গাজী এনামুল হক (লিটন),পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরে প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন কারী, পিরোজপুর মহাকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি, পিরোজপুর সরকারি সরোয়ার্দী কলেজের ভিপি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক। তিনিই ছিলেন পিরোজপুরের প্রথম শহীদ! স্বাধীন বাংলার নিউক্লিয়াস গ্রুপের এই ছাত্রনেতা ছিলেন পিরোজপুরে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।
ওমর ফারুকের জন্ম ১৯৫০ সালের ১২ মার্চ কাউখালী উপজেলার আমড়াজুড়ি গ্রামে। বাবার নাম মরহুম সৈয়দুর রহমান শরীফ। ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলনের সময় ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন ওমর ফারুক। পাকিস্তানিদের হাত থেকে দেশ রক্ষার তাগিদ অনুভব করে কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতাদের সঙ্গে যোগ দেন ‘স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াস’ গ্রুপে। গড়ে তোলেন পিরোজপুর মহকুমা ছাত্রলীগ।
মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর সংগঠকের দায়িত্ব নিয়ে জড়ো করতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধাদের।২৩মার্চ তিনি টাউন হল প্রাঙ্গণে প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন । সেখানে ওমর ফারুক সহ সব নেতার বক্তব্য শেষ হলে সবাই মিলে পাকিস্তানি ট্রেজারি ভেঙে অস্ত্র সংগ্রহও করেছিলেন। প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ভারত যাওয়ার। তবে ২৯ মে স্বাধীন বাংলার পতাকাসহ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে যান তিনি। বরিশালে ত্রিশ গোডাউন টর্চার সেলে তার উপর চলে চরম নির্যাতন। কিন্তু ভেঙে পড়েননি ওমর ফারুক। এক সময় তার মনোবল ভেঙে দিতে তাকে বলা হয়েছিল ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তিনি সে শ্লোগান না দিয়ে দিয়েছেন ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান। এ কারণে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্দেশে রাজাকাররা লোহার রডের সঙ্গে স্বাধীন বাংলার পতাকা বেঁধে তা হাতুড়ি পেটা করে ওমর ফারুকের মাথায় ঢুকিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর বরিশালের টর্চার সেলে আটক থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের ‘শিক্ষা’ দিতে ৩ দিন গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয় শহীদ ওমর ফারুককে!
আমাদের পিরোজপুরের এই রাজপুত্র ওমর ফারুক শুধু একজন সাধারন মানুষ নয়। তিনি এই অঞ্চলের সকল মানুষের সম্মিলিত চরিত্রের বহিপ্রকাশ। তিনি আমাদের পিরোজপুরের প্রতিটা মানুষের চরিত্রের সাথে মিশে থাকুক।
দেশের জন্য শহীদ ওমর ফারুক যে ত্যাগ করেছেন তা সবার স্মৃতিতে ধরে রাখার জন্য পিরোজপুর বেকুটিয়া সেতু শহীদ ওমর ফারুকের নামে করার দাবি জানিয়েছে শহীদ ওমর ফারুক এর বোন সালমা রহমান হ্যাপী ও স্বাধীনতা পক্ষের তরুণ সমাজ ।
গাজী এনামুল হক (লিটন)
01714040204