উজ্জ্বল রায়, নড়াইল থেকে:নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় সকল সার দোকানে সারের উচ্চ মুল্য দিয়ে সার ক্রয় করছে কৃষকেরা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে কৃষকদের ভুর্ত্তিকি দিচ্ছে, সেখানেই কৃষকরা ক্ষতি গ্রস্থ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নকে কলংকিত করার জন্য একটি মহল এই কর্মে লিপ্ত হয়েছে।
সরোজমিনে গিয়ে জানা যায়, লোহাগড়া উপজেলায় বেশ কিছুদিন ধরে সরকার কতৃক নির্ধারিত মুল্য ব্যাতিরেকে উচ্চ মূল্যে সার বিক্রি করছে কিছু অসাধু ব্যাবসায়ীরা। উপজেলার ইউনিয়ন উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তারা ও নির্বাক, এমন কি একজন ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তা বাজারে উচ্চ মুল্যে সার বিক্রি করার জন্য ডিলার ও সাব ডিলারদের নিদেশ দেন।
সকল ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তা যদি সার বাজার মনিটরিং করতো তাহলে হয়তো বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো। সার ডিলারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান যে বরাদ্দ তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। প্রতি বছরে যে বরাদ্দের চাহিদা দেওয়া হয় তা বাড়াতে হবে বলে আমরা মনে করি। চাহিদা মোতাবেক সার না থাকায় লোহাগড়া উপজেলায় কৃষকদের সার সংকটে পড়তে হয়েছে। এ কারনে জেলা কৃষি কর্মকর্তার সুদৃষ্টি প্রয়োজন। তা নাহলে লোহাগড়া কৃষকরা আর্থিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ হবে। ভুক্তভোগী কৃষক আবু সোনা,গ্রাম কুমড়ি,নুরকান মিয়া,গ্রাম সারোল,বুলু গ্রাম চরদিঘলিয়া,কিবরিয়া গ্রাম গাজীপুর, মোস্তফা গ্রাম কুমড়ি,মিঠু গ্রাম কান্চন পুর,সামাদ গ্রাম হালদা,কাদের গ্রাম রায়গ্রাম,হাফিজ গ্রাম ব্রাম্নন ডাংগা, সাইফুল গ্রাম গন্ডব,বোরাক গ্রাম ধ্যানাইড়,শরাফত গ্রাম মানিক গন্জ, জিয়া,গ্রাম নোয়াখোলা, শিক্ষক আবু বক্কর মরিচপাশা সহ আরো ২৫/৩০ জন কৃষক বলেন সকল সারের দোকানদার আমাদের নিকট থেকে সারের দাম বেশি রাখছে। বস্তা সহ ইউরিয়া নিলে ৯ শত কখনও ৮ শত পন্চাশ কখনও ৯২০ /- টাকা ও নিয়ে থাকে ডিলাররা। তখন আমরা নিরুপায় হয়ে দোকানদারের কথা মত সার কিনতে হচ্ছে। কারন জমিতে সার আমাদের দিতেই হবে। আমরা জানি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারের একটা নির্ধারিত দাম দেছে কিন্ত সে দামে আমাগে কোন সারের দোকানদার সার ব্যাচে না। আল্লা ছাড়া আমাগে কোন গতি নাই। এ যেন মরার উপর খাড়া ঘা। লোহাগড়া উপজেলায় ১২ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা । সব মিলিয়ে লোহাগড়ায় উপজেলায় ১৩ জন সার ডিলার আছে। এরা সকলে স্বেচ্ছাচারিতা করে সার বিক্রয় করে। হাবিবুল্লাহ বাহার নামে একজন সারের ডিলার, উনার একই পরিবারের আত্মীয় স্বজন দিয়ে লোহাগড়া উপজেলার ৪ টি ও নড়াইলে ২ টি সারের লাইসেন্স আছে মুঠোফোনে হাবিবউল্লাহ বাহারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন আমি বিধি মোতাবেক লাইসেন্স করেছি। আমার পরিবারের কথা বলেছেন তা সঠিক না। এছাড়া আরো জানা যায় অনেক সার ডিলার সার খুচরা বিক্রি করেন না। সময় মত দোকানে আসেন না। সাব ডিলার গন খেয়াল খুশি মত চড়া দামে সার বিক্রি করে, তা কেহ তদারকি করে না। এ যেন হরিঘোষের গোয়াল। সাব ডিলার মানিকগঞ্জ বাজার হায়াতুর রহমান চড়ামুল্যে সার বিক্রি করে বলেন ডিলার আমাদের নিকট থেকে ১ বস্তা ইউরিয়া মুল্য রাখেন ৮৫০ টাকা আমরা বিক্রি করি ৯০০ /৯২০ টাকা করে। এসময় সাংবাদিকগন সারের উচ্চ মুল্যের কারন জানতে চাইলে তিনি নয় ছয় করে এড়িয়ে যান। নলদী বাজারে সাব ডিলাররা ১৮ ও ১৯ টাকা দরে ইউরিয়া সার বিক্রি করছেন । তারা কোন কিছু তোয়াক্কা করছে না।
লোহাগড়া বাজারের কুন্ডুল, জয়পুর এর নুরইসলাম,কাঠাল তলার জিয়াউর রহমান,মরন মোড়ের ওহিদুল ইসলাম,এড়েন্দা বাজারের মানিক, কলাগাছি বাজারের নারায়ন ঘোষ, পাচুড়িয়া বাজারের ইমরুল, দিঘলিয়া বাজারের লিটন সাহা সহ আরো ৮/৯ জন সাব ডিলার সাংবাদিকদের বলেন ডিলার আমাদের নিকট থেকে বেশী দাম নেন বিধায় আমাদের ও উচ্চ মুল্যে বিক্রি করতে হয়। কোন সাব ডিলার ৭৮০/- টাকা দরে ইউরিয়া সার ডিলারের নিকট থেকে ক্রয় করেন নাই বলে সাফ জানিয়ে দেন।
এবং সাব ডিলার গন কোন প্রকার ক্রয় মেমো সাংবাদিকদের দেখাতে পারে নাই। এবিষয়ে কয়েকজন ডিলারের সাথে কথা হলে তারা জানায় আমরা যে বরাদ্দ পাই তা সু সম বন্টন করা হয়। যদি কেহ আমাদের নামে মিথ্যা বলে আমাদের করার কিছু নাই। লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রইচ উদ্দিন বলেন আমি শুনেছি খুচরা দোকানি ও ডিলার গন উচ্চ মুল্যে সার বিক্রয় করছে। মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করবো। ২য়ত বর্তমান যে সার সংকট দেখা দিয়েছে তার একমাত্র কারন সারের গোডাউন পরিবর্তনের কারনে সঠিক সময় মত সারের যোগান দিতে পারে নাই। ৩য় ঘেরের জন্য আমাদের কোন বরাদ্দ নাই। ঘের মালিকরা সার ব্যবহারের কারনে ও সংকটের সৃষ্টি হতে পারে।