ঢাকা বুধবার ৩০ জুন ২০২১: বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাঈদুর রহমান রিমন বলেছেন, পেশার স্বার্থে নির্যাতন কিংবা মামলা-হামলার শিকার সাংবাদিকদের অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করা উচিত। হুমকি ধমকি সাংবাদিকদের জন্য আগাম সতর্কতা। ভয়ের কিছু নেই বরং এথেকে সাংবাদিকদের সতর্ক হওয়া উচিত। বুধবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরার একটি হোটেলে বিএমএসএফ ঢাকা জেলা উত্তর শাখা কমিটির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেছেন।
সংগঠনের সহ-সভাপতি বেলায়েত হোসেনের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন বিএমএসএফ ঢাকা জেলা উত্তরের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মীর আলাউদ্দিন, ঢাকা দক্ষিনের সহ-সভাপতি সেহলী পাররভীন।
অনান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা উত্তর জেলা সহ-সভাপতি শাহজালাল উজ্জল, যুগ্ম-সম্পাদক আনিস লিমন, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম প্রমূখ।
প্রধান অতিথি আয়োজক নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ঢাকার সাংগঠনিক সম্মেলনসহ কাউন্সিলে ঢাকা উত্তরের আংশিক কমিটি ঘোষণার মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক বৈঠকের আয়োজন করে আপনারা যে সক্ষমতার পরিচয় দিলেন তা অবশ্যই প্রশংসাযোগ্য। সাংগঠনিক ক্ষেত্রে আপনাদের এই তড়িৎ কর্মতৎপরতা আমাদেরকে তথা বিএমএসএফ’কে আশান্বীত করেছে। এজন্য বিএমএসএফ এর কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক, সংগঠনের প্রাণপুরুষ আহমেদ আবু জাফরসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকেও আপনাদেরকে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানানো হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সর্বজনবিদিত সাংবাদিক সমাজ সবচেয়ে বিপদাপন্ন সময় পার করে চলছে। রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সকল স্তরে নিরীহ এ পেশাজীবী সাংবাদিকদের অঘোষিত শত্রু হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে, রাজনৈতিক সংগঠনসহ অন্যান্য পর্যায়েও সীমাহীন বৈরীতার শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। বাংলাদেশ অভ্যূদয়ের পর সাংবাদিক বিরোধী এমন জিঘাংসামূলক আচরণ, হিংসাত্মক মামলা হামলার আধিক্যতা অতীতে কখনই দেখা যায়নি। এমনকি স্বৈরাচার সরকার কিংবা সামরিক শাসনামলেও সাংবাদিকরা এতোটা নিগৃহিত হননি। ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ মহল ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরই সাংবাদিক বান্ধব হওয়া সত্তেও এমন নির্মমতা, বর্বরতার ধারাবাহিক ঘটনা কেন ঘটছে=সেসব খুঁজে বের করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাংবাদিকদের জন্য সৃষ্ট বৈরী পরিবেশে মধ্যেও সাংবাদিকদের স্বার্থ সুরক্ষাসহ সকল প্রকার নীপিড়ন নির্যাতনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ভূমিকা রাখার মতো একটা মাত্র সংগঠনই অবিরাম কাজ করে চলছে=তা হচ্ছে বিএমএসএফ। সারাদেশে সাড়ে তিন শতাধিক পূর্ণাঙ্গ শাখার কর্মতৎপরতায় হাজারো সংবাদকর্মিদের সৌহার্দের বন্ধন গড়ে উঠেছে। একই পরিবারের মতো ভালবাসা, মমতায় বাধা ঐক্যবদ্ধতার শক্তির সামনে ক্ষমতাধারী অনেক জুলুমবাজ অপশক্তিও নতি স্বীকারে বাধ্য হচ্ছে। যেখানেই সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে সেখানেই বিএমএসএফ প্রতিবাদী ভূমিকায় হাজির হয়েছে, নিরাপদ করেছে আক্রান্ত সাংবাদিকদের। এরইমধ্যে বিএমএসএফ সারাদেশের প্রতিটি শাখায় আইন উপদেষ্টা সংযুক্তির মাধ্যমে সাংবাদিকদের হয়রানিমূলক মামলাগুলো পরিচালনা করারও উদ্যোগ নিয়েছে, কেন্দ্রীয়ভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে জার্নালিস্ট শেল্টার হোম। বিএমএসএফ ঢাকা উত্তর সাংগঠনিক কর্মতৎপরতার শুরুতেই অভিনন্দিত বিএমএসএফ ঢাকা উত্তর কমিটির প্রতি আমরা আস্থা রেখে বলতে চাই, সাংবাদিক বান্ধব যাবতীয় কর্মকান্ডকে আরো বেগমান করে অচিরেই ‘মডেল কমিটি’তে উন্নিত হন। আপনাদের অনুসরণ করে গড়ে উঠুক ইতিবাচক কর্মতৎপরতা, আপনাদের কর্মসূচি দেখে দেখেই প্রতিবাদ, আন্দোলন, স্লোগান ধ্বণি ছড়িয়ে পড়ুক সারাদেশের সাংবাদিকদের কন্ঠে। এ কমিটির নেতৃবৃন্দসহ সদস্যরা সততার সাহসে বলিয়ান হয়ে উঠুন। সামাজিক দায়বদ্ধতার সাংবাদিকতা উপহার দিয়ে সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্য সম্পর্ক গড়ে তুলুন। মনে রাখতে হবে রাষ্ট্রের অসম ক্ষমতার দুর্নীতিবাজ ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে কৌশলগত ভাবেই সমন্বিত শক্তির প্রয়োজন হয়। আপনারা জানেন যে, বৃহত্তর উত্তরা, সাভার, আশুলিয়া, ধামরাইসহ আশপাশের এলাকাজুড়ে ভূয়া সাংবাদিক চক্র দাপিয়ে বেড়ায়। তাদের নানা অপসাংবাদিকতার কারণে পেশার সম্মান ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি বৃহত্তর সমাজে সাংবাদিকদের সম্পর্কে খুবই নিচু টাইপের বাজে ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। নিজেদের ত্রুটি বিচ্যুতি দূর করার মাধ্যমে আদর্শ সাংবাদিক হয়ে সাংবাদিক ও সাংবাদিকতার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে ভূমিকা রাখতেই হবে। বিএমএসএফ এর ঢাকা উত্তরে সদস্য গ্রহণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমি নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। বিতর্কিত ব্যক্তি, চিহ্নিত অপরাধী, মাদক ব্যবসায়ি, ঘোষিত চাঁদাবাজ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স খ্যাত অপরাধীদের মতো যাকে তাকে সদস্য বানিয়ে অসংখ্য জনবলের শাখা গঠনের কোনো প্রয়োজন নেই। সংখ্যায় কম হলেও প্রকৃত ও সৎ সাংবাদিকদের নিয়ে শাখা গঠন হলেও ক্ষতি নেই, বরং মর্যাদাবানও হবেন, অনেক শক্তিও থাকবে আপনাদের পেছনে। সবাই মিলে সাংবাদিকদের ১৪ দফা দাবি আদায়ের মাধ্যমে আগামি সাংবাদিকতার মানসম্পন্ন প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলি।