আরেফিন সোহাগঃ নিত্যপণ্যের মূল্যস্থিতিশীল রাখতে সরকার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন প্রতিষ্ঠাসহ নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। গণপরিবহনের ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে বিআরটিএ ও গণপরিবহন মালিকরা মিলে ভাড়া নির্ধারন করলেও ভোক্তারা উপকৃত হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা ইচ্চামতো নানা অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে এবং গণপরিবহনগুলি নিজেরা সরকার নির্ধারিত ভাড়ার দ্বিগুন-তিনগুন ভাড়া আদায় করে সরকারের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রর্দশন করছেন। এসমস্ত বিষয়গুলো দেখার জন্য নিয়োজিত সংস্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা নিরব থাকছেন। ফলে নিত্যপণ্যসহনীয় রাখতে ও গণপরিবহণের ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অবিরাম সংগ্রাম ও প্রচেষ্টার সুফল ভোক্তা পর্যায়ে আসছে না। ফলে সাধারন মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে ভাড়ার চার্ট বিভিন্ন গণপরিবহনে সাটানো ও পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধ হয় নি। অধিকন্তু ভাড়া কম দেয়ায় চলন্ত বাস থেকে যাত্রী ফেলে দেয়া, যাত্রীদের হয়রানিসহ নানা ভোগান্তিতে জনজীবন অতিষ্ঠ।
এ অবস্থায় নিত্যপণ্যের বাজার ও গণপরিবহণে ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধে সাধারন মানুষের ভোগান্তি ও সমস্যাগুলি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ও সরকারের নীতি নির্ধারকদের মাঝে সঠিক তথ্য পৌঁছানো দরকার বলে মনে করছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব) চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ। ০৩ ডিসেম্বর নগরীর হালিশহরের নয়াবাজার বিশ^রোড় মোড়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব) হালিশহর থানা কর্তৃক আয়োজিত নিত্যপণ্য মূল্যের ক্রমাগত উর্ধ্বগতি ও গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্যের প্রতিবাদে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত দাবি জানান।
ক্যাব হালিশহর থানা সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট জামাল হোসাইনের সভাপতিত্বে ক্যাব হালিশহর থানা সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ইউসুফ সন্দীপি এবং ক্যাব সংগঠক ও প্রজন্ম চট্টগ্রামের প্রধান নির্বাহী চৌধুরী জসিমুল হকের সঞ্চালনায় গণঅবস্থান কর্মসুচিতে বক্তব্য রাখেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সভাপতি এস এম আজিজ, ক্যাব মহানগরের সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চান্দগাঁও থানা সভাপতি মুহাম্মদ জানে আলম, ক্যাব পাচালাইশ থানা সহ-সভাপতি এবিএম হুমায়ুন কবির, চট্টগ্রাম ড্রিংকিং ওয়াটার ম্যানুফেকচার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফয়সল আবদুল্লাহ আদনান, আসক ফঅউন্ডেশনের সহ-সভাপতি মোঃ আকবর, সাংবাদিক উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান শিব্বির আহমদ ওসমান, সাবে ছাত্র নেতা মাছুদুর রহমান, হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মওলানা শহীদুল্লাহ, বহত্তর নোয়াখালী সমিতির সাধারন সম্পাদক কাজী আবু জাহের রাজু, আসক ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রিয় পরিচালক জামাল চৌধুরী বিপ্লব, বিএমএসএফ এর কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক সোহাগ আরেফিন, দুর্নীতি বিরোধী সচেতন পরিষদের সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও ক্যাব হালিশহরের অর্থ সম্পাদক আঃ হালিম নাছির প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন সরকার নিত্যপণ্য মূল্যের বাজার ব্যবসায়ীদের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। সেকারনে সরকারের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বাজার তদারকিতে নেই। আর্ন্তজাতিক বাজারে চাল, সয়াবিন তেল, গ্যাসের দাম কমলেও দেশের বাজারে তার প্রতিফলন নেই। ধান কাটার মৌসুমে চাল, শীতে সবজির দাম উর্ধ্বমুখি।
বক্তাগন আরও অভিযোগ করে বলেন, গণপরিবহনে অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন করলেও গণপরিবহন মালিকরা ঢাকার দাবি মানলেও সারা দেশের দাবিটি উপেক্ষিত। সেকারনে ছাত্রদের ৯ দফার দাবিটি আরও জোরদার হচ্ছে। সরকার আর্ন্তজাতিক বাজারে জ¦ালানী তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে দেশীয় বাজারে দাম বাড়ালেও দীর্ঘ ৩-৪ বছর আর্ন্তজাতিক বাজারে তেলের দাম তলানী গেলেও সরকার দেশীয় বাজারে সমন্বয় করেনি। করোনায় সাধারণ জনগনের জীবন জীবিকা নির্বাহে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থায় জালানির দাম বাড়িয়ে জনদুর্ভোগ তৈরী করেছে। ফলে গণপরিবহন ও পণ্যপরিবহনসহ রূপ্তানী পরিবহণে মারাত্মক বিরূপ পরিস্থিতি তৈরী হচ্ছে। সরকারের মাঠ পর্যায়ে নজরদারি না থাকায় আবার এ অজুহাতে নিত্যপণ্য ও গণপরিবহণের ব্যবসায়ীরা নতুন করে মূল্যবৃদ্ধি করে জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। জনগন এ অবস্থার পরিত্রাণ চায়।