শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে পদক্ষেপ নেওয়া হবেঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী গাজা হত্যাযজ্ঞে নিশ্চুপ শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূস ইসরায়েলির পুরস্কার নিয়ে গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ধিলু রাজার সাম্রাজ্যে! – সাদিকুল আওয়াল আরিফ মঈনুদ্দীন এর একগুচ্ছ কবতিা ইতিহাসের ভিন্ন পাঠ ‘বাঙালির ইতিহাস চর্চার পথের কাঁটা’ -মাহফুজ ফারুক শহরটা যেভাবে প্রিয় হয়ে ওঠে – মহিবুল আলম কালিগঞ্জে আইন শৃঙ্খলা, চোরাচালান ও মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত  এম ইয়াসিন ইকবাল রাজ কে বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক করায় অভিনন্দন বিএনপি-জামায়াত ইসরায়েলের দোসরে পরিণত হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিজয়ের এই মাসে নতুন প্রজম্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধ” বীর মুক্তিযোদ্ধা রউফ

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ৫.৫৭ পিএম
  • ১২৭ বার পঠিত

 

মো.মাইনুল ইসলামঃ স্বাধীনতার মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ৪৮বছর পেরিয়ে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর  উপলক্ষ্যে সরকারী বেসরকারিভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ ও গোটাজাতি আজ বিজয়ের এই দিনে মাসব্যাপী বিনম্র শ্রদ্ধাভরে স্বরন করছেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের জীবন দানকারী ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর সেনানিদের।
“বিজয়ের এই মাসে নতুন প্রজম্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধ” নামক এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ১৯৭১সালে সংগঠিত মহান মুক্তিযুদ্ধে বৃহত্তর পাবনা জেলায় অংশগ্রহণকারী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম রউফ’র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের কিছু কথা নতুন প্রজম্মের জন্য উৎসর্গ করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল রউফ ১৯৫৪ সালে পাবনা সদর উপজেলার কিসমত প্রতাপপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম আবদুর রহিম শেখ ও মাতা মোসাম্মৎ এজাতুননেছা। রফিকুল ইসলাম রউফ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের ইতিহাস হিসেবে বলেনঃ ১৯৭১সালে যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ডাকে স্বাধীনতা যুদ্ধ অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় তখন আমার বয়স সতর হবে লেখাপড়া করি কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছিলাম আমরা এগার জন ভাইবোন তার মধ্য আমি পাঁচ জনের ছোট ছিলাম এবং ছেলে হিসেবে আমি সকলের কাছে আদরের ছিলাম। যাইহোক চারদিকে যখন যুদ্ধ শুরু হয় আমরা পাঁচ ছয়জন বন্ধু একত্রিত হয়ে কুষ্টিয়া জেলার ভারত সীমান্ত দিয়ে আমরা ভারতের ভিতরে চলে যাই সেখান থেকেই আমাদের ট্রেনিংয়ের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় এবং একমাস দশদিন আমাদের গেরিলা উচ্চতর ট্রেনিং দেওয়া হয়। ওখানে আমাদের সব ধরনের প্রশিক্ষনই দেওয়া হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে যাওয়া প্রায় দেড়শতাধিক যুবক আমাদের সাথে ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তী ট্রেনিং শেষে আমরা অস্ত্রসহ বাংলাদেশে আসি এবং আমরা দশ থেকে বার জনের গ্রুপ করে করে পাবনা এবং আশপাশের জেলাগুলোর বিভিন্ন স্থানে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ি। আমাদের বার জনের গ্রুপ ছিল আমি সেই গ্রুপের গ্রুপ লিডার ছিলাম আমরা পাবনা জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ক্যাম্প করে যুদ্ধ করে হানাদারমুক্ত করেছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রউফ তিনি নতুন প্রজন্মের জন্য মুক্তিযুদ্ধের পাবনার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস হিসেবে বর্ণনা করেন:
পাকবাহিনীকে মোকাবেলা করার শপথ গ্রহণ করেন পাবনার তৎকালীন জেলা প্রশাসক নুরুল কাদের খান। তিনি পুলিশ লাইনের অস্ত্রাগার খুলে সব অস্ত্র-শস্ত্র ও গোলাবারুদ প্রতিরোধযোদ্ধাদের হাতে তুলে দেন।
১৯৭১ সালের ২৮শে মার্চ ভোর রাতে পাকহানাদার বাহিনী পাবনা পুলিশ লাইন আক্রমন করে। পাবনার অকুতভয় পুলিশ বাহিনী জীবন বাজী রেখে পাকহানাদার বাহিনীর আক্রমন প্রতিহত করে।
পাবনার পুলিশ লাইনের যুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর সাথে পাবনার ছাত্র-জনতাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। বিপুল পরিমাণ ক্ষতি স্বীকার করে পাকবাহিনী পিছু হটে যেতে বাধ্য হয়। পাকহানাদার বাহিনী পুলিশ লাইন থেকে পিছু হটে তাড়াশ বিল্ডিং সংলগ্ন টেলিফোন একচেঞ্জে এসে পজিশন নেয়। সকাল ৯টার সময় পুলিশ বাহিনী ও ছাত্র-জনতা যৌথ আক্রমণ চালায় টেলিফোন এক্সচেঞ্জ-এ অস্থানরত পাকহানাদার বাহিনীর উপর। এই যুদ্ধে প্রায় ৩০জন পাকহানাদারের মৃতু ঘটে এবং অবশিষ্টরা গুলি করতে করতে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যায়। পাবনা শহরের ময়লাগাড়ী নামক স্থানে পাকহানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী জনতার যুদ্ধ সংগঠিত হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন পাকহানাদার বাহিনীর সদস্য নিহত হয়।
পাবনা প্রতিরোধযুদ্ধ সংগঠিত হয় অন্তত ১৭টি স্থানে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য পাবনা পুলিশ লাইন, টেলিফোন একচেঞ্জ, ময়লাগাড়ী, সার্কিট হাউস সংলগ্ন কাঠের ব্রীজ, বিসিক, মাধপুর বটতলা, ঈশ্বরদী বিমান বন্দর, দাশুড়িয়া তেতুল তলা, মূলাডুলি, মালিগাছা উল্লেখযোগ্য। ২৯ মার্চ পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছায় (পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়ক সংলগ্ন) পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিকামী যোদ্ধাদের এক রক্তক্ষয়ী সম্মুখ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। রক্তক্ষয়ী এ যুদ্ধে আটঘরিয়া থানা পুলিশের এসআই আব্দুল জলিলসহ বেশ ক’জন মুক্তিকামী যোদ্ধা শহীদ হন। এ যুদ্ধে ২ জন পাকিস্তানী সেনাও খতম হয়। ২৫শে মার্চ রাত্রিতে রাজশাহী ক্যান্টমেন্ট থেকে পাবনা জেলা সদরে আগত প্রায় ১৫০জন পাক সেনা সবাই একে একে নিহত হয়।
এরপর ১০ এপ্রিল পর্যন্ত পাবনা জেলা শত্রুমুক্ত ছিল। এভাবে ১৩ দিন পাবনা মুক্ত থাকার পর পুনরায় ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পাকহানাদার বাহিনী পুনরায পাবনায় ঢোকার মুখে নগরবাড়ী ঘাটে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধা ও ছাত্র জনতার উপর জলে স্থলে ও আকাশ থেকে আক্রমন চালায়। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা টিকতে না পেরে পিছু হটে আসি পাবনায়। কিছু মুক্তিযোদ্ধা পাবনা জেলার সাঁথিয়া থানার ডাব বাগান নামক স্থানে অবস্থান নেয়। সেখানে পাকহানাদার বাহিনীর সহিত তুমূল যুদ্ধে অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়। পাকহানাদার বাহিনীর ১৩ জন সদস্য নিহত হয়। ঐ যুদ্ধে শহীদদের স্মরণে ঐ স্থানের নামকরণ করা হয়েছে শহীদনগর। পুনরায় পাকবাহিনী পাবনা দখল করায় মুক্তিযোদ্ধা ও ছাত্র জনতা ভারতে গমন করে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পাবনায় প্রবেশ করে এবং পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ন হয়। পাবনা সদর উপজেলায় মোট মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৫২৩জন ও শহীদের সংখ্যা ৩৫জন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com