রেজাউল ইসলাম, মঠবাড়িয়া।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় সৌদি প্রবাসী শহিদুল ইসলামের স্ত্রী শিমু (২৬) টাকা আত্মসাতের ঘটনায় পারিবারিক কলহের জের ধরে ২৪ মে রাতে বড়মাছুয়ায় তার ভাড়াটে বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় মঠবাড়িয়া থানায় ২৫ মে স্বামী শহিদুলকে প্রধান আসামী করে এজাহার নামীয় ৩ জনের বিরুদ্ধে নিহত শিমুর ভাই আনোয়ার পারভেজ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সৌদি প্রবাসী পশ্চিম মিঠাখালী নিবাসী শমসের আলীর পুত্র শহিদুল শাখারীকাঠি নিবাসী মোশারফ হাওলাদারের কন্যা শিমুকে ১৩ বছর পূর্বে ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী বিবাহ করেন। ওই সংসারে তাদের ঔরসে দু’টি সন্তানের জন্ম হয়। যার নাম জান্নাতি (৯), সায়েম (৭)। শহিদুল ৫ বছর ধরে সৌদি আরব থাকাকালীন তার স্ত্রী শিমুর মঠবাড়িয়া শাখা ইসলামি ব্যাংক ও পুবালী ব্যাংকের একাউন্টে তার চাকুরী জীবনের সিংহভাগ টাকা প্রেরণ করেন। যে টাকা শিমু তার বাবা-ভাইদের শহিদুলের অজান্তে একাউন্ট থেকে উত্তোলন করে ধার দেন। স্বামী শহিদুল দেশে আসলে ওই টাকার হিসাব চাইলে শিমু তা যথাযথভাবে দিতে ব্যর্থ হয় এবং একাউন্ট শূণ্য পাওয়া যায়। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা আমার বাবা ও ভাইকে ধার দিয়েছি। স্বামীর টাকা ফেরত চাইতে গেলে ওই টাকা তারা ফেরত প্রদান করেন নি বরং শিমুকে তার পরিবারের লোকজন অশ্রব্য ভাষায় গালাগাল করে। এক পর্যায়ে শিমু নিজেকে সংবরণ করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। যে ঘটনায় ২৪ মে রাতে শিমু তার বড় মাছুয়ার ভাড়াটে বাসার বাথরুমে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেন। অথচ আসল ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে অন্যদিকে প্রবাহিত করে শহিদুলকে ফাঁসাতে নিহতের ভাই স্থানীয় থানায় এই বলে অভিযোগ করেন যে, আমার বোনকে শহিদুল বিভিন্ন সময়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন এবং তাকে বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। এছাড়াও শহিদুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নারীর সাথে পরকিয়া সম্পর্কের অভিযোগ এনে এ ঘটনায় বাধা দেয়ায় শিমুকে শারীরিক নির্যাতন করা হতো। শহিদুলের ভাই আরাফাত লিখিত অভিযোগে বলেন, আমার ভাই কোনোদিন আমার ভাবিকে মারধর করেন নি। বরং তাদের মধ্যে অত্যন্ত সু-সম্পর্ক ছিল। যে কারণেই আমার ভাই তার প্রবাসী জীবনের প্রায় সকল অর্থ স্বর্ণালংকার ভাবীর কাছে নিরাপদ মনে করতেন। তিনি বলেন, আমার ভাইয়ের অর্থ-সম্পদ সবকিছু আত্মসাৎ করে উল্টো তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের ষড়যন্ত্রে আজ তিনি মিথ্যা মামলায় জেল হাজতে রয়েছেন। যে ঘটনায় আমরা গোটা পরিবার মর্মাহত। গণমাধ্যম কর্মীদের সঠিক ঘটনা সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে পত্রিকায় প্রকাশ করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
শিমুর ভাই পারভেজ জানান, আমার পরিবার শহিদুলের কোনো টাকা পয়সা, স্বর্ণাংকার আত্মসাৎ করেনি বরং তাকে বিভিন্ন সময়ে আমরা লাখ লাখ টাকা বোনের শান্তির জন্য দিয়েছি। অথচ সে বোনটি শহিদুলের পরকিয়ার বলি হয়ে আজ দুনিয়া থেকে মিথ্যা আত্মহত্যার অভিযোগ নিয়ে বিদায় হয়েছে। আমরা ধারণা করছি শহিদুল ও তার লোকজন আমার বোনকে হত্যা করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলো।