নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি:
নীলফামারী জেলা প্রশাসক দপ্তরের কয়েকটি পদে লোক নিয়োগের পরীক্ষায় উত্তরপত্রসহ ফয়সাল ইসলাম চৌধুরী (রোল নং ১৪০০১৭১) নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। শনিবার(১১ মার্চ) কেন্দ্রের সচিব এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট চৌধুরী মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই পরীক্ষার্থীকে দুইদিনের কারাদন্ড প্রদান করেন। এছাড়াও পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্ন ফাসের ঘটনায় সাধারণ পরীক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
ফয়সাল ইসলাম চৌধুরী(৩০) জেলা শহরের থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সার্টিফিকেট সহকারী পদে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, জেলার সাধারণ প্রশাসন এবং এর আওতাধীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ১৩,১৪ এবং ১৬ তম গ্রেডের পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ২৮টি শূন্যপদে জনবল নিয়োগের লিখিত পরীা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আবেদন করেন ৫ হাজার ৬৮৫ জন আবেদন করেন। শনিবার সকাল ১০টার দিকে নীলফামারী সরকারি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ছমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ছমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরুর ২০ মিনিট পর ফয়সাল নকলের মাধ্যমে লিখতে শুরু করেন। দায়িত্বরত পরীক বিষয়টি দেখতে পেয়ে তাঁকে আটক করেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হলে বিচারক ফয়সালকে দুই দিনের কারাদন্ড দেন।
একাধিক সুত্রে জানা গেছে, পরীক্ষা শুরুর প্রায় এক ঘন্টা আগেই প্রশ্ন ফাস হয়ে বাজারে আসে। শুরু হয় বিভিন্ন মহলের দৌঁড়ঝাপ। পরীক্ষা শুরু হতে না হতেই উত্তর পৌঁছতে শুরু করে পরীক্ষার্থীদের মোবাইল আর ডিভাইসে।
নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজ ও ছমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, দেখে মনে হয় পরীক্ষা হলের সার্বিক চেহারা ভাল কিন্তু ভিতরে সবই সচল। বিশেষ করে মহিলা কলেজের কয়েকটি রুমের অবস্থা ভয়াবহ। রুম কন্টাক। জন প্রতি ৩০ থেকে ৪০হাজার টাকা। কলেজের বেশ কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক সরাসরি এ রুম কন্টাকের সাথে জড়িত বলে চাকুরী প্রত্যাশীরা অভিযোগ করেছেন। কলেজের কয়েকজন শিক্ষকতো প্রকাশ্যে দর কষাকষি করে টাকা হাতানোর বিষয়টি শহরে ওপেন সিক্রেট বলে জানা গেছে। গত দুদিন কলেজের আশপাশে তারা মহাব্যস্ত সময় পার করেছেন।
এদিকে অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, উক্ত পরীক্ষায় জেলা প্রশাসক দপ্তরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয়স্বজন অংশ নেয়ায় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনাটি ঘটেছে। আরো অভিযোগ করে বলেন, আটক ফয়সাল প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আত্মীয়, তাই সে প্রকাশ্যে নকল করার চেষ্টা করেছে। আইনের চোখে সবাই সমান প্রশাসন তা প্রমান করে দিলো।
নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, অনাকাক্সিত এই ঘটনার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে। ছমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষার্থী ফয়সাল ইসলাম চৌধুরীকে হাতে লেখা উত্তরপত্রসহ আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁস ও রুম কন্টাক্টের বিষয় জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা প্রশাসক বলেন, এরকম হওয়ার সুযোগ নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।