নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলার দুইজন পলাতক আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার ( ২৪ জুন) রাত ১ টায় চারঘাট থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে দুই যুদ্ধাপরাধীকে আটক করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রেস ব্রিফিং করেন রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন।
প্রেস ব্রিফিং এ বলা হয়, শুক্রবার দিনগত শনিবার রাত ১ টায় পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের নির্দেশনায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চারঘাট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোয়াজ্জেম হোসেন এবং এস আই সোহাইল আহমেদের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল তাদের আটক করেন। আটক দুই ব্যাক্তি হলেন, চারঘাট থানার কালুহাটি গ্রামের মৃত হাবিল উদ্দিনের ছেলে মফিজ উদ্দিন (৭৫) ও একই গ্রামের মৃত মকছেদ খোরার ছেলে খেতাব (৮০) ।
এসময় পুলিশ আরো বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে অভিযুক্ত দুই আসামি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে চারঘাট মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলা নং-১৩ তারিখ ০৯-৪-২০০৯ খ্রিঃ ধারা ৩০২/২০১/১০৯/৩৪ পেনাল কোড এর এজাহারনামীয় পলাতক আসামি ছিলেন তারা।
আটক ব্যক্তিদ্বয়ের মধ্যে খেতাব এলাকায় কুখ্যাত রাজাকার হিসেবে পরিচিত এবং ১৯৭১ সালে চারঘাট থানা এবং সংলগ্ন এলাকায় গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত। আসামিদ্বয়কে রাজশাহীর বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুানালে হস্তান্তর করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রেস ব্রিফিং এ আটক রাজাকার খেতাব এবং মফিজের নৃশংসতার কিছু বর্ণনা দেওয়া হয়:
বলা হয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন চারঘাট থানা এবং সংলগ্ন এলাকায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সহযোগিতায় রাজাকার খেতাব, মফিজ এবং তাদের অন্যান্য সহযোগীরা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কারণে এরা অনেকের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল এবং নৃশংসভাবে মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করেছিল। উপরে উল্লেখিত মামলার বাদী চারঘাট থানার কালুহাটি গ্রামের গোলাম হোসেনের পিতা শহিদ রওশন আলী সরকার এবং পাশ্বর্বর্তী রোস্তমপুর গ্রামের কলিম উদ্দিনকে এদের সহযোগিতায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী আটক করে বিবস্ত্র করে গাড়ির পিছনে বেঁধে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। এর পাশাপাশি বাদী এবং তাদের প্রতিবেশী অনেকের বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল।