বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ১১:৪২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠকে বিস্তারিত দ্বিপক্ষীয় আলোচনা দেবহাটায় ১৩শ কেজি অপরিপক্ক ক্যামিকেল মিশ্রিত আম বিনষ্ট দেবহাটায় এ্যাডভোকেসী মেলা উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা এমপি দোলনের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন ইঞ্জিঃ সুমনসহ ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দ কালিগঞ্জের পল্লীতে বজ্রপাতে মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে কেএমপি’তে কনস্টেবল ও নায়েকদের “দক্ষতা উন্নয়ন কোর্স” প্রশিক্ষণ ১৬ তম ব্যাচের সমাপনী ও সনদপত্র বিতরণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট ‘বিএফডিসি রেডি টু কুক ফিশ’ ও মিল্কিং মেশিন হস্তান্তর কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে তিনজনই নতুন মুখ নির্বাচিত সাঘাটায় রোস্তম আলী ও রওশন আরা ভাইস চেয়ারম্যান নিবাচিত তথ্য অধিকার আইনের আওতায় গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে  -তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী

আমরা কি কেউ ভেবেছি, অনাকাঙ্ক্ষিত এই মৃত্যুর পর কাছের মানুষগুলোর কষ্ট পাবে কতটা

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১ মে, ২০২৩, ৭.৪৮ এএম
  • ৫৭ বার পঠিত

 

ইরানের বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক আব্বাস কিয়ারোস্তামির আলোচিত সিনেমা ‘ টেস্ট অব চেরি’ বা ‘চেরি ফলের স্বাদ’ সিনেমার প্রধান চরিত্র বাদিল যখন বারবার আত্মহত্যা করতে চায়, কেউ তাকে এ কাজে সাহায্য করেনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক বয়স্ক লোকের আত্মহত্যা থেকে ফিরে আসার গল্প শুনে সে এ পথ থেকে ফিরে আসে। সেই বৃদ্ধ জানায়, স্নিগ্ধ এক ভোরে একদিন গাছ থেকে মাটিতে পড়া চেরি ফলের স্বাদ গ্রহণ করে সে। তখন তার উপলব্ধি হয়, এই চেরি ফলের স্বাদ না নিয়ে পৃথিবী থেকে যদি চলে যেতেন তিনি, তাহলে দারুণ আফসোস হতো।

নিজেকে জীবনের পথ থেকে সরিয়ে দেওয়ার যে নারকীয় ইচ্ছা আমরা মনে পোষণ করি, তারা কেউ কি কখনও জীবনের ছোট ছোট এই আনন্দের কথা ভেবে দেখিছি। আমরা কি কেউ ভেবেছি, অনাকাঙ্ক্ষিত এই মৃত্যুর পর কাছের মানুষগুলোর কষ্ট পাবে কতটা। সাময়িক হতাশা বা অপ্রাপ্তি থেকে মুক্তি লাভের পথ ‘আত্মহত্যা’ হতে পারে না। তবু তো মানুষ পা বাড়ায় এ পথে। সাময়িক কষ্টের হাত থেকে বাঁচতে নিজেকে নিয়ে যায় চির অন্ধকারের পথে।

সাম্প্রতিক দুটি কেস স্টাডি

সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া আত্মহত্যার দুটি ঘটনায় আলোকপাত করি। সাময়িক মনোস্তাপ থেকে মুক্তি পেতে যারা হেঁটেছেন জীবন বিলিয়ে দেওয়ার পথে।

ঘটনা এক: এপ্রিল ৮ তারিখ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্রী রোকেয়া সুলতানা শামসুন্নাহার হলের নিজ কক্ষে সিলিং ফ্যানে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। তার স্বামীর ভাষ্য, পরীক্ষা দিতে না পারার হতাশা থেকে আত্মহত্যা করেছেন রোকেয়া। পরিবারের সদস্যদের ভাষ্যমতে, এই হতাশা ছাড়াও পারিবারিকভাবেও সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন রোকেয়া। শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথই বেছে নিলেন তিনি।

ঘটনা দুই: ৯ এপ্রিল রবিবার, বরিশাল থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে লঞ্চ থেকে মেঘনা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন শেখ রিফাত মাহমুদ সাধ। পরদিন সকালে নোয়াখালীর কাছাকাছি একটি নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। শেখ রিফাত বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। সরকারি চাকরির আশায় পরীক্ষা দিয়েছেন অনেক। সরকারি চাকরি না হওয়ায় অবশেষে আবুল খায়ের গ্রুপ অব কোম্পানিতে চাকরি নেন। চাকরিতে যোগদান করতে বরিশাল থেকে লঞ্চে ঢাকা রওনা হওয়ার পথে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন রিফাত। লঞ্চের সিসিটিভি ফুটেজে ধারণ করা তার লাফ দেওয়ার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দেয়।

মানুষ কেন আত্মহত্যা করে

মানুষ কেন আত্মহত্যা করে, এ বিষয়ে রয়েছে নানা ব্যাখ্যা। তবে ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী এমিল ডুরখেইম চিহ্নিত করেছেন কিছু সামাজিক ও ব্যক্তিগত সমস্যাকে। পাশাপাশি কিছু কারণ ও প্রকারের উল্লেখ করেছেন তিনি। তার মতে, মানুষের যখন সামাজিক মিথস্ক্রিয়া কম থাকে বা থাকেই না; সে সময় তার ভেতর কাজ করে বিচ্ছিন্নতাবোধ, বিষণ্নতা ও বিষাদ। তখন সে আত্মহত্যার পথে পা বাড়ায়। একে বলে ইগোয়েস্টিক সুইসাইড বা আত্মবাদী আত্মহত্যা। আবার অতিমাত্রায় সামাজিক মিথস্ক্রিয়া থেকে নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে মঙ্গলের নিমিত্তে বড় আদর্শ হাসিলের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করে অনেকে, ডুরখেইমের ভাষায় তা অলট্রুয়েস্টিক সুইসাইড বা পরার্থপর আত্মহত্যা।

কোনো মানুষ যখন নিজের স্বপ্নের পেছনে দৌড়াতে গিয়ে অপ্রাপ্তি থেকে হতাশ হয়ে দেখে স্বপ্ন ও বাস্তবতার মাঝের বিরাট ফারাক, তখনও সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারে। ডুরখেইম এর নাম দিয়েছেন অ্যানোমিক সুইসাইড বা দিশাহীন আত্মহত্যা। নৈতিক নিয়ন্ত্রণ ও নীতিবোধের বেড়াজালে আবদ্ধ মানুষ যখন দেখে, তার বাসনা পূরণের সব পথ বন্ধ, ইচ্ছাগুলো অপূর্ণই থেকে যাবে, তখনও সে আত্মহত্যার পথে পা বাড়ায়। নিজেকে বিলীন করে দেওয়ার এই ভাবনা বা হননকে তিনি সংজ্ঞায়িত করেছেন ফ্যাটালিস্টিক সুইসাউড বা নিয়তিবাদী আত্মহত্যা হিসেবে।

দেশের সব স্তরের শিক্ষার্থীর মধ্যে আত্মহত্যা সংক্রামক হারে বেড়ে চলছে
শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি

আত্মহত্যা আমাদের সমাজের এক নীরব ব্যাধি হিসেবে ছড়িয়ে পড়ছে। যার শিকার অধিকাংশ সময়ই তরুণ প্রজন্ম। তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করা অলাভজনক সামাজিক সংস্থার একটি গবেষণায় দেখা যায়, দেশের সব স্তরের শিক্ষার্থীর মধ্যে আত্মহত্যা সংক্রামক হারে বেড়ে চলছে। তাদের উদ্যোগে ২০২২ সালে শিক্ষার্থীদের আত্মহননের তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে সারাদেশে ৪৪৬ জন স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার খবর পেয়েছেন তারা। এদের মধ্যে স্কুল ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩৪০ জন। কলেজ ও সমমান পর্যায়ের ১০৬ জন শিক্ষার্থী আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। যাদের মাঝে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ৫৪ জন। নারী শিক্ষার্থী ২৮৫ জন এবং পুরুষ শিক্ষার্থী ১৬১ জন। এ ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৮৬ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাইয়ে দেখা যায়, নারীদের আত্মহত্যার প্রবণতা পুরুষ শিক্ষার্থীদের তুলনায় বেশি। স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যাকারী নারী শিক্ষার্থীর পরিমাণ ৬৫.৩০ শতাংশ এবং পুরুষ শিক্ষার্থী ৩৪.৭০ শতাংশ। অন্যদিকে, শুধু কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহননকারী নারী ৫৯.৪৪ শতাংশ এবং পুরুষ ৪০.৫৬ শতাংশ রয়েছে।

দেখা যায়, বয়ঃসন্ধিকাল পার হওয়া শিক্ষার্থীরাই রয়েছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার দিকে এগিয়ে গেছেন। সংখ্যায় তা ৪০৫ জন এবং শতকরা হিসেবে ৭৬.১২ শতাংশ। এর মধ্যে নারী ৬৫.৯৩ শতাংশ এবং পুরুষ ৩৪.০৭ শতাংশ রয়েছেন। আবার ৭ থেকে ১২ বছর বয়সি শিক্ষার্থী রয়েছেন ৪৩ জন বা ৮.০৮ শতাংশ। এর ভেতর নারী ৪৬.৫২ শতাংশ থাকলেও পুরুষ রয়েছেন ৫৩.৪৮ শতাংশ।

সংগ্রহেঃ এম সোহেল মাহমুদ

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
    123
11121314151617
18192021222324
25262728293031
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com