রাজশাহী ব্যুরোঃ রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র জনাব এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে শুক্রবার বিকেলে নগরভবনে মেয়র দপ্তরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ক প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও রাজশাহীর বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ নেন। সভায় ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকবৃন্দের আবাসন, খাবার, যাতায়াত, এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, এই প্রথমবারের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসমূহ বন্ধ থাকা অবস্থায় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। করোনা মহামারির কারণে আমাদের অনেক কিছুই মেনে চলতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো বন্ধ থাকার কারণে আবাসন সংকট দেখা দিতে পারে। সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকদের রাখার জন্য নগরীর বিভিন্ন ছাত্রবাস, আবাসিক হোটেল, বিভিন্ন সরকারি রেস্ট হাউজ, গেস্ট হাউজ ইত্যাদি এবং এরপরেও যদি প্রয়োজন হয়, তবে বিকল্প কিছু ব্যবস্থা আমরা রেখেছি। এসবে অন্তত ৭০ শতাংশ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা হবে। বাকিরা তাদের আত্ম্রীয়-স্বজনদের বাসাবাড়িতে থাকবেন। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যাতায়াতের জন্য বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো শহরে চলাচল করবে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সুবিধায় রাজশাহী অভিমুখী টেনসমূহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে থামানোর জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হবে। শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের খাবারের জন্য স্বনামধন্য হোটেল রেস্তোরা ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে খাবারের কোন সংকট না হয় এবং চাহিদামতো সবাই খাবার কিনে খেতে পারেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে এবার হলসমূহ বন্ধ রেখেই ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মেয়র মহোদয়ের আমন্ত্রণে আমরা আজকে বসেছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্র্থী প্রায় ১ লক্ষ ৩৩ হাজার। আগামী ৪ থেকে ৬ অক্টোবর এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন গড়ে ৪৫ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিবে। এছাড়া ১,২,২৩ ও ২৪ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে মূল সমস্যা আবাসনের। প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের যেকোন প্রয়োজনে আমরা সব সময় সচেষ্ট থাকবো। বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে ছাত্রদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। আরএমপি‘র ট্রাফিক বিভাগ যানবাহন চলাচলে নির্দেশনা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আবাসিক হোটেলে নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাজশাহী মহানগর মেস মালিক সমিতির সভাপতি এনায়েতুর রহমান বলেন, এমন একটি সভার আয়োজন করায় মাননীয় মেয়র মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিভিন্ন ছাত্রাবাসে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে। ছাত্রাবাসে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে সম্পন্ন ফ্রি রাখা হবে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, রাজশাহীতে ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে। সরকারি রেস্ট ও গেস্ট হাউজে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
এছাড়া সভায় নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, সার্বক্ষণিক এ্যাম্বুলেন্স সুবিধা, ভ্রাম্যমান টয়লেট স্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর মোঃ সুলতান উল ইসলাম, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এ.বি.এম শরীফ উদ্দিন। সভায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সচিব মোঃ মশিউর রহমান, রাজশাহী বাস মালিক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান টিটো সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।