৭ কোটি বাঙালীকে যেভাবে দমিয়ে-দাবায়ে রাখতে পারেনি ১৯৭১ সালে পাক-হানাদাররা। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম —জয়বাংলা। এই শ্লোগানের পরপরই ঝাঁপিয়ে পড়া স্বাধীনতাকামীদের রক্ত,ত্যাগ আর ইজ্জ্বতের বিনিময়ে বিজয়ের লাল সবুজের পতাকা বাঙালীর হাতেই এনেছিলেন সেইদিন। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক শ্লোগানে বাঙালী জাতি যেভাবে ঐক্যে উদ্বেলিত হয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তেমনি অর্জিত সেই স্বাধীনতা রক্ষার দায় কিন্তু নতুন প্রজন্ম কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেন না।
৫২’তে মায়ের ভাষার জন্য যুদ্ধ, সেটি যেমন বিশ্বে বিরল, তেমনি ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ এগুলো বাঙালীর সাহসিকতা আর ঐক্যের ফসল, গর্ব। ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান থেকে মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি ইউনেস্কে, তেমনি ভাষা রক্ষায় ত্যাগী সৈনিকদের সম্মানিত করতে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলে ৫২’রও। দেশ আজ উন্নয়নে বিশ্বের রোল মডেল। বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে হাইওয়ে থেকে হাইওয়ে চলছে আমাদের বাংলাদেশ। ঠুনকো অজুহাতে কেউ কেউ হাইওয়ে থেকে লোকাল ডিস্ট্রিক্ট রোডে চাপিয়ে আনার কোনো কারণ নেই। প্রয়োজন আরো দৃঢ়, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, সাহসী পরিকল্পনা। শেয়ালের ডাকে রাতে খোপের হাঁসমুরগী চমকে ওঠতেই পারে, তবে কিন্তু সেদিন পাক-হানাদারদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা মানুষেরা দেখিয়ে দিয়েছিল বাঙালীরা কতটা সাহসী আর কি না পারে! রাষ্ট্রপতি নিয়োগের বিরুদ্ধে রীট দাখিল এটাকে কম স্বাধীনতা বলার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ আপনার,আমার, সকলের। দেশটাকে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে বাঁধা কেবলই দূর্ণীতি, স্বজনপ্রীতি, সমুদ্র ডাকাতি। এসবের বিরুদ্ধে সামাজিক শ্লোগান তোলা দরকার। তেমনি দরকার গণমাধ্যমের মুক্তস্বাধীনতা। দরকার মুক্ত স্বাধীন সাংবাদিকতা। সত্যকে সত্য আর মিথ্যাকে মিথ্যা লেখতে পারার সাহস। গণমাধ্যমে হযবরল পরিস্থিতি উত্তরণটাও জরুরী।
১৪ দফায় ঘটুক সাংবাদিকতার স্বাধীনতা। নতুন করে কৃষি থেকে শিল্প বাণিজ্যে আধুনিক স্মার্ট পরিকল্পনা জরুরী। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আরো বেশি আন্তরিক চেহারায় দেখতে চাওয়াটা করোনা মোকাবেলা পরবর্তী বাঙালীর কিন্তু মূখ্য দাবি। যানজটে আর ধূলোবালিতে নাস্তানাবুদ গোটা বাংলাদেশ। সড়ক, নৌ,রেল,আকাশ পথও নিয়ন্ত্রণ করা উচিৎ রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো, ঐতিহাসিক নিদর্শন, নদী-খাল, দেশীয় সীমানা রক্ষাসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ, সকল পেশার মানুষের দিকে তাকিয়ে দেখা কিন্তু রাষ্ট্র তথা সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ার কথা। ভিক্ষুকমুক্ত বাংলাদেশ দাবি করলেও রাস্তাঘাটে তাদের অহরহ দেখা মেলছেই। রাষ্ট্রীয় সেবা তৃনমূলে পৌঁছাতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে আরো আন্তরিক হওয়া উচিত। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা কেন যেন আজ বাণিজ্যিক লেভেলে গিয়ে পৌঁছে। মোবাইল -ইন্টারনেট সেবাটা দেশে অন্যরকম ডাকাতিতে রুপ নিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষাকে তিনি সম্মানিত ও প্রাধান্য দিয়ে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গেজেটেড শিক্ষকদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর প্রথা বিলুপ্ত করে বিশ্বাসের ওপর ছেড়ে দিয়ে গেছেন। আর তাইতো তাদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে হয়না। আর আজ অনেকে শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে পুতুলবাজিতে রুপান্তরিত করে ফেলছেন অনেকটা।
দেশে শ’শ বছরের সেকেলে আইন সংশোধন করে হালনাগাদ আইন তৈরি করা উচিৎ। খাদ্যে বিষক্রিয়া মেশানো ব্যবসায়ি এরা কারা? মাহে রমজান সমাগত। জানি আমার মত ক্ষুদ্র মানুষের কথায় কিছু যায় আসেনা ; তবুও মনের কথা গুলো বলতে পারাটাকেই আমি স্বাধীনতা বলছি। জয়বাংলা আজ রাষ্ট্রীয় শ্লোগান। ভুমি আইন নিয়ে সরকারের গৃহীত উদ্যোগ প্রশংসিত। পদ্মা সেতু,মেট্রোরেল, কর্নফূলী টানেল, ওভারব্রিজ, হাইওয়ে সড়ক দেশকে বিশ্ব দরবারে এগিয়ে নিতে নতুনমাত্রাও। গণমাধ্যম আইন কিংবা নীতিমালাসহ সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন আজ প্রাণের দাবিতে পরিনত হয়েছে। অধিকাংশ বেতন ভাতাহীন, সুবিধা বঞ্চিত ছাপোষা গণমাধ্যমকর্মী সাংবাদিকরা আজ কোন না কোন মিডিয়ার বেড়ায় পরিনত হয়ে গেছে। কোথাও তাদের হুকুমের গোলাম কিংবা পাহারাদার। এমনটা হবার কথা ছিল না। তবে স্বাধীনতা মানে কারো রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্যটা তুলে ধরা। সাংবাদিকদের প্রতি আজকের দিনে আহবান; আপনারা রাষ্ট্রের স্বার্থে সামাজিক দায়বদ্ধতার খাতিরে পেশাগত দায়িত্ব পালন করুন। কোন অপশক্তির কাছে আর মাথা নত নয়; পেশার বৃহৎ স্বার্থে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি। সর্বপরি; ৭১’র আগে পরের সকল পরিস্থিতির চেয়ে বাংলাদেশ আজ উন্নত, উন্নয়নশীল। জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা, স্যালুট তোমায়-জয়বাংলা।
আহমেদ আবু জাফর
চেয়ারম্যান,বোর্ড অব ট্রাস্টি
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম -বিএমএসএফ,
৭ মার্চ ২০২৩ খ্রী:।