লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে ২৬শে মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস৷ লাল সবুজের পতাকাএই স্বাধীনতা, এই দিনে জাতি স্মরণ করছে বীর শহিদদের৷ স্বাধীনতা দিবস তাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে মুক্তির প্রতিজ্ঞায় উদ্দীপ্ত হওয়ার ইতিহাস৷৫০বছর আগে এই দিনেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেশকে দখলদারমুক্ত করার সংগ্রামে নামার আহ্বান জানিয়েছিলেন।পাকিস্তানি ঘাতক সেনাবাহিনী ২৫ মার্চ রাতে যখন রাজধানীতে এক নৃশংস গণহত্যায় মেতে ওঠে, তখন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে নিজ বাসায় গ্রেপ্তার হওয়ার আগমুহূর্তে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে একটি বার্তা পাঠান। বার্তায় তিনি বলেছিলেন, ‘আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র। একে যে রকম করেই হোক শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।চট্টগ্রামে অবস্থানরত বাঙালি সেনা কর্মকর্তা মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা তাঁর পক্ষে বেতারে পাঠ করলে দেশবাসী স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হওয়ার বিষয়টি জানতে পারে।পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হামলা শুরুর পরপরই দেশের বীর সন্তানেরা বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশমতো যার যা আছে তা-ই নিয়ে মুক্তিসংগ্রামে অংশ নেয় বাঙালি। নয় মাস মরণপণ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় চিরকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। আমি ক্ষুদ্র কলাম লেখক কবির নেওয়াজ রাজ মনে করি,জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা বীর সন্তানদের।১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তনি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সব রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও সব সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা।সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের আগে বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোন মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। মূহূর্তের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।সেই সময় বাস্তবতা ও নিরাপত্তার কারণে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার এই ঘোষণা নথি সংরক্ষণ করা সম্ভব ছিল না। পরবর্তী সময়ে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার মূল্যবান দলিলটি সেখানে লিপিবদ্ধ হয়েছে এভাবে ‘ইহাই হয়তো আমাদের শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছে, যাহার যাহা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।
কলামিষ্ট কবির নেওয়াজ রাজ
এমএসএস”রাষ্ট্রবিজ্ঞান,সিসি” জার্নালিজম,এলএলবি”এফই।