শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
ভবনের নকশা অনুমোদনে এসটিপি স্থাপনের শর্ত আরোপ করতে বললেন গণপূর্তমন্ত্রী পাহাড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারে আমলে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে-পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী মাদক পাচার এবং মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দিলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী  নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে সরকার নিরন্তর কাজ করছে” –মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অবসরে যাচ্ছেন অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ মাজহারুল ইসলাম বিপিএম কালিগঞ্জের পল্লীতে প্রবাসীর জমি থেকে বৃক্ষ নিধনের অভিযোগ উঠেছে  বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ২৮৮ জন বিজিপি, সেনা ও অন্য সদস্যদের প্রত্যাবাসন যাদের কোন জাত নেই, যাদের কোন ধর্ম নেই তারাই শ্রমিক হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে- ফরিদপুরে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আইন-শৃঙ্খলার ব্যত্যয় হলে সরকারের উন্নয়ন কাজেরও ব্যত্যয় ঘটবে- পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী চলমান বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার নির্দেশ গণপূর্তমন্ত্রীর।

কোনো কৃতজ্ঞতাতেই স্বপণ ভাইয়ের ঋণ শোধ করতে পারবো না।।মানুষের কল্যাণে প্রতিদিন 

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২১, ৭.৩৪ এএম
  • ১৮৬ বার পঠিত

মানুষ মাত্রই বোধহয় প্রশংসাকামী, আবেগঘন স্বীকৃতি প্রাপ্তির গোপন ইচ্ছা পোষণকারী। কিন্তু আমার অিিতপ্রিয় সংবাদকর্মি সামসুল আলম স্বপন ভাই যে স্বীকৃতির পাহাড় ছুইয়ে ছাড়বেন তা কল্পনাও করিনি কখনো। বহুদিন আগে কোনো এক গুরুজনের কাছে শুনেছিলাম সবচেয়ে বুদ্ধিমান মানুষটি দুনিয়ার সর্বোচ্চ বোকা সাজতে পারে। আর আজ জানলাম, পৃথিবীতে উচু মনের মানুষগুলো মুহূর্তেই নিজেকে সর্বনিম্নে দাঁড় করিয়ে অন্যদের অনেক অনেক উচুতে রাখতেই বেশি পছন্দ করে।

আজ স্বপন ভাই কয়েক লাইনের স্মৃতিকথায় ঠিক ২৩টি বছর পেছনে নিয়ে গেলেন আমাকে। কত স্মৃতি, কথ কথা, পদে পদে আতঙ্ক, জীবনের বিপন্নদশা জেনেও পথ থেকে পথে, নিভৃত জনপদে তথ্য তালাশে ছুটে বেড়ানোর অদম্য নেশা যেন পেয়ে বসেছিল আমাদের। ১৯৯৯ সালে কাজী আরেফসহ পাঁচ জাসদ নেতার নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় কুষ্টিয়ায় পা রেখেই শিখেছিলাম ‘একজন সাংবাদিকের সোর্সের বিস্তৃতি’ কতটা মজবুত হতে পারে। তা শিখেছিলাম আমার বন্ধু মঞ্জুর এহসান চৌধুরী, হালিম আর সামসুল আলম স্বপন ভাইয়ের কাছ থেকে। তাদের সোর্সের মজবুত তথ্য বলয় থাকার কারণেই কালীদাসপুরের সংঘটিত হত্যাকান্ডের পরদিনই আমি লিখতে পেরেছিলাম চরমপন্থী খুনিদের কার হাতে কোন অস্ত্র ছিল, কে কাকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছুঁড়েছিল। কেউবা জাসদ নেতা পৌর মেয়রের মুখের ভেতরে বন্দুকের নল ঢুকিয়ে উপুর্যপরি গুলি চালিয়ে হত্যা করেছিল। স্বপণ ভাই ছিলেন দূরন্ত সাহসী। তথ্যের ভেতরে পরিভ্রমণ করতে করতে কোনো তথ্যই আর লিখতে বাকি থাকতো না তার। এজন্য প্রায়ই বন্ধু মঞ্জুর এহসান চৌধুরী গালাগাল দিতেন স্বপণকে, বলতেন নিজেদের রক্ষার দেয়াল হিসেবেও কিছু তথ্য অপ্রকাশিত রাখতে হয়। কে শোনে কার কথা, ধর্মীয় বুলিতেও কী স্বপণ ভাইয়ের তথ্য ফাঁস করা বন্ধ হয়??
স্বপণ ভাইয়ের গোটা কলিজা জুড়ে থাকা সাহসের পাহাড় ডিঙ্গাতে গিয়ে তিনদিনের মধ্যেই আমি কুষ্টিয়ায় অবাঞ্চিত মানুষে পরিনত হই, ক্ষণ গণনা চলতে থাকে গুলিতে প্রাণ হারানোর। কিন্তু চরমপন্থী বাহিনীর ভেতরেও যে স্বপণ মিঠুর শক্তিশালী সোর্স ছিল। তাদের বদান্যতাতেই আগাম খবর পেয়ে যাই। সেক্ষেত্রে একবিন্দু সময় নষ্ট করতে রাজি ছিলেন না আমার বন্ধুজনরা। ইয়ামাহা আর এক্স ১২৫ হোন্ডা স্টার্ট দিয়ে চালকের আসনে স্বপন ভাই, মাঝখানে আমি আর পেছনে বন্ধু হালিম উঠেই দে ছুট ঢাকামুখে। পেছনে কেউ টের পায় তা ভেবে আমার ব্যাগ ব্যাগেজ সবই পড়ে থাকে দৈনিক আন্দোলনের বাজার পত্রিকার সম্পাদক মিঠু চৌধুরীর গুপ্ত কক্ষটিতে। সেখানেই আমার নিরাপদে থাকার ব্যবস্থা করা ছিল। আমরা এক মোটর সাইকেলে দ্রæতগতিতে কুমারখালী, পাংশা, রাজবাড়ী হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটের দিকে যেতে থাকলেও আরো তিনটি সন্দেহভাজন মোটর সাইকেল চলছিল আমাদেরই আশেপাশে। তবে নিরাপদে ঢাকায় পৌঁছার পর জানতে পেরেছিলাম বন্ধু মিঠু চৌধুরী বিশেষ ব্যবস্থায় চরমপন্থী স¤্রাট সিরাজ বাহিনীর ছয় অস্ত্রধারীকে আমাদেরই নিরাপত্তার জন্য ছায়া সঙ্গী হিসেবে পাঠনোর ব্যবস্থা করেছিল।
স্বপণ ভাই ওই এবারই আমার জীবন রক্ষায় ঝুঁকি নিয়েছিলেন তা কিন্তু নয়। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে সরকার গঠনের প্রাআলেই আবার কম্পমান হয়ে উঠে দক্ষিণ পশ্চিমঞ্চলীয় জেলাসমূহ। আমি হাজির হয়ে যাই ঝিনাইদহ জেলা জনপদে। নবনির্বাচিত এমপি মশিউর রহমানের সমর্থকরা তখন আওয়ামীলীগ অধ্যূষিত গ্রামগুলো জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করছিল, হামলা, লুটপাট, নারী নিগ্রহের ঘটনা ঘটছিল মুহূর্তে মুহূর্তে। আমার স্পষ্ট মনে আছে, সেদিন ছিল সোমবার। ঢাকার মুক্তকন্ঠ পত্রিকার প্রথম পাায় ছয় কলাম জুড়ে ছাপা হয়েছিল আমার সংবাদ : “আজ মনোহরপুরবাসীর ভাগ্য নির্ধারনের দিন” শিরোনামে। রাত থেকেই খুলনার ডিআইজির নেতৃত্বে শত শত পুলিশ হাজির হয় ঝিনাইদহ পুলিশ লাইনে, এসপি অফিসের আঙ্গিনায়।
আমার প্রতিবেদনে উল্লেখিত গ্রামগুলোর কয়েক শ’ পরিবারের জীবন বাঁচাতে পুলিশ রীতিমত যুদ্ধসাজে প্রস্তুতি নিতে থাকে। কিন্তু ততক্ষণে আমি যে চরম অনিরাপদ হয়ে আছি তার ঘূর্ণাক্ষরও টের পাইনি নিজে। এটাও আগাম টের পেয়েছিলেন ঝিনাইদহ’র তৎকালীন প্রভাবশালী পত্রিকা দৈনিক অধিবেশন পত্রিকার সম্পাদক আলী কদর পলাশ ভাই। ভয় পেতে পারি এমন আশঙ্কায় তা প্রকাশও করেননি তিনি। হঠাত রাত সাড়ে চারটার দিকে কঠিন শীতেই ডেকে তোলা হলো আমাকে, বলা হলো বাসার সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে নিঃশব্দে মোটর সাইকেলে উঠেন। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো নিচে নেমে এক অজ্ঞাত ব্রক্তির মোটর সাইকেলে চেপে বসতেই তা যেন ঘন্টায় আশি কিলোমিটার বেগে ছুটতে থাকলো। প্রচন্ড শীতে এমনিতেই জুবুথুবু অবস্থা…তারমধ্যে মোটর সাইকেল চলার বাড়তি বাতাসে রীতিমত দেহ হীম হয়ে যাবার জোগাড়। মাঝেমধ্যেই হাত পা অবশ হয়ে যাচ্ছে সে কথাও মুখ ফুটে বলতে সাহস পাচ্ছি না।
এভাবেই ঘন্টা দেড়েক মোটর সাইকেল চলার পর এক মসজিদের সামনে টিমটিমে কুপির আলোতে চা কেনাবেচার ছোট্ট দোকানটিতে হোন্ডা থামিয়েই চাদর মাপলারে ঢাকা মুখখানা উন্মোচন করে হোন্ডা চালক বললেন এখানেই আগুনে হাত পা ছেকে নিন, খেয়ে নিন চা সিগারেটও। হোন্ডা থেকে নেমে চালকের চেহারার দিকে তাকিয়েই চিৎকার করে বলে উঠেছিলাম স্বপন ভাই আপনি?? তখনই তিনি জানিয়েছিলেন আমরা এখন কুষ্টিয়ার জেলা সীমানায়, এখানে ঝিনাইদহের হারামিগুলোর অস্তিত্ব নেই, যারা আছে আশেপাশে তারা সবাই চেনে। আপনি এখন শতভাগ নিরপদ। আমি শুধু কুয়াশায় ভেজা স্বপণ ভাইয়ের ফর্সা চেহারাটার দিকে তাকিয়ে নিজের চোখের পানি সংবরণে ব্যস্ত ছিলাম।
রাতের অন্ধকারে কঠিন শীতকে উপেক্ষা করে একাকী ভদ্রলোক ছুটে গিয়ে ঢাকার এক সংবাদ কর্মিকে তুলে নিয়ে এলেন, জীবন বাঁচানোর আনন্দে তিনি যেন আরো বেশি খুশি, আরো বেশি তৃপ্ত। আপনার প্রতি কোনো কৃতজ্ঞতা জানিয়েই শেষ করতে পারবো না, পারিওনি। শুধু আমার পরিবারের আজীবন সদস্য হয়ে আছেন আপনি স্বমহিমায়। ভাল থাকুন স্বপন ভাই, অনেক ভাল। আপনার মর্যাদা হোক আকাশসম…আর সেদিকে তাকিয়েই যেন তৃপ্তির হাসি হাসতে পারি আমরা আমৃত্যু।

লেখকঃ সাইদুর রহমান রিমন ,ইনভেস্টিগেশন সেল “বাংলাদেশ প্রতিদিন”। 

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
  12345
27282930   
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com