এ যেনো গ্রামে বেড়াতে যাওয়া নয়, মুক্ত হওয়ার অনুভূতি কুড়াতে যাওয়া…
ঢাকা প্রিয় শহর। পৃথিবীর বহু কোনও সুন্দর শহরে গিয়ে একসময় দেখেছি- আকর্ষণ, ভালোলাগা একসময় ফিঁকে হয়ে আসে। মনে হতে থাকে কবে দেশে ফিরবো, ঢাকায় ফিরতে আর কতদিন বাকি।
কি আজব কান্ড! এই ঢাকা ছেড়ে কোথাও যখন যেতে পারি, পরানটা একটু মুক্ত হলো মনে হয়। হাল্কা বোধ হয়। আরাম লাগে। ঢাকায় দিন শুরু হয় চাপ নিয়ে। সে চাপ ধীরে ধীরে অস্থিরতা তৈরি করে। স্বস্তিতে দিন কাটানো সম্ভব হয়না।
দোষ ঢাকার নয়। শহুরে কান্ডকীর্তি, মানুষের আচার ব্যবহার, চলন বলন এমন- চাইলে মনের স্বাচ্ছন্দ টিকিয়ে রাখা কারও পক্ষেই সম্ভব হয়ে ওঠেনা। সবারই দিন শুরু হয় চাপ নিয়ে। দিন গড়ায় আর সে চাপ বৃদ্ধি পেতেই থাকে।
আমরা প্রত্যেকেই এটা জরুরী, ওটা না করলে সর্বনাশ হয়ে যাবে ভেবে কত কি করি- শুধু নিজেকে খুশী করার জন্য কোনটা করা দরকার- ভাববার সময় মেলেনা।
এবার পারুলিয়া যাওয়ার সময় মনে হয়েছিল, ফেলে রেখে যাচ্ছি যাবতীয় অস্থিরতা। দুটো দিন থাকা যাবে, কাটানো যাবে যেমন খুশী তেমন করে।
কান পেতে পাখিদের ডাকাডাকি শুনেছি। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছে ঝরে পড়া ফুল, বাতাসে কোন পাতা কিভাবে দোলে- মন দিয়ে দেখা হয় ঢাকা ছেড়ে গেলে।
শহরের অস্থির জীবন ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারলে রাতের আকাশের চাঁদটাকে অবাক হয়ে দেখার মতো মনে হয়। ভোর, সকাল ও দুপুরের চেহারা, বিকেলের রঙে মুগ্ধ হওয়া, সন্ধ্যার বিষন্নতা উপলব্ধি করা তখনই সম্ভব, যখন মনের মুক্তি মেলে- যখন মনে চাওয়াগুলো উদয় হয়।
অন্ধকারে বসে রয়েছি। হাওয়া বয়। কোলের উপর ছোট্ট একটা পাতা ঝরে পড়ে। হরেক রকম পাতার শব্দ শুনতে পাই। শহরে যা সামান্য রাত- তা কোথাও কখনও হয়ে ওঠে আনন্দ ও বেদনার রঙের রাত্রি।