তরুণ কবি ও গবেষক মনিরুল ইসলামের আজ জন্মদিন। ১৯৮৭ সালের ২০ মার্চ সাতক্ষীরা জেলার আস্কারপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। শৈশব ও কৈশোর খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা’র স্মৃতিধন্য নলতা শরীফের সবুজ প্রাঙ্গনে বেড়ে উঠা । অত্যান্ত ভালো মনের একজন মানুষ মনিরুল ইসলাম।
লড়াকু উত্থান-পতনের জীবনে একসময় তাঁর লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। নলতা আহ্ছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজ থেকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে সফলতার সাথে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নম্বর পান। ৩৫ তম বিসিএসের মাধ্যমে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে বর্তমানে মাদারীপুরের সরকারি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। এই কলেজে ২০১৮-১৯ মেয়াদে তিনি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
মনিরুল ইসলামের লেখালেখির হাতেখড়ি শৈশবেই। ছাত্রজীবনে স্কুল-কলেজ ম্যাগাজিনগুলো তাঁর হাত ধরেই প্রকাশিত হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে অধুনালুপ্ত দৈনিক বাংলা বাজার পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে নিয়মিত ইংরেজি ও বাংলায় কলাম লিখছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতি’র কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দুই বছর মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতির জার্নালগুলোর সম্পাদক ছিলেন।
মমিরুল ইসলাম একাধিক গ্রন্থের প্রণেতা এবং অসংখ্য ম্যাগাজিন ও সাময়িকীর সম্পাদনা পরিষদের সদস্য। ভাবনার ভগ্নাংশ, অনুভবের অনুকাব্য, সভ্যতা তুমি এতো অসভ্য কেন? – এসব তাঁর মৈলিক গ্রন্থ। বার্ষিক আল আহ্ছান, অনুবর্তণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেমিনার স্মারক, ষান্মাষিক জাগরণ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সেমিনার স্মারক, নলতা হাইস্কুল শতবর্ষ সাময়িকী ‘প্রান্তিক’ ইত্যাদি প্রকাশনার সম্পাদনা পরিষদের সদস্য তিনি। মনিরুল ইসলাম ‘উচ্চ মাধ্যমিক পৌরনীতি ও সুশাসন’ পাঠ্যবইয়ের প্রণেতা। এছাড়া পথিকৃৎঃ নলতা শরীফের মনীষীদের কথা নিয়ে তার একটি আলোচিত গ্রন্থ।
মনিরুল ইসলাম দেশের বিখ্যাত সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান ‘আহ্ছানিয়া মিশনের’ স্বক্রিয় কর্মী। তিনি আহ্ছানিয়া মিশনের পরিচিত মুখ- দীর্ঘদিন আহ্ছানউল্লা গবেষক হিসেবে কর্মরত। তিনি আহ্ছানিয়া মিশন সমন্বয় কমিটির সদস্য। সম্প্রতি তিনি খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউটের পরিচালক পদে আসীন হয়েছেন।
খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, জহির রায়হান, জীবনানন্দ দাস, কাজী নজরুল ইসলাম, জসীমউদ্দিন, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আর একালের সৈয়দ শামসুল হক, পিয়াস মজিদ আর মিনার মনসুরের লেখা তাঁকে মুগ্ধ করে।
কবি, লেখক ও গবেষক মনিরুল ইসলামের জন্মদিনে আমাদের অনিঃশেষ শ্রদ্ধা, অবিরাম ভালোবাসা। তাঁর কলমে ফুটে উঠুক সমাজের বিচিত্র চিত্র। সাহিত্যের চাষাবাদ হোক তাঁর মন আর মননে, কালি আর কলমে। কবি মনিরুল ইসলামকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
লেখকঃ
হাসানূর রহমান সুমন
চেয়ারম্যান
মানুষের কল্যাণে প্রতিদিন
ও
নির্বাহী সম্পাদক
উদ্যান