একটি শিশুকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে প্রথমেই শিশুর পারিবারিক ও সামাজিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।প্রত্যেক শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। এটি শিশুর প্রতি করুণা নয়, শিশুর অধিকার। জাতিসংঘ ঘোষিত শিশু অধিকার সনদেও এর উল্লেখ বয়েছে। কিন্তু নানা কারণে আমাদের সমাজে এর ব্যত্যয় ঘটে। আদর-যত্নের অভাব, অসুস্থ পারিবারিক পরিবেশ, সঠিক দিকনির্দেশনা ও বিদ্যমান পারিপার্শ্বিক অবস্থার বিরূপ প্রভাবে অনেক শিশু-কিশোর প্রত্যাশিত বিকাশ থেকে বিচ্যুত হয়। পারিবারিক পর্যায় থেকে শিশুর ছোটখাটো ভুলত্রুটি সংশোধন না করলে একসময় তারা বড় ধরণের অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়ে, যা সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন ও মূল্যবোধের পরিপন্থী। এতে বিঘ্নিত হয় রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা। সামাজিকভাবে তারা কিশোর অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হয়। শিশুদের কাছে অপরাধমূলক কর্মকান্ড যেমন প্রত্যাশিত নয়, তেমনি তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে সুস্থ ও মানবিক বোধসম্পন্ন করে গড়ে তোলাও পরিবারের দায়িত্ব এবং সমাজের দায়িত্বশীলদের কর্তব্য।স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানে শিশুদের অধিকার সংরক্ষণ ও কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রথম ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করেন। এর ১৫ বছর পর জাতিসংঘ ১৯৮৯ সালে শিশু অধিকার সনদ প্রণয়ন করে। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরে বর্তমান সরকার শিশুর অধিকার ও সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যখাতে অগ্রগতির ফলে মা ও শিশুমৃত্যু কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে এবং এমডিজির লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষায় অগ্রগতি, শিক্ষায় লিঙ্গ বৈষম্য হ্রাস, উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, শিশু বিকাশকেন্দ্র স্থাপন, উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন, শিশুর প্রারম্ভিক মেধা বিকাশ, সাংস্কৃতিক কর্মকা-, খেলাধুলা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিশুদের যথাযথ বিকাশের জন্য নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় গত এক দশকে শিশুর উন্নয়ন ও সুরক্ষায় বিভিন্ন যুগান্তকারী আইন, নীতি ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।আমি কবির নেওয়াজ রাজ মনে করি, শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারের প্রচেষ্টার সাথে আমাদের সকলের স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করা প্রয়োজন।
লেখকঃ কবির নেওয়াজ রাজ
এমএমএস”রাষ্ট্রবিজ্ঞান,সিসি”জার্নালিজম,এলএলবি।