গত এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ২২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৪৬৬ জন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ২০১৮ সালের সড়ক দুর্ঘটনার এই চিত্র তুলে ধারা হয়। বার্ষিক প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
প্রতিবেদন অনুযায়ী গত বছরে ৫ হাজার ৫১৪টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৭ হাজার ২২১ জনের মৃত্যু হয়। সড়কে যাদের প্রাণ গেছে, তাদের মধ্যে ৭৮৭ জনই নারী। আর ৪৮৭ জন শিশু। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে এক হাজার ২৫২ জন চালক ও শ্রমিক, ৮৮০ জন শিক্ষার্থী, ২৩১ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১০৬ জন শিক্ষক এবং ৩৪ সাংবাদিক রয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে রেলপথে ৩৭০টি দুর্ঘটনায় ৩৯৪ জন নিহত ও ২৪৮ জন আহত হয়েছেন। আর নৌপথে ১৫০টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১২৬ জন। আহত হয়েছেন ২৩৪ জন। ৩৮৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
এছাড়া প্রতিবেদনে বলা হয়, আকাশপথে পাঁচটি দুর্ঘটনায় গত বছর ৫৫ জন নিহত ও ৩২ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে নেপালে ইউএস বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনা যুক্ত করা হয়েছে।
গত বছর সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশ পথ মিলিয়ে মোট ৬ হাজার ৪৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৭ হাজার ৭৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৯৮০ জন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়লেও হতাহতের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে।
সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদের আলোকে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
তিনি আরো বলেন, গত বছরের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমান বন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। দেশের প্রতিটি স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশে করেন অভিভাবকসহ দেশের সচেতন মানুষ। শুরু হয় দেশব্যাপী নিরাপদ সড়কের আন্দোলন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে বলা হয়, এসব সড়কে দুর্ঘটনা বাড়ার পেছনে রয়েছে- বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, ওভারটেকিং, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, যানবাহনে অতি পণ্য বা যাত্রী বহন, সড়ক-মহাসড়ক ও রাস্তা-ঘাটের নির্মাণ ক্রটি, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ব্যবহার, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত দখলে থাকা।
সূত্রঃ ইত্তেফাক