মোঃ শহিদুল ইসলাম (সবুজ)
পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের কাউখালি উপজেলার জোলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এ কোন এতিম শিশু না থাকায় বরাদ্দ বাতিল করে দিয়েছে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর। এতিমখানার বরাদ্দ বাতিলের কারণ দর্শানোর নোটিশ নিয়ে এলাকায় অনেকটাই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জোলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং সভাপতি ও সম্পাদক সহ কমিটির ব্যর্থতার কারনেই বরাদ্দ বাতিল হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। গত এপ্রিল মাসের ১৯ তারিখে উপজেলার সমাজসেবা কার্যালয়ে থেকে এতিমদের অনুকুলে ২০২১-২২ অর্থ বছরে বরাদ্দের অর্থ কেনো ফেরত দেয়া হবে না তার উপযুক্ত জবাব দেয়ার জন্য ৭ কার্য দিবস ধার্য করা হলেও কোন উপযুক্ত জবাব দিতে পারেনি জোলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং সভাপতি হায়দার সিকদার।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন জোলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এর সভাপতি সহ কমিটির লোকজনের একঘেয়েমি ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর কারনেই এতিম খানা ও ল্লিাহ বোর্ডিং এ কোন এতিম শিশু নেই। তারা দাবী করেন জোলাগাতি ইসলামিয়া সিনিয়র ফজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার কমিটিকে কেন্দ্র করে দির্ঘদিন সমস্যা চলে আসছে এরই প্রভাব পড়েছে জোলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এর উপরে। রাজনৈতিক আদিপত্যের কারনে এলাকার লোকজন এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এ তেমন কোন সহায়তা দিচ্ছে না। অসহায় এতিম শিশুরা শুধু মাত্র বরাদ্দের টাকায় চলতে পারে না এছাড়াও করোনা মহামারী লকডাউন এলাকার রাজনৈতিক প্রভাব সব মিলিয়ে এতিম শিশুরা চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। এর একমাত্র কারন হিসেবে দায়ী করেছে জোলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এর সভাপতি হায়দার সিকদার ও তার কমিটির লোকদের। স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করেন সভাপতি হায়দার সিকদার তার ভাইদের রাজনৈতিক প্রভাব মাদ্রাসা ও এতিমখানার উপরে বিস্তার করার কারনেই এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং আজ বন্ধের পথে। সভাপতি লতিফ সিকদার ভাইদের রাজনৈতিক প্রভাবে এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডি এর ক্ষতি করছে।
জোলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এর সভাপতি হায়দার সিকদার জানান, করোনা মহামারীর কারনে এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং এর শিশুরা আস্তে আস্তে চলে গেছে। এছাড়াও সমাজসেবা থেকে যে বরাদ্দ পাওয়া যেতো তাতে হুজুর, বাবুর্চ্চি ও এতিমদের খরচ চলতো না। এতিম নেই এলাকার মানুষেরাও কোন সাহায্য করেনা। এছাড়াও মাদ্রসার হুজুররা নিজেরা ঝামেলা করে এবং একটি স্থানীয় চক্র তাদের সাহায্য করে। চক্রটি এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এর সম্পদ হাতিয়ে নিতে চায়। এসব কারনেই এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এর আজ এ দশা।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মহাসীন কবীর জানান, জোলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং নিজে তিন বার পরিদর্শন করেও সেখানে কোন এতিম শিশু শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি। আগে বেশ কয়েকজন এতিম শিশুর জন্য বরাদ্দ হলেও ২০২১-২২ অর্থ বছরে মাত্র ৮ জন এতিম শিশুর জন্য বরাদ্দ দেয়া হতো। কিন্ত ২০২১-২২ অর্থ বছওে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জোলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এ কোন এতিম শিশু না পাওয়ার কারনে ৮ জনের ২ হাজার টাকার করে ৯৬ হাজার টাকা আমরা আটকে দিতে বাধ্য হয়েছি। এছাড়াও চলতি অর্থবছরে জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত ৮ জনের বরাদ্দের ৯৬ হাজার টাকা দেয়া হবে না। বারবার গিয়েও জোলাগাতী ইসলামিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ রোডিং এ কোন এতিম শিশু পাওয়া যায়নি এবং কমিটির লোকজন উপযুক্ত কোন কারন দেখাতে পারেনি।
উল্লেখ্য, এর আগেও সভাপতি হায়দার সিকারের ভাই লতিফ সিকদার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জেলা পরিষদের কোন টেন্ডার বা অনুমতি না নিয়ে ১২ টি তালগাছ ও ১টি রেইন্ট্রি গাছ কেটে আত্মসাৎ এর চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তিনি একসময়ে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ থাকলেও বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য হয়ে এর প্রভাবে মাদ্রাসা এতিমখানা লিল্লাহবোডিং সহ এলাকায় বিভিন্ন ভাবে আদিপত্য বিস্তার করে আসছেন।
তবে এ ব্যাপারে সভাপতির ভাই লতিফ সিকদার সিকদারের সাথে যোগাযোগের জন্য বারবার মোবাইল ফোনে ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।