নব্বই দশকের শুরু থেকেই লেখালেখির পাঠশালায় তৌফিক জহুর। কবি তৌফিক জহুরের প্রবন্ধ লেখার ঢং ও স্টাইল তাঁর সমসাময়িকদের কাছে ঈর্ষণীয়। বুদ্ধদেব বসু, আবদুল মান্নান সৈয়দের গদ্যে যে নিরীক্ষা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, তা তৌফিক জহুরের গদ্যে পাওয়া যায়। গবেষণামূলক গদ্যে তাঁর পারঙ্গমতা যেমন পাওয়া যায়, তেমনি কবিতায় সহজ সরল দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে দিয়ে তিনি প্রকাশ করেন মনের অব্যক্ত কথা। তৌফিক জহুর মূলত প্রেমের কবি। নব্বই দশকের শুরু থেকে লেখালেখি করলেও প্রায় দুইযুগ পর প্রকাশ পায় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘তৃষ্ণার্ত চোখের আকুতি’। যা পাঠক মহলে বেশ সাড়া ফেলে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ এর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হলো দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘পাখি বিক্রি কাহিনি’। বাংলা কবিতার জগতে কবির এই কাব্যগ্রন্থ নতুন এক দিগন্ত উন্মোচিত করবে। প্রেমের কবিতার প্যাটার্ন সম্ভবত কবি নিরীক্ষার মাধ্যমে পরিবর্তনের চেষ্টা চালিয়েছেন এই কাব্যগ্রন্থে। এই কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতায় অফুরন্ত কাব্যরস প্রস্ফুটিত হয়েছে। এই যে অসীম প্রাণশক্তি ও অনুভূতিরাশি এখান থেকেই উদগিরণ হয় স্বপ্ন। যে স্বপ্ন আবেগায়িত করে রাখে পাঠককূলের হৃদয়। এর বেশ থেকে যায় বহুকাল। আধুনিক বাংলা কবিতায় এই কাব্যদ্যোতনা সংযোজন নিঃসন্দেহে ভিন্নমাত্রা স্থান পাবে। কবি হৃদয়ের আকুতি বুঝতে এই গ্রন্থপাঠ আবশ্যিক জরুরি।
১৯৯৩ সাল থেকে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে, সাপ্তাহিকে খ-কালীন কাজ করেছেন তিনি। উল্লেখযোগ্য- দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক বাংলার বাণী, দৈনিক জনকণ্ঠ। এছাড়া পাক্ষিক সাদাকালো ম্যাগাজিনে সহ-সম্পাদকের দায়িত ¡পালন করেন। পরবর্তীকালে সাপ্তাহিক রোববার, মাসিক এশিয়া ডাইজেস্ট, সাপ্তাহিক বৈচিত্র পত্রিকায় সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত ¡পালন করেন। আল মাহমুদ ও অন্যান্য (২০০৪) কবির গবেষণামূলক প্রবন্ধগ্রন্থ। এছাড়া তৃষ্ণার্ত চোখের আকুতি (২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬) প্রথম কাব্যগ্রন্থ। ১৯৯৮ সাল থেকে লিটল ম্যাগাজিন ‘উদ্যান’ সম্পাদনা করছেন। লেখালেখি, পড়াশোনা, আড্ডা আর ভ্রমণ তাঁর শখ। ভ্রমণের নেশায় বাংলাদেশ চষে বেড়ান অবসর পেলেই। এছাড়া ভারত, মালয়েশিয়া, চায়না কবি ভ্রমণ করেছেন।