মোতালেব বিশ্বাস, ইবি প্রতিনিধি।।
পঁচাত্তরের পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের মধ্যে জিয়াউর রহমান যে কাজগুলো করেছিলেন তার কোনোটিই মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষে ছিল না। তার প্রতিটি কর্মকাণ্ডই ছিল মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থি। রণাঙ্গনে জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছেন এমন কোনো নজিরও নেই। বরং একাত্তরে পাকিস্তানের এজেন্ট হিসাবে তিনি কাজ করেছেন।
২০ আগস্ট (রবিবার) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু পরিষদের আয়োজনে “মুত্যুঞ্জয়ী মুজিব” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হবে এটা কেউ কখনও কল্পনা করতে পারেনি। মহান মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির চক্রান্তে কিছু ভাড়াটি সেনারা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল। তিনি আইনমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, অতিদ্রুত বঙ্গবন্ধু হত্যার তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক। কারণ জাতি জানতে চাই এই হত্যাকান্ডের মূলনেপথ্যে কারা ছিল। এছাড়া ৭৫’র হত্যাকান্ডের মধ্যদিয়ে জাতিকে বিভক্ত করা হয়েছে। সাংগঠনিকভাবে জাতি আজ দু’ভাবে বিভক্ত। একটি শক্তি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আর অপরটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে। যতদিন এ বিভক্ত থাকবে ততদিন এদেশ উন্নয়নে বাঁধাগ্রস্থ হবে। তাই জাতির সামনে পরিস্কার হওয়া উচিত, কেন কি কারনে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছিল। তাই তদন্ত কমিশন গঠন খুব জরুরী হয়ে পড়েছে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল হাই বলেন, বঙ্গবন্ধু দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে সাড়ে ৭ কোটি মানুষকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে এদেশকে স্বাধীন করেছিলেন। আমরা সেদিন বঙ্গবন্ধুর ডাকে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু না থাকলে এদেশের স্বাধীনতা আসতো না, আর জননেত্রী শেখ হাসিনা না থাকলে এদেশ উন্নয়নের মুখ দেখতো না। তাই আসুন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় আনতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি। সভায় অপর বিশেষ অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আ.কা.ম সরওয়ার জাহান বাদশা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড.শেখ আবদুস সালাম ও সম্মানিত অতিথি ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবুল আরফিনের সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ আয়োজিত জাতীয় শোকদিবস ২০২৩ উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোঃ মিজানুর রহমান। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়।
জাতীয় সংগীত ও ১ মিনিট নিরবতা পালনের মধ্যদিয়ে আলোচনাসভার সূচনা করা হয়। আলোচনাসভার পূর্বে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল হাই এমপি।
এদিকে সকাল ১০টায় অনুষদ ভবনের নিচতলার করিডোরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে রক্তদান কর্মসূচির সম্মিলিতভাবে উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ।