রাসেলের বাবা মারা যায় শিশুকালে। শিশু রাসেলকে রেখে ওর মাকে চলে যেতে হয় অার একজনের ঘরে। ও দাদীর কাছে বড় হয়। SSC পাশ করে তিতুমীর কলেজে HSCতে ভর্তি হয়। তিতুমীর কলেজ হোষ্টেলের 206 নম্বর রুমে সে সীট বরাদ্দ পায়। হোষ্টেলে আমরা একই block থাকতাম। সে সময়ে ওর দাদী মারা যায়। খবর পেয়ে ঈশ্বরদীতে দাদীর জানাযাতে যায়। এখন তাহলে ওর বাবাও নেই – দাদী নেই আর মা থেকেও নেই। বাপের কিনে দেওয়া এবং মা ও দাদীর স্মৃতিমাখা শিশু রাসেলের দুধের বাটিটি ওর দাদী যত্ন করে তুলে রেখেছিল। কিছুদিন পর ও যখন হোষ্টেলে ফিরে আসে, তখন ও শিশুকালের দুধের বাটিটি হোষ্টেলে নিয়ে আসে। এটা সে পড়ার টেবিলে বইয়ের তাকে খুব যতনে রাখত। এরমধ্যে হোষ্টেলে চাউর হলো – রাসেল খুব কান্নাকাটি করছে, কারণ ওর সেই বাটিটা পাওয়া যাচ্ছে না। ওর কান্নাকাটি দেখে আমরা অনেকে হাসাহাসি করেছি। ওর হারানো বাটিটার জন্য 204 নং রুমে শ্রদ্ধেয় জয়নাল ভাইয়ের কাছে দরবার বসল। একটি বাটির জন্য সালিশ। উৎসুক ছাএদের চাপে রুমটিতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিলো না। সিনিয়ররা বিচারে জানায়ে দিল “ও বাটি আর পাব কোথায়? রাসেলের ভাল বাটির ব্যবস্থা করা হবে “। কিন্তু রাসেলের দাবী ” তাকে ভাল বাটি বা অন্য কিছু নয় – তাকে ঐ বাটিটই দিতে হবে”। তার দাবীতে সিনিয়ররা বেশ ক্ষেপে গেল, জানতে চাইল, “কেন?” সে জানাল, “ঐ বাটিটিতে আমার দাদী -বাবা-মা’র স্পর্শ আছে। আমি ঐটাই চাই।” রাসেলের চোখের পানিতে সবাই স্তব্ধ হয়ে গেলাম।
আমি যখন ক্লাশ সিক্সে পড়ি, তখন আমার আব্বা আমাকে একটা সাইকেল কিনে দেন। এটা আমার বাল্যকালের সাথী। এটা আমার নলতা স্কুলের লেখাপড়ার সহযোগী। এটা আমার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের সহযোগী।
আমি গত 12.08.21 তারিখে সাইকেলটি শ্যামলী থেকে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে AJR transport-এ বুকিং দেই। তারা এখন বলছে, সাইকেলটি হারায়ে গেছে। আসলে সাইকেলের রডের ভিতর ফাঁকা অংশ ইয়াবা জাতীয় মাদক বহনের কাজে ব্যবহার করেছে।
আমি ঐ সাইকেলটিই যে কোন মূল্যে ফেরত চাই।
সূত্রঃ কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপ কমটির সদস্য ও সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর আফসার আহমেদ ” মানুষের কল্যাণে প্রতিদিন” কে কাগজপত্র সহ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।