কাজী আনিসুর রহমান পোড় খাওয়া একজন ত্যাগী ছাত্রনেতা ছিলেন। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে কুষ্টিয়ায় তিনি অসামান্য অবদান রেখেছেন। সে সময় কুষ্টিয়ায় ছাত্রলীগের রাজনীতি করা অত্যন্ত দুরহ ব্যাপার ছিল। কুষ্টিয়ায় তখন হাতেগুনা স্বল্প সংখ্যক মানুষ আওয়াী লীগ ও ছাত্রলীগ করতো। আওয়ামী রাজনীতির চরম দুঃসময়ে তিনি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সুসময়ে নিজের পাওনা টাকা আদায় করতে না পেরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যা করেছেন। পত্রিকার খবরে প্রকাশ হেনোলাক্স কোম্পানির সাথে ব্যবসা করতে গিয়ে তিনি তাঁর সারা জীবনের সব সঞ্চয় ঐ কোম্পানীতে বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর সাথে বেঈমানি করে। মৃত্যুর পুর্বে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে হেনোলাক্স কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে গেছেন। তাঁর সকল কষ্টের কথা বলে গেছেন। তিনি তাঁর পাওয়া টাকার জন্য দ্ধারে দ্ধারে ঘুরেও কোন প্রতিকার না পেয়ে এক পর্যায়ে তিনি হতাশ হয়ে আত্মহননের পথ বেঁচে নেন। একজন মানুষ কতটা কষ্ট পেলে নিজের স্ত্রী সন্তান পরিবার পরিজনের মায়া ত্যাগ করে আত্মহত্যা করতে পারেন তা সহজেই অনুমেয়।
আমি খুব কাছ থেকে আনিসকে দেখেছি। ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার স্হানান্তরের পর আমরা একসাথে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে কাজ করেছি। অসাধারণ একজন সংগঠক ও ত্যাগী নেতা ছিলেন আনিস। কুষ্টিয়ায় হরতালের মিছিল থেকে আমার সাথে গ্রেফতারও হয়েছিলেন আনিস । সেই দুঃসময়ের মুজিব রণাঙ্গনের সাহসী যোদ্ধা আনিস আজ তাঁর নিজের পাওনা টাকা আদায় করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিলেন। আনিস আত্মহত্যা কি শুধুই আত্মহত্যা – নাকি হত্যা? এদায় কার? হেনোলাক্স কোম্পানি আনিসকে তিলে তিলে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিয়েছে। এ দায় তাদেকেই নিতে হবে।
আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও সুষ্ঠু তদন্ড সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি।
তথ্যসূত্রঃ শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু এর ফেসবুক থেকে