শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
জলবায়ু অভিযোজনে সহায়তা দ্বিগুনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। – পরিবেশমন্ত্রী সাবের চৌধুরী ভবনের নকশা অনুমোদনে এসটিপি স্থাপনের শর্ত আরোপ করতে বললেন গণপূর্তমন্ত্রী পাহাড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারে আমলে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে-পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী মাদক পাচার এবং মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দিলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী  নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে সরকার নিরন্তর কাজ করছে” –মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অবসরে যাচ্ছেন অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ মাজহারুল ইসলাম বিপিএম কালিগঞ্জের পল্লীতে প্রবাসীর জমি থেকে বৃক্ষ নিধনের অভিযোগ উঠেছে  বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ২৮৮ জন বিজিপি, সেনা ও অন্য সদস্যদের প্রত্যাবাসন যাদের কোন জাত নেই, যাদের কোন ধর্ম নেই তারাই শ্রমিক হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে- ফরিদপুরে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আইন-শৃঙ্খলার ব্যত্যয় হলে সরকারের উন্নয়ন কাজেরও ব্যত্যয় ঘটবে- পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী

আহ্ছানিয়া মিশনের ৮৭ বছর || স্রষ্টার এবাদত ও সৃষ্টের সেবায় প্রত্যয়ী পথচলা

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০২২, ৪.২৫ পিএম
  • ১৭৮ বার পঠিত
বাংলাদেশে যে মানবহিতৈষী সংগঠনগুলো মানবকল্যানে কাজ করছে তার মধ্যে পুরানো-পুরোধা একটি সংস্থা আহ্ছানিয়া মিশন। স্ব-গৌরবে স্ব-মহিমায় আহ্ছানিয়া মিশন আজ ৮৭তম বর্ষে পদার্পণ করলো। ‘স্রষ্টার এবাদত ও সৃষ্টের সেবা’ প্রতিপাদ্যে ১৯৩৫ সালের ১৫ মার্চ আহ্ছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠিত হয়। মিশনের প্রতিষ্ঠাতা খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ছিলেন অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা বিভাগের সহকারি পরিচালক। ভারতীয় উপমহাদেশের মুছলিম জাগরণের ইতিহাসে আহ্ছানউল্লার নাম বহুমুখী অভিধায় উচ্চারিত- তিনি ছুফি-দার্শনিক, শুদ্ধতার সাহিত্যিক, সমাজ সংস্কারক; তিনি শিক্ষাবিদ, শিক্ষাসংস্কারক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা।
গত শতাব্দীর শুরুর দশকে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা যখন ব্রিটিশ-ভারতে অবিভক্ত বাংলায় মুছলমানদের শিক্ষায়-দীক্ষায়-জ্ঞানে-প্রজ্ঞায় বিকশিত করতে জনশিক্ষা বিভাগে সর্বোচ্চ পদে আসীন হয়ে নিঃসঙ্গ লড়াইয়ে ব্যস্ত তখনও সাধারণ বাঙালি মুছলিমরা লেখা-পড়াকে অবশ্য কর্তব্য বিবেচনা করতে শেখেনি। মাত্র দু’এক দশক আগে তারা রাজনৈতিক সংগঠনের স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে। বাঙালি মুছলমানের কোন রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা সাংস্কৃতিক সংগঠন তখনও নিজেদের অধিকার আদায়ে একাগ্র হতে পারেনি। এমনই এক অগোছালো-অসংগঠিত সময়ে স্রষ্টার সাযুজ্য লাভের প্রত্যাশায় সৃষ্টির সেবাকেই উপজীব্য করে সেবাধর্মী সংগঠন প্রতিষ্ঠার চিন্তা দৃঢ়ব্রত ও দূরদর্শিতাই বটে। সেই চিন্তার বাস্তবায়ন তিনি ঘটিয়েছিলেন। ১৯২৯ সালে তিনি অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা বিভাগের সহকারি পরিচালকের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করে কলকাতার অভিজাত জীবন ছেড়ে নিজ গ্রাম সাতক্ষীরার নলতায় ফিরে যান। সরকারি চাকুরী হতে অবসরোত্তর দীর্ঘ ৩৬ বছর তিনি নিরবিচ্ছন্নভাবে অধ্যাত্ম-সাধনা, সমাজসেবা ও মানুষের আত্মিক উন্নয়নের জন্য সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিজেকে নিয়োজিত করেন। অনেক সুচিন্তা-সুপরিকল্পনা-সুউদ্দেশ্য নিয়ে অবসরের ৬ বছরের মাথায় নিজ গ্রামে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন আহ্ছানিয়া মিশন।
আহ্ছানউল্লা’র মানবহিতৈষী দর্শনের দূরদর্শিতার দীপ্তোজ্জ্বল দর্পণই হচ্ছে আহ্ছানিয়া মিশন। আহ্ছানিয়া মিশন তার কালের অন্যান্য সংগঠনের চেয়ে স্বভাবত স্বতন্ত্র। সাধারণত দেখা যায় রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক সংগঠনের কর্মপরিধি কেন্দ্র থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে বিস্তৃত হয়, কিন্তু গভীর বিস্ময়ে আমরা লক্ষ্য করি আহ্ছানিয়া মিশনের আদর্শ ও কর্মপরিধি প্রান্তিক পরিক্রমা থেকে ক্রমাগত ভূ-সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ব্যবস্থার কেন্দ্রের দিকে বিস্তৃত হয়েছে। সাতক্ষীরার অতিপ্রান্তিক অনুন্নত এক আজপাড়া গ্রাম থেকে প্রতিষ্ঠার দুই যুগের মধ্যে কলকাতা ও ঢাকার নাগরিক সভ্যতায় আহ্ছানিয়া মিশন সমাদৃত হয়েছে। পরবর্তী কয়েক দশকের মধ্যে আহ্ছানিয়া মিশন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রেমের বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার বিশ্ব-ভ্রাতৃত্ববোধ, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, স্রষ্টার প্রতি অবিচল আস্থা ও সমগ্র সৃষ্টির প্রতি নির্ভেজাল ভালোবাসাতেই তা সম্ভব হয়েছে।
পৃথিবীজুড়ে মানুষের আত্মিক উন্নয়ন ও মানুষে মানুষে মহব্বতের বন্ধন দৃঢ় করতে আহ্ছানিয়া মিশনের জন্ম। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা মিশনের উদ্দেশ্য বর্ণনা করেছেন এভাবে- ‘এই মিশনের মূখ্য উদ্দেশ্য: স্রষ্টার এবাদত ও সৃষ্টের সেবা। ইহার উদ্দেশ্য অতি ব্যাপক। সমগ্র মানব সমাজের উন্নয়ন ও আধ্যাত্মিক জীবন গঠনের মহান দায়িত্ব লইয়া এই মিশন জন্ম লাভ করিয়াছে। কোন বিশেষ সম্প্রদায়, কি বিশেষ জাতি, কি বিশেষ বর্ণে ইহা সীমাবদ্ধ নহে। সকল বান্দা খোদারই সৃষ্ট এবং সৃষ্টির প্রতি তাহার মহব্বত বিদ্যমান।
…মানুষে মানুষে পার্থক্য করা অবিধেয়। প্রত্যেক সৃষ্টির প্রতি স্রষ্টার মহব্বত সমভাবে বিদ্যমান, সুতরাং সৃষ্টের প্রতি বৈষম্য দৃষ্টি রাখিলে স্রষ্টার প্রতি হেয় জ্ঞান করা হয়। সৃষ্টের খেদমতই প্রকৃতপক্ষে খোদার খেদমত।’
প্রতিষ্ঠার অল্পকালের মধ্যেই মিশনের এই উদ্দেশ্য, আদর্শ ও কার্যক্রমে স্থানীয় মানুষের আগ্রহ জন্মে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির আগ পর্যন্ত খুলনা অঞ্চল এবং কলকাতার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় অভিন্ন আদর্শ ও উদ্দেশ্য নিয়ে অন্তত ৩০টি মিশন প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে মিশন প্রতিষ্ঠার এক যুগের মধ্যেই খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা নলতা আহ্ছানিয়া মিশনকে সকল মিশনের কেন্দ্রীয় মিশনরূপে ঘোষণা করেন। ৪৭ এ ভারত ভাগের পরবর্তী এক যুগের মধ্যে পূর্ব পাকিস্থানের বিভিন্ন বিভাগীয় পর্যায়ে আহ্ছানিয়া মিশনের কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, চট্টগ্রাম আহ্ছানিয়া মিশন, হবিগঞ্জ আহ্ছানিয়া মিশন ইত্যাদি এ সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের সাতটি বিভাগের কুড়িটি জেলায় ১৮৯ টি মিশন, ভারতের কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ৯ টি মিশন, আমেরিকা, কানাডা, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় একটি করে আহ্ছানিয়া মিশন স্রষ্টার এবাদত ও সৃষ্টের সেবায় নিরন্তর কাজ করে চলেছে। আহ্ছানিয়া মিশনের প্রবাহমান কর্মসূচিতে কোথাও কোন অবসাদ নেই, কখনো স্তিমিত হয়নি মিশনের আদর্শিক গতিধারা।
‘সত্যতা, পবিত্রতা ও প্রেমিকতা’- এই তিন ভিত্তির উপর মিশন প্রতিষ্ঠাতা খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা’র জীবন-দর্শন প্রতিষ্ঠিত। আহ্ছানউল্লা’র দর্শনের এই তিন মৌল ভিত্তি থেকে আহ্ছানিয়া মিশনের আদর্শ উৎসারিত। চট্টগ্রামে মিশন প্রতিষ্ঠার প্রাক্কালে তিনি সাতটি পবিত্র অঙ্গিকার সহকারে মিশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিস্কার করেন। মিশনের লক্ষ্য-
📌‘সমগ্র মানব সমাজের সামাজিক ও আধ্যাত্মিক জীবনের উন্নতি সাধন করা;
📌মানুষে মানুষে পার্থক্য দূর করা;
📌একতা ও ভ্রাতৃত্বের বিকাশ সাধন ও স্বর্গীয় প্রেম জাগরণে প্রেরণা জাগানো;
📌মানুষকে নম্র ও বিনয়ী হতে, আমিত্ব বিসর্জন দিতে, আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করতে শিক্ষা দেয়া;
📌মানুষকে স্রষ্টা ও সৃষ্টের মধ্যে সম্পর্ক বুঝতে ও উপলব্ধি করতে সক্ষম করা;
📌সৃষ্টিকর্তার প্রতি ও তাঁর সকল সৃষ্টি জগতের প্রতি কর্তব্য সম্পাদন করিতে সক্ষম করা
📌এবং নিপীড়িত সকল মানব জাতির প্রতি সাম্ভাব্য সকল সাহায্য-সহযোগিতা করা।’
আহ্ছানিয়া মিশন বর্ণিত এসব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে গত সাড়ে আট দশক ধরে কাজ করছে। নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশন রমজান মাসে মাসব্যাপী দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম ইফতার জমায়েতের আয়োজক যেখানে প্রতিদিন দশ হাজারের বেশি রোজাদার একত্রে ইফতারী করে। সমাজের খেদমত, শিক্ষার প্রসার, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, চিকিৎসা সেবা, অসহায় দুঃস্থের সহায়তা, এসব কার্যক্রম পরিচালনায় মিশনের অসংখ্য প্রকল্প চলমান। আহ্ছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজ, আহ্ছানিয়া দারুল উলুম আলিম মাদ্রাছা, আহ্ছানিয়া চক্ষু এণ্ড জেনারেল হাসপাতাল, খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউট পরিচালিত হচ্ছে কেন্দ্রীয় মিশনের তত্ত্বাবধানে। দেশ এবং দেশের বাইরে অন্তত এক ডজন এতিমখানা চলছে আহ্ছানিয়া মিশনের পরিচালনায়।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের পরিচালনায় চলছে আহ্ছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি, আহ্ছানিয়া মিশন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী, খুলনা খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, আহ্ছানিয়া মিশন টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, আহ্ছানিয়া মিশন কলেজ, আহ্ছানিয়া ইনিস্টিটিড অব ছুফীজম, আহ্ছানিয়া মিশন ক্যান্সার এণ্ড জেনারেল, আহ্ছানিয়া মিশন চিলড্রেন সিটিসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন এখন জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ এবং ইউনেস্কোর সাথে পরামর্শক মর্যাদার একটি প্রতিষ্ঠান। ২০০২ সালে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন দেশের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছে।
খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ছিলেন সমাজ-সংলগ্ন অধ্যাত্ম সাধক। একই সঙ্গে তাঁর মধ্যে ছিল অপরিসীম সাংগঠনিক দক্ষতা। সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ছোট বড় সবাইকে নিয়ে তিনি শান্তির সমাজ নির্মাণে একাগ্র হয়েছিলেন। তিনি লিখেছেন- ‘আমরা প্রেমের পথ দিয়া ছোট বড় সবাইকে সঙ্গে লইয়া সত্যময়কে অনুসন্ধান করিবো। সত্য আমাদের সহায় হইবে।’ হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) জাতিগত সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। আহ্ছানিয়া মিশনের মাধ্যমে তিনি জাতি, সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্বমধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। দেশভাগের অব্যবহিত পরেই ১৯৪৮ সালে আহ্ছানিয়া মিশনের বার্ষিক অধিবেশনে প্রদত্ত সভাপতির ভাষণে তিনি বলেন- ‘পশ্চিমবঙ্গের মোসলম সম্প্রদায় জমিজমা বিক্রি করিয়া পূর্ব্ববঙ্গে প্রধাবন করিতেছে, অন্যদিকে পূর্ব্ববঙ্গের হিন্দু-সম্প্রদায় পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় লইতে ব্যস্ত। ইহাতে দেশের প্রভূত অনিষ্ট সাধিত হইতেছে এবং ভবিষ্যতে তৃতীয় মহাসমর আরম্ভ হইবে, যদি অনতিবিলম্বে অধিবাসীগনের মন হইতে আতঙ্ক দূরীভূত না হয়।…উভয় রাষ্ট্রমধ্যে তুমুল বিরোধের বীজ উপ্ত হইতেছে।’ জাতিগত সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা তথা ধর্ম ও সংস্কৃতির স্বাধীন ও স্বাভাবিক চর্চার অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তৎকালিন সরকার প্রধানদের হস্তক্ষেপ কামনা করে আহ্ছানউল্লা বলেন- ‘রাষ্ট্রপতিদিগের সমীপে ইহাই বিনীত আবেদন যে, উভয় রাষ্ট্র মধ্যে বিধি-ব্যবস্থা যেন অতি সত্বর সংঘটিত হয়, অধিবাসীগণের স্ব স্ব বাস-ভূমিতে শান্তির সহিত বসবাস করিতে পারে, কেহ কাহারও ধর্ম্ম বা আচার ব্যবহারে অভিযোগ বা হস্তক্ষেপ না করে, প্রত্যেকের ধর্ম্মাচারের প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে ও একটী বৃন্তে দুইটী ফুলের ন্যায় একই স্রষ্টার সৃষ্টি মনে করে ভ্রাতৃভাবে কাল-যাপন করে…।’ উপমহাদেশজুড়ে দেশবিভাগের উত্তপ্ত অস্থিরতা বা ধর্মীয় উত্তেজনার রেশ এখনো কাটেনি, আর শান্তির আকুল প্রার্থনায় খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার সেই আহবানের আবেদন আজও অপ্রাসাঙ্গিক হয়ে যায়নি। সুতরাং আহ্ছানিয়া মিশনকে এখনো পাড়ি দিতে হবে অনেক লম্বা পথ।
আত্মিক উন্নয়ন ছাড়া মনুষ্যত্বের বিকাশ সম্ভব নয়, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ-ভালোবাসা সম্ভব নয়, সম্ভব নয় মানবিক পৃথিবী গড়া। মানুষকে প্রেমময়ের প্রেমে আলোকিত করা আহ্ছানিয়া মিশনের মূল লক্ষ্য, এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে অধ্যাত্মিক শিক্ষার মাধ্যমে আত্মিক উন্নয়ন ও শান্তির পৃথিবী প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন আজও দেখে আহ্ছানিয়া মিশন। এ স্বপ্ন বুকে নিয়েই নিরলস পরিশ্রম করছে মিশন। শতবর্ষের অভিমুখে আহ্ছানিয়া মিশনের ৮৭তম বর্ষপূর্তিতে আজ প্রত্যাশা মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধের বিকাশ ঘটুক, মানুষ ভালোবাসুক সমগ্র সৃষ্টিকুলকে, ধর্মে ধর্মে সংঘাতের অবসান ঘটুক, সাম্প্রদায়িক বীজ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হোক, অস্থিরতার পৃথিবীতে স্থিরতা আসুক ফিরে, স্রষ্টার এবাদত ও সৃষ্টের সেবায় নিমগ্ন হোক পৃথিবী। সততা, পবিত্রতা আর প্রেমিকতায় উদ্ভাসিত হোক সৃষ্টিলোক- ধন্য হোক মানবজীবন।
মো. মনিরুল ইসলাম
পরিচালক
খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউট

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
  12345
27282930   
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com