মোতালেব বিশ্বাস,ইবি প্রতিনিধি।।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থী তাহমিন ওসমানকে র্যাগিং ও মানসিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী নবীন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার বরাবর অভিযোগ দিয়েছে।
রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, “ইতিমধ্যে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার বরাবর অনুলিপি পাঠিয়ে দিয়েছি। একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।”
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘পরিচয়পর্ব শেখানোর নামে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়। গত ২ সেপ্টেম্বর কয়েকজন সিনিয়র জিমনেশিয়ামের পেছনে নিয়ে পরিচয় কিভাবে দিতে হবে তা শেখানো শুরু করে। হাত-পা সোজা থাকতে হবে এরকম নির্দেশ তাদের। কিন্তু আমার হাত একটু মুঠ করায়। তারা বলে, তোর কী আমাদেরকে থাপড়াইতে ইচ্ছে করছে?’
আরো বলা হয়, ‘একদিন আবার সন্ধ্যায় সাদ্দাম হলের সামনে সবার দিকে তাকিয়ে সালাম দিতে না পারায় মিজানুর ইমন আমাকে বলেন, তুই শুধু ওদের দিকে তাকিয়েই সালাম দিলি। আমাদের দিকে তাকালি না। এর মানে শুধু ওরাই তোর বড়ভাই আর আমরা তো চু**র ভাই।
পরেরদিন ৩ সেপ্টেম্বর বিভাগের ক্রিকেটে খেলা ছিল বিকেল। বিকালে খেলার মাঠে আমি যেতে দেরি করি। খেলা শেষে শুভ এবং সাকিব ভাই আমাকে জিমনেশিয়ামের সামনে নিয়ে জিজ্ঞেসা করেন কেন আসতে দেরী করেছি। দেরী করার কারনে আবার তারা মানসিক নির্যাতন শুরু করে। তারা বলেন, যদি আমাদের কথা না মানিস। তোকে ব্যাচ আউট করে দেওয়া হবে। ‘
অভিযুক্তরা হলেন- হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মিজানুর ইমন, শুভ, পুলক ও সাকিব।
এদিকে নবীন শিক্ষার্থী র্যাগিং কান্ডে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।কমিটির অন্যরা সদস্যরা হলেন, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সেলিনা নাসরিন, আইন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমান ও সহকারী প্রক্টর মিথুন বৈরাগী। এছাড়াও কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে আছেন উপ-রেজিস্ট্রার আলিবুদ্দিন খান। তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত দিনের ভিতরে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইমন বলেন, ‘আমরা ছোটভাইদের পরিচয় নিতে সবাইকে ডেকেছিলাম। পরবর্তীতে ক্রিকেট খেলা নিয়ে তাকে পানি আনতে বলা হয়েছিল। পরে বিষয়টা শিক্ষকরা জানতে পারলে সবাই মিলে বসে কথাবার্তা ঠিকঠাক করে নিয়েছি। কিন্তু সাদ্দাম হলের সামনে অকথ্য ভাষার অভিযোগ যেটা উল্লেখ করা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এমন অকথ্য ভাষায় তাকে হেনেস্তা ও মানসিক নির্যাতন করা হয়নি। উদ্দেশ্যমূলক আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে।’
এ বিষয়ে হিউমান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি শিমুল রায় বলেন, প্রশাসনে অভিযোগ হওয়ার পর আমি ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরেছি। যেহেতু প্রশাসনে অভিযোগ দিয়েছে সেক্ষেত্রে প্রশাসন যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিবে।