চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, একটি ঘর মাথা গোজার একটি ঠাই-ই শুধু নয়,এর সাথে জড়িয়ে আছে গভীর আবেগ,প্রিয়জনদের হাসিমাখা মুখ আর নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। গৃহহীন অসহায় মানুষগুলোর মর্মজ্বালা হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করেছেন “Mother of Humanity” খ্যাত দেশরত্ন, বঙ্গবন্ধুকন্যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
“আশ্রয়নের অধিকার,শেখ হাসিনার উপহার” এ স্লোগান কে হৃদয়ে ধারণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গৃহহীন ও ভূমিহীনদের দুইটি রুমবিশিষ্ট,শৌচাগার, রান্নাঘর সহ পাকাবাড়ি প্রদানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যে নিপুণ কারিগরেরা তাদের শ্রম,মেধা ও অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান দ্বারা প্রতিনিয়ত সহযোগিতা করেছেন, তারা হলেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগের কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রশাসন পরিবারের বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
আশ্রয়ন প্রকল্পের পথচলা শুরু হয় ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন ঘোষণার মাধ্যমে।
এ প্রকল্পের আওতায় চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে মোট ৩০৯ টি পরিবারকে গৃহ প্রদান করা হয়। এছাড়াও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর জন্য ২০ টি, আম্ফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৫টি এবং জেলা প্রশাসন ও ব্যক্তি পর্যায়ের সহযোগিতায় আরো ৯টি ঘর নির্মাণ করে উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যার ঘর নেই, কেবল সেই জানে ঘর কতটা মূল্যবান। এতগুলো হ্রতসর্বস্ব মানুষকে নূন্যতম বাজেটে এত সুন্দর ঘর উপহার দেওয়ার প্রয়াসটি ছিল শতাব্দীর দুঃসাহসী এবং প্রশংসনীয় এক পদক্ষেপ। কর্ম নিষ্ঠা আর গভীর আন্তরিকতা থাকলে যে মরুভূমিতে প্রাণসঞ্চারণ করে মরুদ্যানে রূপায়িত করা যায়, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত -এ আশ্রয়ন প্রকল্পের সাফল্য।
করোনা অতিমারীর বিভীষিকার মাঝেও বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে গৃহনির্মাণের নানা ধরনের কাজ যেমন মেঝেতে ঢালাই ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে কিনা,দরজা-জানালার কাঠ মানসম্মত কিনা,ইট বালু সিমেন্টের ক্রমবর্ধমান মূল্য যাচাই, খাস জমি যারা অবৈধভাবে দখল করে রাখে তাদের নিকট হতে জমি উদ্ধার, বেঁধে দেওয়া স্বল্প সময়ের সাথে দিয়ে পাল্লা দিয়ে এ ঘর নির্মাণের আপ্রাণ চেষ্টা প্রভৃতি শত প্রতিকূলতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যে সব অকুতোভয় মানুষগুলো বুকের দরদ ঢেলে দিনরাত কাজ করে গেছেন, তারা হলেন প্রশাসন পরিবারের চৌকস, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক সদস্যবৃন্দ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, “সমস্ত কর্মচারীকেই আমি অনুরোধ করি,যাদের অর্থে আমাদের সংসার চলে, তাদের সেবা করুন।” বঙ্গবন্ধুর এ আদর্শে উজ্জীবীত চুয়াডাঙ্গা জেলার জেলা প্রশাসকসহ সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কর্মচারীরা সিয়াম পালনরত অবস্থায়ও শারীরিক অসুস্থতাকে তুচ্ছজ্ঞান করে ঘর নির্মাণের এ মহা কর্মযজ্ঞ তদারকি, পরিদর্শন ও পরিবীক্ষণ করেছেন বারংবার।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এই স্বপ্ননীড় এর প্রতিটি ইট গাঁথা হয়েছে দেশপ্রেমের আবেগকে পুঁজি করে।প্রচন্ড দাবদাহে যখন রাজমিস্ত্রীরা কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন সেই সময়েও সেবার মানসিকতায় উন্মুখ প্রশাসনের এই কর্মকর্তাগণ স্যালাইন,পথ্য ও ঔষধ দিয়ে তাদের সহযোগিতা করেছেন।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী এ জেলায় কর্মরত এ কর্মকর্তাগণের অনেকেই পরিবার থেকে বহুদূরে অবস্থান করলেও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর হতদরিদ্র পরিবারের মানুষগুলোকেই তারা আত্মার আত্মীয় মনে করেন।তাদের চোখে খুশির ঝিলিক দেখার অভিপ্রায় থেকেই বাস্তবায়িত হয়েছে এ প্রকল্প।
অবশেষে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক এ উন্নয়নকে ফলপ্রসূ করতে আমাদের এ প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। কোন ধরনের নেতিবাচক সমালোচনা আমাদের এ উদ্যমকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। দেশ ও মানুষের কল্যাণে আমাদের এই কর্মস্পৃহা ও সকল ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।