হাকিকুল ইসলাম খোকন,যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধিঃপাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সেনাশাসক পারভেজ মোশাররফ মারা গেছেন।
দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার পরিবার এ তথ্য নিশ্চিত করে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়, পারভেজ মোশাররফ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দুবাইয়ের ‘আমেরিকান হসপিটাল’-এ ভর্তি ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। জানা গেছে, বিরল রোগ অ্যামিলোইডোসিসে আক্রান্ত ছিলেন মোশাররফ। এই রোগের রোগীদের দেহে অ্যামিলোইড নামের এক প্রকার প্রোটিন অস্বাভাবিক মাত্রায় তৈরি হতে থাকে।
সীমিত মাত্রার অ্যামিলোইড মানবদেহের জন্য তেমন ক্ষতিকারক নয়, তবে মানবদেহে অস্বাভাবিকভাবে এ প্রোটিন বাড়তে থাকলে দেহের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন প্রত্যঙ্গের কোষ ও টিস্যুতে মরিচার মতো এটি জমতে থাকে এবং তার ফলে একসময় কার্যকারিতা হারাতে থাকে এসব প্রত্যঙ্গ।
১৯৯৯ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে অপসারণ করে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান শাসন করেন মোশাররফ। ২০০৭ সালের ৩ নভেম্বর জরুরি অবস্থা ঘোষণার মাধ্যমে সংবিধান বাতিলের ঘটনায় ২০১৩ সালে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ইসলামাবাদের বিশেষ আদালতের তিন সদস্যের বেঞ্চ। পরবর্তীতে লাহোর হাইকোর্টে খোদ ওই আদালত গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন মোশাররফ। লাহোর হাইকোর্টের রায়ে তার বিরুদ্ধে বিশেষ আদালত গঠনকেই অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়।
২০১৬ সালের মার্চে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুবাইয়ের উদ্দেশে পাকিস্তান ছাড়েন মোশাররফ। পরবর্তীতে চিকিৎসার জন্য দুবাইয়ে আসেন তিনি।
১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন পারভেজ মোশাররাফ। ১৯৬১ সালের ১৯ এপ্রিল তিনি পাকিস্তানের মিলিটারি একাডেমি থেকে কমিশন লাভ করেন।তিনি তার বাবা-মায়েরদ্বিতীয় পুত্র। তার দুই ভাই, জাভেদ এবং নাভেদ। তিনি ১৯৬৮ সালে সেহবাকে বিয়ে করেন। তাদের সন্তান আয়লা এবং বিলা।