বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা তার এগিয়ে চলার শক্তি। মুক্তিযুদ্ধ তার প্রেরণা। সততা আর বিশ্বস্ততা তার মূলধন। নাম তার অভি চৌধুরী। তিনি দৈনিক বিজনেস ফাইল পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং ঢাকা মিডিয়া ক্লাব লিমিটেড’র প্রেসিডেন্ট। তার জন্ম ১৯৬৯ সালের ৪ জুন। জন্মটা ছিল সবুজে ঘেরা বিস্তৃত ধানক্ষেত তার পাশে হিজলতলা, তার কোল ঘেষে ছোট্ট একটি গাব গাছ। তার পাশে ছোট্ট গ্রাম। আর সেটা ছিল কুমারখালী উপজেলা ৪নং সদকী ইউনিয়নের গোপালপুর এলাকার রামকৃষ্ণপুর (ডাকনাম) ঘাসখাল এলাকায়। ৫ম-৮ম শ্রেণীতে বৃত্তিপ্রাপ্ত অভি চৌধুরী কুমারখালী ডিগ্রি কলেজে অধ্যয়নকালীন ইন্টারমিডিয়েট ১ম ও ২য় বর্ষের টেস্ট পরীক্ষায় (বিজ্ঞান, বাণিজ্য, কলা) অল গ্রুপে ৩১ নম্বর বেশি পেয়ে ফার্স্ট হন। ইন্টারমিডিয়েটে বাণিজ্যে পড়াশোনা করেও তার ফোর সাবজেক্ট ছিল উচ্চতর গণিত।
১৯৯৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং শাস্ত্রে অনার্স এবং ব্যাংকিংয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি জাতীয় কবি সংগঠন- অনুপ্রাস’র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। একই সময়ে ডাকসুর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং টিএসসির সংস্কৃতি সংসদ’র সদস্য (এ প্রতিষ্ঠানে ছিলেন প্রয়াত নরেন বিশ্বাস, পরবর্তীতে রামেন্দু মজুমদার,আসাদুজ্জামান নূর প্রমূখ) হয়ে সংস্কৃতি অঙ্গনে জড়িয়ে পড়েন। ছাত্রাবস্থায় জনতা ব্যাংকে জুনিয়র অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেলেও সেখানে মন টেকেনি। গোপালগঞ্জের কাজী মন্টু মহাবিদ্যালয়ে ফিন্যান্স বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নির্বাচিত হলেও কিছুদিন পর তা ছেড়ে দেন। উল্লেখ্য উক্ত কলেজে ভাইভা বোর্ডে ছিলেন (তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী) বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি অন্যতম শীর্ষ সাংবাদিক সংগঠন- বাংলাদেশ কালচারাল রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিসিআরএ)-র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ঢাকা মিডিয়া ক্লাব লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেও তিনি জাতীয়ভাবে আলোচিত। সাংবাদিক এবং সংগঠক হিসেবে তিনি ১২টি স্বর্ণপদকসহ মোট ২৬টি পদকে ভূষিত হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ কয়েকটি স্যাটেলাইট চ্যানেলে অনুষ্ঠান সঞ্চালক। মঞ্চে তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত উপস্থাপক। তিনি বাংলা একাডেমির সদস্য। তার লেখা টাইটানিক প্রেম, এক সমুদ্র অ্যালকোহল, মানুষের মাঝে অমানুষ ভরাসহ বেশ কয়েকটি গ্রন্থ পাঠকমহলে বেশ সাড়া জাগিয়েছে। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)-এর সিনিয়র সদস্য। সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন ঐতিহ্যবাহী বিএসপি’র নির্বাচিত সাংস্কৃতিক সম্পাদক তিনি। তিনি দেশের সর্বোচ্চ ব্যবসায়ী সংগঠন-এফবিসিসিআই’র জেনারেল বডি মেম্বার।
তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী রিপোর্টার্স ইউনিটি ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পত্রিকা ‘ঋতু’র প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বিশ্বস্বীকৃত কোয়ান্টাম মেথডের গ্রাজুয়েট। তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠক-সাংবাদিক ও সংগঠক হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে চীন, আমেরিকা,ভারতের নয়াদিল্লী ভ্রমণ করেন। ২০১৬ সাল ও ২০১৯ সালে আমেরিকার জাতিসংঘে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন। ২০১৬ সালে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস্-এ অবস্থানকালে বাঙালি কমিউনিটিতে কয়েকটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। সেখানে তাকে একজন সফল সংগঠক হিসেবে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এ অনুষ্ঠানে তিনি শ্রদ্ধার সাথে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবন তুলে ধরেন। তুলে ধরেন কুষ্টিয়া তথা কুমারখালীর বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাউল সম্রাট লালন ফকির, ঐতিহাসিক গ্রন্থ ‘বিষাদ সিন্ধু’র রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেন, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রদূত বাঘা যতীন, ধর্মীয় সংস্কারের দিকপাল কাজী মিয়াজান প্রমুখের নাম। নিউইয়র্কের ইউএস বাংলা কনফারেন্স এবং এনটিভি স্টুডিওতে বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির গুরুত্ব তুলে ধরেন। আমেরিকার বোস্টনে (বার্লিংটোন) অবস্থানকালে সেখানেও কুমারখালী এবং খোকসার নানা গুরুত্বপূর্ণ মনীষী এবং ঘটনার আলোকপাত করেন। মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত ডি-৭ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি কুমারখালীর বস্ত্র শিল্পের ইতিহাস তুলে ধরেন। বিশ্বের প্রায় ১১৬টি দেশের প্রধান/প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত কাচি ((CACCI) ) সম্মেলনে কুমারখালীর সাহিত্য ও সংস্কৃতির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তুলে ধরে এ এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের ভাবমূর্তিকে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে অংশ নিতে তিনি মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করেন।
বঙ্গবন্ধু, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং গর্বের বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান প্রায় ৫ বছর ধরে প্রতি সপ্তাহে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মিডিয়া ক্লাবের মাধ্যমে তুলে ধরছেন। এখন বাংলাদেশে সেই ঐতিহ্যবাহী বিউটি বোর্ডিং নেই, নেই কফি হাউজের সেই আড্ডাটা…, কিন্তু আছে অভি চৌধুরীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ঢাকা মিডিয়া ক্লাব। যেখানে সমাজের এলিট শ্রেণীর মানুষের জমজমাট আড্ডার আসর বসে। তার সম্পাদনার দৈনিক বিজনেস ফাইল পত্রিকা এখন কুমারখালী-খোকসাবাসীর প্রিয় পত্রিকা হিসেবে পরিগনিত। এ পত্রিকায় এ এলাকার মানুষের আনন্দ-বেদনার কথা তুলে ধরা হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন সভা, অনুষ্ঠান, সিম্পোজিয়াম করে তিনি যেমন সর্বাধিক আলোচিত তরুণ রাজনীতিবিদ তেমনি ক্ষেত্র বিশেষে এলাকার মানুষ নানা প্রয়োজনে তাকে কাছে পেয়েছেন। তিনি সমালোচনা পছন্দ করেন না। সিনিয়র রাজনীতিবিদ, শিক্ষকদের প্রতি যেমন তার শ্রদ্ধা তেমনি সকলের সাথেই তার রয়েছে চমৎকার সম্পর্ক। বয়সে ছোটদের কাছেও তিনি যথেষ্ট সম্মানের পাত্র। তিনি কুষ্টিয়া জেলা সমিতি , ঢাকার সম্মানিত সদস্য এবং ঐতিহ্যবাহী আমরা কুমারখালীবাসী সংগঠনের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। তার বক্তব্যের স্টাইল এবং তথ্য এক ভিন্ন ধরনের আমেজ এনে দেয় মানুষের।
রাজধানী ঢাকাতে শীর্ষস্থানীয় অনুষ্ঠান আয়োজকদের অন্য তিনি। তার আয়োজনের অনুষ্ঠান সমূহে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, জাতীয় সংসদের স্পিকার-ডেপটি স্পিকার, পাবলিক সার্ভিস কমিশন চেয়ারম্যান, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, সর্বাধিক আলোচিত চলচ্চিত্র-টেলিভিশন শিল্পীরা নিয়মিত অংশ নেন। তার সহোদর অন্য দুই ভাই, তিন বোন প্রত্যেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে চাকুরীরত। ভাইদের স্ত্রীরাও উচ্চশিক্ষিতা। ছোট বোন কান্তা বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত। বোন কান্তা এবং স্ত্রী পান্না চৌধুরী (অর্থনীতিতে মাস্টার্স) দু-জনেই কণ্ঠশিল্পী। তিনি বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি প্রতিরোধ মঞ্চ-কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পালন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন ৯০’র গণআন্দোলনে তিনি পুলিশের লাঠিচার্জে মারাত্মক আহত হন এবং তাকে ঢাকার রমনা থানায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। উল্লেখিত অবস্থা থেকে স্বাভাবিক হতে প্রায় ৯ মাস লেগে যায়। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়ন ও জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে নিরলসভাবে, একাগ্রচিত্তে কাজ করে চলেছেন। তিনি ঢাকা মহানগরের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আওয়ামী লীগ শাহবাগ থানা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। মঞ্চে এবং টেলিভিশনে একজন সফল উপস্থাপক তিনি। জন্মদিনে তার জন্য রইল আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
লেখকঃ কে এম সিদ্দিকুর রহমান ,সভাপতি-কুমারখালী রিপোর্টার্স ইউনিটি কুমারখালী, কুষ্টিয়া।