শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
সকল টেলিভিশন চ্যানেল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ‘জুলাই অনির্বাণ’-শীর্ষক ভিডিওচিত্র প্রচারের উদ্যোগ আ.লীগ নিজেরাই নিজেদের পতন ডেকে এনেছে : জামায়াত আমির ব্রেক ফেল হয়ে প্ল্যাটফর্ম থেকে ২ কিঃমিঃ দূরে গিয়ে থামলো ট্রেন গণমাধ্যমের অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় সভা আয়োজনসহ কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন জনাব বাহারুল আলম নতুন সিইসি নাসির উদ্দীনের পরিচয় কালিগঞ্জে আছিয়া লুতফর প্রিপারেটরি স্কুলে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত সলেমান মামুন ব্যারিস্টার সুমন দুই দিনের রিমান্ডে ডিএমপির ৩৮তম পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন শেখ মোঃ সাজ্জাত আলী বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা

দেশের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩, ১০.৩৫ এএম
  • ৯৯ বার পঠিত

স্বাধীন বাংলাদেশে পরমাণু শক্তি কমিশন প্রতিষ্ঠায় পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার অবদানঃ

১৯৭২ সালের শেষ পর্যায়ে ইন্টার কন্টিনেন্টালে এক বিজ্ঞান সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয়, সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে আনবিক শক্তি কমিশনের মতো একটি ব্যায়বহুল সংস্থা আলাদা ভাবে না রেখে ড. কুদরত-ই-খুদা কতৃক প্রতিষ্ঠিত সায়েন্স ল্যাবরেটরির সঙ্গে একত্রিত হয়ে কাজ করাই সমীচীন হবে।কিন্তু ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া নাছোড় বান্দার ন্যায় পরদিন সকালে তখনকার আনবিক শক্তি কমিশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ড. আনোয়ার হোসেনকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাদেশে আনবিক শক্তি কমিশনের যথার্থতা বোঝাতে সক্ষম হন।পরবর্তী ১৯৭৩ সালে মহামান্য রাষ্টপতির আদেশ বলে বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশন গঠিত হয়।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে পরমাণু শক্তি কমিশন প্রতিষ্ঠায় ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার অবদান সর্বজনস্বীকৃত। ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া দেশের অভ্যন্তরে কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে তেজস্ক্রিয়তার ঝুঁকি কমানোর জন্য পারমাণবিক নিরাপত্তা ও বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ (পানিবিনি) বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করার পর ছাত্রদল নেতারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে আনবিকশক্তি কেন্দ্রকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং ঐ স্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আবাসিক হল স্থাপনের ঘোষণা দেন।বিএনপি সরকার ওই প্রতিষ্ঠানটিকে সরানোর নির্দেশ দিলে কমিশনের বিজ্ঞানীদের মধ্যে একমাত্র ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়াই প্রকাশ্যে এর বিরোধিতা করেন, যার ফলে ওই প্রতিষ্ঠানটি এখনো ওই স্থানে ( বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস) বহাল অবস্থায় গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।১৯৯৩ সালে যখন পরমাণু শক্তিকেন্দ্রকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তরের কথা উঠেছিল তখনও তিনি তাঁর ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা দিয়ে সে প্রক্রিয়াকে বন্ধ করতে সমর্থ হয়েছিলেন।
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা মুলুক লেখার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী স্বীকৃতি অর্জন করায় সরকার ১৯৯৭ সালে তাঁকে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ প্রদান করেনএবংতিনি কমিশনের পঞ্চম চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।১৯৯৯ সালে কমিশনের চেয়ারম্যান থাকাকালে তিনি চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।কমিশনে চাকুরীতে থাকাকালীন সময়ে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আনবিক শক্তি কমিশনের অধীনে RTI অর্থাৎ Radiation Testing Laboratory নামে চট্রগ্রামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এবং তাতে বাংলাদেশর যত প্রকার খাদ্যদ্রব্য(দুধসহ) আমদানি হতো সব দ্রব্যাদি ওই গবেষণাগারের ছাড়পত্র ছাড়া বাজারজাত করা নিষিদ্ধ করা হয়।বর্তমানে ওই প্রতিষ্ঠানটি Radioactivity Testing and Monitoring Laboratory নামে চট্রগ্রামে কার্যকর রয়েছে।

আজ ৯’মে ২০২৩ ইং স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জ্যেষ্ঠ জামাতা উপমহাদেশের প্রখ্যাত পরমাণুবিজ্ঞানী, বিশিষ্ট বিজ্ঞান ও শিশু সংগঠক ড. এম. এ ওয়াজেদ মিয়ার ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৯সালের ৯ মে ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী তিনি রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেপুর গ্রামে এক অত্যন্ত সম্ভান্ত্র মুসলিম “মিয়া ” পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি সর্বকনিষ্ঠ।তাঁর শৈশব নাম ছিল “সুধা” মিয়া, সেই নাম থেকেই ধানমন্ডি-৫ এর নিজ বাড়িটির নামকরন করা হয়েছে “সুধাসদন”। পিতা মরহুম আবদুল কাদের ছিলেন একজন অত্যন্ত বিনয়ী ও ধর্মপ্রাণমানুষ। মা মরহুম বেগম ময়মান নেছা ছিলেন গৃহিণী, ধর্মপরায়ণ আদর্শ স্নেহময়ী মহীয়সী নারী।

ড. ওয়াজেদ মিয়া ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন এবং মাত্র ১৪ বছর বয়সেই ১৯৫৬ সালে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় (অংকে ডিসটিংকশন সহ) কৃতিত্বের সাথে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন।১৯৫৮সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আইএসসি পরীক্ষায় (অংকে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে ডিসটিংকশন সহ) প্রথম বিভাগে মেধাতালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে উত্তীর্ণহন।অতঃপর দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান সম্মান (অনার্স) শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং ফজলুল হক হল এর আবাসিক ছাত্র হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা আরম্ভ করেন।

সে সময় ঢাকা সহ সারা দেশেই রাজনৈতিক আন্দোলনের পাশাপাশি ছাত্র আন্দোলন দানা বেধে উঠে ।ইতিমধ্যে তিনি ছাত্রলীগে যোগদান করলে তাঁকে ফজলুল হক হল শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।সে সময় শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের বিভিন্ন দাবির জন্য ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে, অন্যদের সঙ্গে তিনিও গ্রেফতার হন এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েক মাস বন্দী থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে পরিচিত হন এবং বঙ্গবন্ধু তাঁর সম্পর্কে অবগত হন। বন্দী অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে ড.ওয়াজেদ মিয়া ছাত্র আন্দোলনের পাশাপাশি পড়াশোনায় আত্মনিয়োগ করেন এবং ১৯৬১ সালে প্রথমশ্রেণীতে মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান দখল করে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত থেকে ও তিনি বিরতিহীনভাবে ১৯৬২সালে এমএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণহন।অতঃপর তিনি ১৯৬৩সালের ১লা এপ্রিল পাকিস্তান আনবিক শক্তি কমিশনে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন।কয়েক মাস লাহোরে প্রশিক্ষণে থাকা অবস্থায় বৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনস্থ ইম্পেরিয়েল কলেজে ভর্তি হনএবং১৯৬৪সালে ওই কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে এমএস ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ডের দারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। দেশে ফিরে পাকিস্তান আনবিক শক্তি কমিশনের অধীনে আনবিক শক্তি কেন্দ্র, ঢাকায় উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কাজে যোগদান করেন এবং ১৯৬৮ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। উল্লেখ্য ওই সময় অর্থাৎ ১৯৬৬ সালের ৬দফা এবং ১১দফা সহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় তখন আইয়ুব মোনায়েম সরকারের ষড়যন্ত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জেলখানায় বন্দী রাখা হয়।

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ১৯৬৯ সালে ৬ মাসের জন্য ইতালিতে এবংনভেম্বর ১৯৬৯ থেকে নভেম্বর ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডে postdoctoral work in Nuclear Physics এর ওপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।১৯৬৯ সালে ইতালির ত্রিয়ন্তিতে আন্তর্জাতিক তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র ড. ওয়াজেদ মিয়াকে ৬ বছরের জন্য গবেষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব করেন পাকিস্তানের নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম।ওই বছরের ১২ এপ্রিল সস্ত্রীক ইতালি যান ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া।কিন্তু ৭ মাস পরই দেশে ফিরে আসেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।ওই রাতেই পাকিস্তানি সৈন্যরা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে।ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধুর বড় পুত্র শেখ কামাল ও মেঝ পুত্র শেখ জামাল, বাংলাদেশকে শত্রুমুক্ত করতে বাংলার দামাল ছেলেদের সাথে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য ঢাকা ত্যাগ করেন। উল্লেখ্য, এ সময় জননেত্রী শেখ হাসিনা সন্তানসম্ভবা ছিলেন।এমতাবস্থায় ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়াই ছিলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা, বেগম ফজিলাতুন নেসা মুজিব, শেখ রেহানা, ৭ বছরের শিশু শেখ রাসেলের ভরসার স্থল।ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বঙ্গবন্ধুর ভবন ত্যাগ করে ধানমন্ডি ৮নংসড়কের বঙ্গবন্ধুর এক হিতাকাঙ্ক্ষীর বাসায় সবাইকে নিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেন।

১৯৭৩ সালে যুক্তরাজ্যে ডায়েমবেরি নিউক্লিয়ার গবেষণা কেন্দ্রে হাই অ্যানার্জি পার্টিকেল ফিজিক্স নিয়ে উচ্চতর গবেষণা করেন।১৯৭৫ সালের ১৫আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন স্ব-পরিবারে নৃশংসভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হন, তখন ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্ত্রী সন্তান সহ পশ্চিম জার্মানিতে ছিলেন পদার্থবিজ্ঞানে উচ্চতর গবেষণার জন্য।

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া পশ্চিম জার্মানির কার্স্লরূয়ে পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে চুল্লি তত্ত্ব ও চুল্লি প্রকৌশল বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।উল্লেখ্য, তিনি চুল্লি পরিচালনা, স্বাস্থ্য পদার্থবিদ্যা ও সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান, চুল্লি নিরাপত্তা রক্ষা এবং চুল্লি উপকরণ ব্যবস্থাপনা ও পদ্ধতি বিশ্লেষণের উপর ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

লেখকঃ
মোঃ শামছুল আলম অনিক; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
      1
23242526272829
30      
  12345
20212223242526
2728293031  
       
15161718192021
2930     
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com