না ফেরার দেশে চলে গেলেন বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী সুবীর নন্দী। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। এর আগে, রোববার সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থা বেশ সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে। শনিবার ও রোববার পরপর দুইদিন হার্ট অ্যাটাক হয় তার। হার্টে চারটা ব্লক ছিল। রোববার সকালে চারটা রিং পরানো হয়েছে।
মৃত্যুর আগে টানা ১৮ দিন ঢাকা ও সিঙ্গাপুরের হাসপাতালের বিছানায় জীবনের সাথে যুদ্ধ করেছেন এ গায়ক। অবশেষে গত ৩ মে চোখ মেলেন ও মেয়ে ফাল্গুনীকে দেখে কাঁদেন। চিকিৎসকরা আশার আলো দেখতে পেয়েছিলেন। প্রিয় শিল্পীর সুস্থ হয়ে ওঠার সংবাদে খুশি হয়েছিলেন ভক্তরাও। এমন স্বস্তির খবরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ৪ মে ও ৫ মে দুই দফা হার্ট অ্যাটাক হয় সুবীর নন্দীর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৩০ এপ্রিল ঢাকার সিএমএইচ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় একুশে পদকপ্রাপ্ত এই সঙ্গীতশিল্পীকে। এর আগে ১৬ দিন রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
১৪ এপ্রিল রাতে সিলেট থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ট্রেনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সুবীর নন্দী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ও কন্যা। রাত ১১টার দিকে তাকে রাজধানীর সিএমএইচে নেয়া হয়। হাসপাতালটির জরুরি বিভাগে হার্ট অ্যাটাক করেন এই নন্দিত শিল্পী। এরপর তাকে দ্রুত লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও হার্টের অসুখে ভুগছিলেন সুবীর নন্দী।
সুবীর নন্দী ৪০ বছরের ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি গান। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রেও উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। ১৯৮১ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে বাজারে আসে। তবে চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে আব্দুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে।
চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি। আর চলতি বছরে সঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার সুবীর নন্দীকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করেছে।