অনেক পরিশ্রমে খুব ধনী হওয়া এক শহুরে বাবা গ্রামের মানুষ কীভাবে জীবনযাপন করে তা দেখানোর জন্য ছেলেকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেলেন। কয়েকদিন তারা গ্রামে খুব ঘুরে বেড়ালো, গ্রামের ঘরবাড়ি, ফসলের মাঠ, পুকুর, নদী, হাট-ঘাট কোন কিছুই দেখতে বাঁকি রইলো না। কয়েকদিন পর তারা শহরে ফিরছে..
বাবা ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলো, কেমন লাগলো এখানে বেড়াতে?
: ওহ, দারুন বাবা।
“দেখেছ, মানুষ কেমন জীবন যাপন করে?”
:হ্যাঁ, দেখলাম।
এখানে বেড়িয়ে কি কি শিখলে?
ছেলেটি উত্তর দিল,
আমাদের বাসায় যে কুকুর আছে তাকে শিকলে বেঁধে রাখতে হয়, এখানে অনেক কুকুর আছে কিন্তু হারানোর ভয়ে কাউকে বেঁধে রাখতে হয়না
আমাদের বাসায় প্রাচিরঘেরা সুইমিং পুল, এদের রয়েছে নদী, যার সীমা অনেক দূর
আমাদের ঘরে ইলেকট্রিক বাতি রং ছড়ায়,
এদের আঙ্গিনায় জোনাকিরা জ্বলে-নিভে…
আমাদের আকাশে ফানুস ওড়াই, এদের আকাশ তারায় ভরা…
আমাদের আঙ্গিনা প্রাচির ঘেরা, এদের আঙ্গিনা দিগন্ত জুড়ে…
আমাদের বাস ছোট্ট প্লটে, এদের বাস দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত…
নিজের কাজটুকু করার জন্যও আমাদের লোক রাখতে হয়, এরা নিজের কাজ নিজেরাই করে
আমাদের খাবার কিনতে হয়, এরা নিজেরাই খাবার ফলায়…
আমাদের রক্ষা করার জন্য চারপাশে দেয়াল আছে, গার্ড আছে…
এদের রক্ষা করার জন্য চারপাশে অনেক বন্ধু আছে…
বাবা নিরবে চেয়ে রইলেন …
শেষে ছেলে বললো, “থ্যাংকস বাবা, এখানে এসে জানতে পারলাম, আমরা কতও গরিব…!
লেখকঃ বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির আইন প্রশিক্ষক হাসান হাফিজুর রহমান।