একটা গরীব ছেলে ছিল যে ট্রাফিক সিগনালে দাঁড়ানো গাড়িতে ফুল বিক্রি করত।একদিন এক বৃদ্ধ তাকে বললো, “এত ব্যস্ত আর বিপজ্জনক জায়গায় হকারি করো কেন?” সে উত্তর দিল, “আমি গরীব ঘরের ছেলে, বাবা আমার স্কুলের খরচ চালাতে পারে না”। বৃদ্ধ বললো, “কিন্তু এটা ভুল করছো, তুমি মেইন রোড দিয়ে দৌড়ে এত রিস্ক নিচ্ছ। তুমি কি জানো কোন গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগে যেতে পারে?” ছেলেটি ফিসফিস করে বলল, “আমাকে ইনকাম করতে হবে যেন আমি আবার স্কুলে ফিরে যেতে পারি”। বৃদ্ধ লোকটা বিরক্ত হয়ে বললো, “কিন্তু তোমার নিজ জীবন শিক্ষার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, বহু মানুষ স্কুলে পড়েনি কিন্ত তারা বিখ্যাত হয়েছেন। তুমি কি শিক্ষিত হবার জন্য জান দিতে চাও? শোনো, তুমি যদি কোনও গাড়ির ধাক্কায় পড়ে যাও, তো মাররা গেলে, কোনো লেখাপড়া সার্টিফিকেট এসব কোনই কাজে আসবে না, বুঝলে?” এরপর বৃদ্ধ আরও বললেন, ” শুধুমাত্র লেখাপড়াই সাফল্যের চাবিকাঠি নয়। এর জন্য জীবনের এত ঝুঁকি নেয়া ঠিক হবে না”।
বৃদ্ধের কথাগুলো নিয়ে অনেক ভেবে ছেলেটি সিদ্ধান্ত নিলো সে আর কখনো ফুল বিক্রি করবে না।
দশ বছর পরে, সেই গরীব ছেলেটি এখন যুবক, দারিদ্রের কারনে লেখাপড়া শেষ হয় নি, নির্দিষ্ট কোনও পেশাতেও থিতু হতে পারেনি।
একদিন সেই বৃদ্ধের সঙ্গে ছেলেটির আবার দেখা হলো, তার অবস্থা জেনে বৃদ্ধটি প্রচন্ড ক্ষেপে গেলেন,” দুনিয়ায় এত মানুষ এত কষ্ট করে লেখাপড়া করছে, প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আর তুমি দোষ দিচ্ছো বাবা-মার। তুমি নিজে কেন কিছু করোনি? সম্পূর্ণ দোষ তোমার”।
ছেলেটি বৃদ্ধের কথায় খুব আঘাত পেলো, প্রচন্ড হতাশ হলো।
“আপনি যে কাজ করতে চান অনেকেই তা থেকে আপনাকে নিরুৎসাহিত করবে। এসব লোকের কথা কী শোনেন? কতবার শোনেন? এভাবে কতবার নিজেকে অন্যের কথার গ্রাস হতে দেবেন? লোকেরা আপনাকে স্বপ্নের পিছনে ছুটতে নিরুৎসাহিত করবে, তারাই আবার স্বপ্ন পূরণ না হওয়ার জন্য আপনাকে দোষ দেবে। স্থির করুন, কি হতে চান তখন অন্যের মতামত কোনও ব্যাপার না।