মাজহারুল রাসেল : সোনারগাঁ উপজেলায় আধুনিক পদ্ধতিতে দেশি মাছর চাষ করে লাভবান হচ্ছে চাষিরা। প্রায় হারিয়ে যাওয়া দেশি মাছগুলো ওই পদ্ধতিতে চাষ করছেন প্রান্তিক মাছ চাষিরা। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে প্রদর্শনী পুকুরে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছে আধুনিক পদ্ধতিতে দেশি মাছের চাষের বিষয়টি। ফলে একদিকে যেমন চাষিরা মাছ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে আমিষের চাহিদাও পূরণ হচ্ছে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বলেন, উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার পুকুরে চলছে মাছ চাষ। এসব পুকুরে কই, শিং, মাগুর, পাবদা,টাকি, গুলশাসহ নানা ধরনের মাছ রয়েছে। মাছ চাষের জন্য মাঠ পর্যায়ে পুকুর নির্বাচন করে প্রস্তুত করা হয় মাছ চাষের জন্য। চাষিদের পোনা মাছ ও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আরও পাঁচজন বন্ধু চাষি নির্বাচন করা হচ্ছে । যাতে মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন তারা ।
তিনি আরও জানান, এসব পুকুরে সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত রয়েছেন একজন চিকিৎসক। তাকে লিফ ম্যান বলা হয়। ছোট ধরনের সমস্যা হলে তিনিই সমাধান করে থাকেন।
সোনারগাঁ পৌরসভার অর্জুনদী গ্রামের চাষি মাঈন উদ্দিন বলেন, ৬০ শতক পুকুরে কই, শিং, মাগুর ও অন্যান্য মাছের চাষ করছি। মাত্র কয়েক মাসেই বিক্রির উপযোগী হয়েছে মাছ। আশা করছি, এবার আমার পুকুরে ১ হাজার ৫০০ কেজি মাছ উৎপাদিত হবে। আর উৎপাদিত মাছের বাজারমূল্য দাঁড়াবে প্রায় ৪লাখ টাকা। এতে খরচ বাদেও প্রায় ২ লাখ টাকা লাভ থাকবে।
বারদী ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের দেশি মাছ চাষি মৎস্যজীবী লীগের ওয়ালিম জানান, তার নিজের ৬বিঘা তিনটি পুকুরে দেশি প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়। তিনি তারা চাষকৃত মাছ মূলত ঢাকার পাইকারি বাজার গুলোতে বিক্রি করে থাকেন।দেশি মাছ চাষে তিনি প্রতিবছর সবকিছু খরচাপাতি বাদ দিয়ে দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা লাভ করতে পারেন। তিনি আরো বলেন যেকোনো বিপর্যয়ে আমরা নানা ধরনের বিপদ গ্রস্থ হই তাই সরকারি ব্যাংকগুলোর যদি আমাদের ঋণ দিয়ে দ্রুত আর্থিক সহযোগিতা করতো তাহলে আমাদের ক্ষতি পুষিয়ে আমরা দ্রুত লাভবান হতে পারব।
ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) উপ-প্রকল্প পরিচালক বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে দেশি মাছ চাষ করা হচ্ছে। প্রকল্পের মাধ্যমে চাষিদের উপকরণ সহায়তা বাবদ ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। চাষিরা আগ্রহ নিয়ে মাছ চাষ করছেন, আর্থিকভাবে লাভবানও হচ্ছেন।