মোল্লা তানিয়া ইসলাম তমাঃ রাজধানীর তুরাগের প্রায় সব এলাকায় তীব্র গ্যাস–সংকট চলছে । যে কারণে বাসাবাড়িতে চুলা জ্বলছে না, তাই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এই এলাকার গৃহিণীরা । পবিত্র রমজানের প্রথম দিন রোববার থেকে তুরাগ এলাকায় তীব্র গ্যাস–সংকট চলছে । যে কারণে বাসাবাড়িতে ইফতারি ও সেহরি তৈরিতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে গৃহিণীদের । সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার বানাতে গিয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা । রোববার (৩এপ্রিল) সকাল থেকেই তুরাগের কামারপাড়া, ভাটুলিয়া, রাজাবাড়ি, ধউর, আশুতিয়া, নয়ানগর, বামনারটেক, রানাভোলা, ফুলবাড়িয়া, নলভোগ, পুরান কালিয়া, খায়ের টেক, ডিয়াবাড়ি, চন্ডালভোগ, বাউনিয়া, উলুদাহ, পাকুরিয়া, চান্দুরা মান্দুরা, শোলাহাঁটি, ১৮নং সেক্টরসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহে সমস্যা দেখা দেয় । নিভু নিভু করে জ্বলতে থাকে চুলা । দুপুরের পর একেবারে বন্ধ হয়ে যায় গ্যাস । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনো কোনো এলাকায় সামান্য পরিমাণ গ্যাস ছিল। কিন্তু সে আগুনে ইফতারি বানানো থেকে শুরু করে দৈনন্দিন বাসার কোনো রান্নাও করার মতো অবস্থা ছিল না । এজন্য প্রায় সব এলাকার বাসিন্দাদের প্রথম রমজান থেকেই চিড়া-মুড়ি দিয়েই ইফতার ও সেহরি করেছেন অনেকে । ধউর এলাকার বাসিন্দা ইতি বেগম জানান, বিকেলে অফিস থেকে ফিরে ইফতার বানাতে গিয়ে দেখি চুলায় গ্যাস নেই । সেই গ্যাস সন্ধ্যা পর্যন্ত আসেনি । বাধ্য হয়ে দোকান থেকে চিড়া কিনে এনে ইফতার করি এবং চিড়া দিয়ে ভোররাতে সেহরিও করেছি । জানি না এই গ্যাস সংকট কখন কাটবে । শুধু ইতি বেগম নয়, গ্যাস সংকটের কারণে ওই এলাকার অনেক বাসাতেই ইফতার তৈরি ও সেহেরি রান্না করা যায়নি । ফলে অনেকেই বাইরে থেকে খাবার কিনেছেন । কেউ কেউ বাসায় থাকা কেরোসিনের স্টোভের ওপর ভরসা করছেন । নলভোগ এলাকার বাসিন্দা শিউলি বেগম বলেন, প্রায় সময় দুপুর পর্যন্ত বাসার চুলায় গ্যাস থাকে না । আবার যখন থাকে তখন গ্যাসের চাপ এতটাই ধীরগতি থাকে, রান্না করা যায় না । কিন্তু রোজার প্রথম দিন থেকেই বাসায় ইফতার বানানো বন্ধ । এই পবিত্র রমজান মাসে গ্যাসের এমন অবস্থা! সত্যিই দুঃখজনক । পুরান কালিয়ার বাসিন্দা রুবেল হোসেন বলেন, গ্যাস পুরোপুরি সরবরাহ থাকে না এটা আমাদের এলাকার দীর্ঘদিনের সমস্যা । তাই বলে রোজার সময়ও গ্যাস থাকবে না এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আর কী হতে পারে । মাস গেলে ঠিকই বিল দিই । অথচ প্রথম রোজার দিন থেকেই ইফতার বাইরের হোটেল থেকে কিনে আনতে হচ্ছে । গ্যাস সংকটে তুরাগ বাসীর এমন অভিযোগের বিষয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাথে যোগাযোগ করা হলে উপ-মহাব্যবস্থাপক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমিও শুনেছি ঐ এলাকায় গ্যাস সমস্যার কথা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলবো, যাতে গ্যাস সরবরাহ দ্রুতই স্বাভাবিক হয় ।