জিরাফ শাবক কখনো পাঠশালায় যায় না, কিন্তু জীবনের শুরুতে তারা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি পাঠ অর্জন করে…
জিরাফ শাবক মাতৃগর্ভ থেকে প্রায় ৮/১০ ফুট নিচে পড়ে ভূমিষ্ঠ হয়, সদ্যোজাত শাবকটি ব্যাথায় কুঁচকে যায় এবং নড়াচড়া না করে ঠাঁয় পড়ে থাকে।
মা জিরাফ ঘাড় নিচু করে শাবকটিকে গাচেটে আদর করে স্বাগতঃ জানায় । তারপরেই অবিশ্বাস্য একটা কান্ড ঘটে। সে তার লম্বা পা তুলে সদ্যোজাত শাবক ‘কে কষে লাথি মারে, শাবকটি ছিটকে পড়ে মাটিতে গড়াগড়ি খেতে থাকে…
শাবকটি কুঁকড়ে শুয়ে থাকা অবস্থায়, তাকে মা জিরাফ ঘাড় নিচু করে মাথা দিয়ে বারবার ধাক্কা এবং লাথি মারতে থাকে, যতক্ষণ না শাবকটি প্রথমবারের মতো নিজের পায়ে দাঁড়াতে শেখে…
বাচ্চাকে নিজ পায়ে দাঁড়াতে দেখে খুশি হয়ে মা জিরাফ আবার লাথি দেয়। লাথি খেয়ে শাবকটি আরও একবার পড়ে যায়, কিন্তু এবার দ্রুত উঠে দাঁড়ায়…
এবার মা জিরাফ পুরোপুরি আনন্দিত, কারণ সে জানে তার বাচ্চাকে টিকে থাকার গুরুত্বপূর্ণ পাঠ শেখানো হয়ে গেছে…
* জন্মের ৩০ মিনিটের মধ্যেই জিরাফ শাবক হাঁটতে শিখে যায়।
মা জিরাফ কেন এমন করে?
কারন সে জানে, জিরাফের মাংস সিংহ এবং চিতাবাঘের খুব পছন্দ। তাই যতক্ষণ না বাচ্চা জিরাফ দ্রুত দাঁড়াতে এবং দৌড়াতে শিখবে, ততক্ষণ তার বেঁচে থাকার কোনো সম্ভাবনা থাকবে না…!
আমরা কিন্তু বাচ্চা জিরাফের মতো ভাগ্যবান নই, আমরা যখন পড়ে যাই তখন কেউ আমাদের দাঁড়াতে শেখায় না..!!
©Hasan Hafizur Rahman
ব্যর্থ হই, হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দেই। মোটেও মনে আসেনা যে আরামের ভূবন ছেড়ে বেঁচে থাকতে, সফল হতে, কিংবা টিকে থাকতে নিজ পায়ে দাঁড়াতে শিখতে হবে…♥
লেখকঃ বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির আইন প্রশিক্ষক হাসান হাফিজুর রহমান।