মো জাহিদ।।
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর-বেলুয়া বাজারের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পাকা রাস্তাটি মেরামত না করায় এক বছর ধরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হাজারো মানুষ।
জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে এলজিইডি দ্বিতীয় দফায় প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচে রাস্তাটি নির্মাণ করে। গত বছর মে-জুনে বৃষ্টি বর্ষায় পূর্ব ভোলারপাড়া এলাকায় রাস্তাটির কয়েকটি স্থান পুকুর ও খালে ধসে পড়ে। এতে তৌরি হয় বড় বড় গর্তে। ১২ ফিট প্রশস্ত রাস্তার ৮ থেকে ৯ ফুট ভেঙ্গে পুকুরে বা খালে পড়ায় বড় যানবাহন তো দূরের কথা, এখন রিকসা ভ্যানও পারাপার হতে পারেনা।
হেমনগর বাজারের ব্যবসায়ী মিলন হোসেন জানান, উপজেলার হেমনগর ইউনিয়ন ছাড়াও আলমনগর ইউনিয়নের ১২ গ্রামের মানুষ এই রাস্তা দিয়েই প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন। বেলুয়া বাজার, বাংলা বাজার, হেমনগর বাজার এবং নলিন বাজারে সব কৃষিপণ্য এ পথেই আনানেওয়া করেন কৃষকরা। কিন্তু রিকসা ভ্যান পর্যন্ত পারাপার সম্ভব না হওয়ায় কৃষকরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়।
স্কুল শিক্ষক আবুল হাসেম জানান, এ রাস্তা দিয়ে বিভিন্নস্তরের ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী চলাচল করেন। কিন্তু রাস্তাটির ভঙ্গুরদশায় সব যানচলাচল বন্ধ থাকে। এ ছাড়াও এলাকার ভূমি অফিস, দুটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র, একটি দাতব্য চিকিৎসালয় এবং দুটি বেসরকারি হাসপাতালে বহু মানুষকে প্রতিদিন আসাযাওয়া করতে হয়। দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য হেমনগর রাজবাড়ী পরিদর্শনের জন্য দূরদুরান্ত থেকে বহু পর্যটক আসেন। রাস্তার দূরাবস্থায় সবাই নিদারুন ভোগান্তির শিকার হন।
হেমনগর শশীমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী নাজনীন সুলতানা জানান, এ পথেই প্রতিদিন অনেক শিক্ষার্থীকে তাদের স্কুলে যেতে হয়। যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় পায়ে হেটে যথাসময়ে ক্লাসে উপস্থিত থাকতে সমস্যা হয়। এতে তাদের লেখাপড়া ব্যাহত হয়। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে রাস্তাটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেরামত করার অনুরোধ করেন।
হেমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান তালুকদার হীরা জনগণের দুর্ভোগের সত্যতা স্বীকার করে জানান, কোন পাড় না রেখে সড়কের ধারে এক শ্রেণির মানুষ পুকুর খনন করায় এ পাকা রাস্তাটি ভেঙ্গে একাংশ পুকুর বা খালে নিমজ্জিত হচ্ছে। ফলে রাস্তাটির করুণদশা তৈরি হয়েছে। রাস্তাটি দ্রুত মেরামতের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে।
গোপালপুর এলজিইডির প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, বহুবার সতর্ক করা সত্বেও প্রভাবশালীরা পাকা রাস্তার ধারে পুকুর বা ডোবা খনন করায় রাস্তা ধসে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছ। শক্ত পাইলিংয়ের কাজ ছাড়া এ রাস্তা মেরামত সম্ভব নয়। বিধায় বাড়তি বরাদ্দের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।