে পুড়ে খাক হলো মেক্সিকো। আজ তো শুধু নেইমারের কাছে হেরেই বিদায় নিল দলটি। বিশ্বকাপের শেষ ষোলো থেকে এ নিয়ে তাদের বিদায় ঘটল টানা সপ্তমবারের মতো! নেইমারের কৃতিত্ব পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। শেষটা আরও একটি তথ্যে হোক। বিশ্বকাপে নকআউট পর্বে একটিও গোল করতে না পারাদের তালিকায় মেসি-রোনালদোর সঙ্গে নেইমারও ছিলেন।গতবার নকআউট পর্বে দুটি ম্যাচ খেললেও গোল পাননি। এর মধ্যে কোয়ার্টার ফাইনালে তো কলম্বিয়ার বিপক্ষে সেই আলোচিত চোট পুরো ম্যাচটা শেষ করতে দেয়নি তাঁকে। এবার নকআউট পর্বে প্রথম সুযোগেই গোল করলেন নেইমার। ২-১ গোলে হেরে যাওয়া পর্তুগালের অধিনায়ক কিংবা ৪-৩ গোলে হেরে যাওয়া আর্জেন্টিনার অধিনায়ক ভাবতে পারেন, নিজেদের গত ম্যাচে গোলের খাতা খুলতে পারলে হয়তো দ্বিতীয় রাউন্ডেই থেমে যেতে হতো না তাঁদের!