এ,এস,এম জাফর ইকবাল (যশোর) ঝিকরগাছা প্রতিনিধি : যশোরের ঝিকরগাছায় পৃথক স্থানে দুটি গৃহবধু গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। মনিরামপুর উপজেলার মুক্তারপুর গ্রামের মৃত আজগর আলীর মেয়ে ও ঝিকরগাছা পৌর সদরের পুরন্দরপুর বিহারীপাড়া গ্রামের গৃহবধু শিরিনা বেগম (২৩) ও ঝিকরগাছা (সদর) ইউনিয়নের হাড়িয়া দেয়াড়া গ্রামের মোঃ নজরুল ইসলামের মেয়ে মিম্মা খাতুন @ শিখা (২৭) নামের গৃহবধুরা পৃথক ভাবে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানায় পৃথক দুটি অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড হয়েছে বলে জানা যায়।
ঘটনার বিষয়ে শিরিনা বেগমের মাতা মোছাঃ সাজেদা খাতুন (৫০) এর থানায় গলায় ফাঁস দিয়া আত্মহত্যার সংবাদ প্রদানের আলোকে জানা গেছে, প্রায় ১০বছর পূর্বে তার মেয়ের সহিত ঝিকরগাছা পৌর সদরের পুরন্দরপুর বিহারীপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে সোহাগ হোসেন (২৭) এর সাথে বিবাহ হয়। তাহাদের ১কন্যা ও ১পুত্র সন্তান রয়েছে। সোহাগ প্রায় ২সপ্তাহ পূর্বে স্থানীয় টিএএসএস নামক একটি এনজিও হতে ৭০হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে। ঋণের টাকার মধ্যে ৩০হাজার টাকা সোহাগ খরচ করে ফেলে। সোমবার (২২ মে) রাত অনুমান ১১টার দিকে জামাই (সোহাগ) বাড়িতে আসলে টাকা খরচের বিষয় নিয়ে মেয়ে- জামাইয়ের মাঝে ঝগড়াঝাটি হয়। একপর্যায়ে মেয়ে শিরিনা বেগমের সাথে তার স্বামী (সোহাগ) এর মনোমালিন্য হয়। প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার (২৩ মে) রাত অনুমান দেড়টার দিকে আমার জামাই মাহিদ্র গাড়ির সিরিয়াল দেওয়ার জন্য বাড়ি হতে বাহিরে যায়। এমন সময় রাত অনুমান ১.৫০ মিনিটের সময় মেয়ের ছেলের কান্নার আওয়াজ শুনে মেয়ের শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি ঘরের সামনে গিয়ে তাহার মেয়েকে ডাকাডাকি করতে থাকে। ডাকাডাকির এক পর্যায়ে কোন সাড়া না পেয়ে ঘরের দরজা খুলে তাহার নিজ ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঘরের আড়ার সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। তখন তাদের (শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি) ডাকচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তাদের সহযোগিতায় শিরিনাকে দ্রুত নামিয়ে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরিক্ষা করিয়া শিরিনা বেগমের মৃত ঘোষনা করেন।
অপরদিকে মিম্মা খাতুন @ শিখার মাতা মোছাঃ তাছলিমা খাতুন (৫০) এর থানায় গলায় ফাঁস দিয়া আত্মহত্যার সংবাদ প্রদানের আলোকে জানা গেছে, প্রায় ৮/৯বছর পূর্বে তার মেয়ের সহিত থানাধীন মধুখালী গ্রামের মারজাদুল ইসলাম @ সুমনের সাথে বিবাহ হয়। সেই ঘরে তাহার মেয়ের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। উক্ত ঘরে জামাইয়ের সাথে মেয়ের বনিবনা না হওয়ায় ১বছর পূর্বে পারিবারিক ভাবে ছাড়াছাড়ি হলে মেয়ে ও নাতি তাহাদের বাড়িতে থাকত। পরবর্তীতে মেয়ে তার সুখের কথা চিন্তা করে ৭/৮ মাস পূর্বে পৌর সদরের কৃষ্ণনগর মাঠপাড়া গ্রামের আনিসুর রহমানের ছেলে টিপু (৩২) এর সহিত বিবাহ হয়। ১০দিন পূর্বে উক্ত জামাই টিপু মালয়েশিয়া যাওয়ার কারণে মেয়েকে তার মা তাহাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। সন্ধ্যার পর মেয়ে জামাইয়ের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলছিল। তাতে মনে হয় একটু মান অভিমান হয়েছিল। সোমবার (২২ মে) রাত অনুমান ৮.৩০মিনিটের সময় তাহারা সবাই শুয়ে পড়ে। পরবর্তীতে রাত অনুমান ১২.৩০ মিনিটের সময় ঘরের দরজা ও লাইট বন্ধ দেখে তাহার বড় মেয়ের ছেলেকে তার খালার ঘরে গিয়ে দেখার জন্য বললে সে ঘরে গিয়ে লাইট জ্বালিয়ে দেখে তার খালা মিম্মা খাতুন @ শিখা তাহার ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে।
ঘটনার বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন ভক্ত বলেন, লাশ দুইটি থানাতে নিয়ে আশা হয়েছিলো এবং লাশের ময়না তদন্তের জন্য মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুরে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আর ঘটনার বিষয়ে লাশের ময়না তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে কি কারণে মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে থানাতে পৃথক ভাবে দুটি অপমৃত্যর মামলা রেকর্ড হয়েছে।