জ্বালানির আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি থেকে কৃষকের দুরবস্থা, রাফাল থেকে নোটবন্দি, মোদীর নিরবতা থেকে সাম্প্রদায়িক হিংসা বন্ধের সমর্থনে ডাকা সমাবেশে বিরাধীদের পাশে বসিয়ে একের পর এক তোপ দাগলেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস সভাপতির নিশানায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার দিল্লির রামলীলা ময়দানের ওই মঞ্চ হয়ে উঠল মোদী বিরোধীদের জোটবদ্ধ মঞ্চ। তবে ছিলেন না তৃণমূলের কোনও প্রতিনিধি।
পেট্রল-ডিজেল-রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, টাকার দামে পতন, রাফাল দুর্নীতি-সহ একাধিক ইস্যুতে সোমবার ভারত বন্ধের ডাক দেয় কংগ্রেস। একই ইস্যুতে হরতাল ডেকেছিল বামেরা। তৃণমূল বাদে অধিকাংশ বিরোধী দলই তাতে সামিল হয়। বন্ধের সেই কর্মসূচির অংশ হিসাবে প্রথমে মিছিল এবং তার পর জনসভার আয়োজন করে কংগ্রেস। রামলীলা ময়দানের সেই জনসভাতেই একের পর তোপ দাগলেন রাহুল গান্ধী।
এ দিন রাহুল বলেন, ‘‘চার বছর আগে মোদী সরকারকে বিশ্বাস করেছিলেন দেশবাসী। কিন্তু এখন সেই ভুল ভেঙেছে। মানুষ বুঝতে পেরেছেন, গত চার বছরে মোদী সরকার মানুষে-মানুষে বিভেদ সৃষ্টি ছাড়া আর কিছু করেনি। নোটবন্দি করেছে। কিন্তু তাতে কালো টাকা উদ্ধার দূরে থাক, মুখ পুড়েছে সরকারের। অকারণ ভোগান্তির শিকার হয়েছেন আম জনতা।’’
মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে দুর্নীতি এবং প্রধানমন্ত্রীর নীরব থাকা প্রসঙ্গে মোদীকে বিঁধে রাহুলের কটাক্ষ, ‘‘কে জানে কোন ঘোরের মধ্যে থাকেন উনি। দেশে-বিদেশে যেখানে যান, মুখে খই ফোটে। কিন্তু পেট্রল ৮০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে, কৃষক-সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে, অথচ সে সব নিয়ে তিনি নীরব। আবার এক ব্যবসায়ী বন্ধুকে ৪৫ হাজার কোটি পাইয়ে দিয়েছেন, সংসদে তা নিয়ে প্রশ্ন করলে উত্তর দিতে পারেন না।’’
এই সভাতেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ বলেন, ‘‘চার বছরে মোদী সরকার আম জনতার পক্ষে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। উল্টে একের পর এক হঠকারী সিদ্ধান্তে নাজেহাল হয়েছেন সাধারণ মানুষ। এই সরকারের পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।’’
বন্ধের সমর্থনে এ দিন প্রথমে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থলে যান রাহুল গান্ধী-সহ কংগ্রেসে নেতারা। সোনিয়া গান্ধী, মনমোহন সিংহ, গুলাম নবি আজাদ-সহ দলের বর্ষীয়ান নেতাদের সঙ্গে মিছিলে হাঁটেন ২১টি বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা। ছিলেন এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার, জেডিইউ-এর শরদ যাদবরা। সবাই মিলে মিছিল করে রামলীলা ময়দানে প্রতিবাদ সভায় যোগ দেন। বিরোধীরা যে জোটবদ্ধ, সেই ছবিই তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে। তবে মোদী বিরোধী জোটের অন্যতম মুখ তৃণমূল এ দিনের বন্ধে সামিল হননি। বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ ছবির মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের অনুপস্থিতি কিছুটা হলেও তাল কেটেছে সমাবেশের।
সূত্র: আনন্দবাজার