বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে সরকার দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও বৃষ্টির মধ্যে স্কুল কলেজের ইউনিফর্ম পরেই রাস্তায় নেমেছে শিক্ষার্থীরা।সকাল থেকে রাজধানীর অন্তত ২০টি পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে বলে ট্রাফিক পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ফলে গত তিন দিনের মতই ঢাকার বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এদিকে গত কয়েক দিনের বিক্ষোভের মধ্যে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় পরিবহন মালিকরাও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাস ছাড়ছেন না। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। একটি বাসের চাপায় গত ২৯ জুলাই কুর্মিটোলায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর থেকেই শিক্ষার্থীর এ বিক্ষোভ চলছে। গত দুই দিনে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে অনান্য শহরেও।এই প্রেক্ষাপটে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বুধবার রাতে ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে’ বৃহস্পতিবার দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনার কথা জানান।বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ অবরোধের খবর আসতে থাকে। উত্তরা, মহাখালী, মগবাজার, শাহবাগ, রামপুরা, ফার্মগেইট, আসাদগেইট, খিলগাঁও, মালিবাগ, শান্তিনগর, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থীরা আগের দিনের মতই মিছিল করছে এবং গাড়ি থামিয়ে চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করছে। পুলিশের ভূমিকায় তাদের এই পরীক্ষা থেকে পুলিশের গাড়িও ছাড় পাচ্ছে না।সাত রাস্তার দিক থেকে সচিবালয়ে যাওয়ার সময় মগবাজারে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে পড়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের গাড়ি। পরে তিনি বেরিয়ে এসে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়গুলো তিনি মন্ত্রিসভায় তুলবেন। পরে তাকে যেতে দেয় শিক্ষার্থীরা।বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশের পরনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইউনিফর্ম দেখা গেছে। তবে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় অনেকে সাধারণ পোশাকেও এসেছে। পুলিশের গাড়ি আটকানোর চেষ্টার সময় কারও কারও মুখে কাপড় পেঁচিয়ে রাখতেও দেখা গেছে।বিক্ষোভকারীদের হাতে দেখা গেছে- ‘নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘উই আর স্টুডেন্ট’, নট টেরোরিস্ট’- এরকম বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ও টুকরো কাগজ। রাস্তায় গোল হয়ে বসে সুরে সুরে স্লোগান দিতেও দেখা যায় কাউকে কাউকে। সকালে টঙ্গী কলেজগেট এলাকায় ময়মনসিংহ রুটের দুটি বাস ভাঙচুরের শিকার হয়। মাইলস্টোন কলেজ, উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রমিজউদ্দিন কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম পড়া শিক্ষার্থীরা অল্প সময়ের মধ্যে উত্তরা এলাকার রাস্তার দখল নেয়।মহাখালীর রেলগেইট এলাকায় বিএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।তারা রেল লাইনের দুইপাশে এবং সাতরাস্তা থেকে আমতলী যাওয়ার দুই দিকের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে গাড়ি আটকে চালক ও গাড়ির লাইসেন্স দেখছিলেন। কাগজ দেখাতে না পারলে গাড়ি পাঠাচ্ছিলেন পুলিশের কাছে। তবে তারা অ্যাম্বুলেন্স বা কোনো গাড়িতে রোগী থাকলে দ্রুত ছেড়ে দিচ্ছিলেন ।