শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
কুষ্টিয়াতে তিন দিনব্যাপী ইয়ুথ লিডারশীপ ট্রেনিং অনুষ্ঠিত  ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স গঠন করা হবে” -স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা নজরুল ইসলাম সরকার এর শুভ জন্মদিন বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স গঠন করা হবে যা কাজ করবে আগামী বর্ষাকাল পর্যন্ত। : পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ইউক্রেন থেকে আমদানিকৃত গম দেশে পৌঁছেছে ভারসাম্য, ক্ষমতায়ন এবং উদ্ভাবনী শক্তিতে পার্বত্যবাসীকে আরও বেশি পারদর্শী হতে হবে- উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ভোলায় ডিবি পুলিশের অভিযানে গাঁজাসহ আটক ১ সার্ভিস চুক্তিতে স্পষ্ট উল্লেখ থাকলে হাসপাতালের যন্ত্রপাতি এবং মেশিনারি অকার্যকর পড়ে থাকবে না’ – ড. ওমর ইশরাক থানায় কোন অভিযোগ বা জিডি হলে পুলিশকে দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার Youth in shaping agenda:Bangladesh 2.0 অনুষ্ঠানে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপারের অংশগ্রহণ

শুভ জন্মদিন সৌমিত দা। শতায়ু প্রার্থনা করছি সৃষ্টিকর্তার দরবারে – তৌফিক জহুর

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৩, ১.৩৯ পিএম
  • ৭৬ বার পঠিত
সৌমিত বসুঃ উপমার যাদুকর
তৌফিক জহুর
০১.
আধুনিক কবিতার বিষয় নিয়ে কথা বলতে যেয়ে প্রথমে খেয়াল রাখতে হয় কবিতার বিষয়,ছন্দ, উপস্থাপনের ঢঙ এবং শব্দের ঠাসবুনন, যাকে আমি বলি ‘শব্দের আদর’। দশক ওয়ারী বিভাজনের বিষয় অনেকেই মানতে চাননা। অনেকেই দশক নিয়ে কথা বললে আলোচনা মুশকিল, একথা বলে পাশ কাটিয়ে যান। বাংলা কবিতার জন্য সীমানা নয়, ‘শব্দের আদর’ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রাচীন আলংকারিকেরা বলেছেন, ” বাক্যং রসাত্মকং কাব্যম”… অর্থাৎ কাব্য হচ্ছে সেই বাক্য, রস যার আত্মা। আর রস হলো সেই আনন্দময় উপলব্ধি উৎকৃষ্ট কাব্যপাঠের ফলে পাঠকের পরিশীলিত হৃদয়ে যার জন্ম। কাব্যপাঠকের হৃদয় যতই পরিশীলিত হোক না কেনো, কাব্য যদি উৎকৃষ্ট না হয় তাহলে রস সৃষ্টি হওয়া সম্ভব নয়। কাব্যের লক্ষ্য রস। কবিতা সৃষ্টি হয় আনন্দ দানের জন্য। আবেগ কবিতার কেন্দ্রীয় উৎস। আবেগের সঙ্গে রস যুক্ত করে কবি নির্মাণ করেন তাঁর স্বপ্নের পথ। যে পথে পাঠক পথ চলতে যেয়ে নিজেকে শব্দের আদরে জড়িয়ে যায়।
সৌমিত বসু। আশির দশকের কবি। কবিতায় উপমার রস এমনভাবে ছড়িয়ে দিয়েছেন যা পাঠে পাঠকের চোখ বুজে আসে আবেশের চুমুতে। তিনি নিরীক্ষা করেছেন শব্দ। নিরীক্ষা করেছেন বিষয়। সময়। প্রেম। আদর।আধুনিক কবিতার বিষয় নিয়ে শুরুতে আমরা যে বয়ান দিয়েছি সেখানকার বিষয় মাথায় রেখেই আমরা একটা কবিতা লক্ষ্য করি সৌমিত বসুরঃ
“আমার আঙুল থেকে খসে পড়ে চেনা বাল্যকাল।
তাদের এক-একটি আমি ধুয়ে ধুয়ে বিছানায় রাখি
নেড়েচেড়ে দেখি,হঠাৎ হঠাৎ করে বাবার কথাই মনেআসে
ছোটোবেলা আর বাবা যেন সমার্থক মনে হয়।
আমার বুকের পাশে বসে থাকা প্রথম পুরুষ। যাকেদেখে
জড়োসড়ো হয়ে ওঠে সমস্ত ভয়,সমস্ত বাঁধা তাকে দেখে
ঢুকে পড়ে বুকের কোটরে।আমার বাবাই যেন পৃথিবীর সেরা বীর
ছুঁয়ে দিলে আমিও উড়তে পারি, আকাশ পেরিয়ে, চেনা সীমারেখা “……. ( ডাক-২)
আমাদের অনুভূতির আবেগের চিন্তার যেটা বিশুদ্ধতম নির্যাস, কবিতায় তারই প্রকাশ দেখতে পাই। ছেলেবেলায় বাবা এমন এক শব্দ যার সাথে জড়িয়ে থাকে প্রত্যেক সন্তানের হিমালয় সম এক নায়কের প্রতিকৃতি। কবি তাঁর মনের ভাব ভাষায় প্রকাশ করেছেন। কবিতা যেমন কবির ব্যক্তিত্বকে অতিক্রম করে সার্বজনীন হয়ে উঠে, তেমনি সমকালীনতাকে অতিক্রম করে চিরন্তন হয়ে হয়ে শব্দের বৃষ্টিতে। কবিকে তখন চেনা যায়, বোঝা যায়। তাঁর কবিতার ভেতরে প্রবেশ করলে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হয় এই বিষয়গুলো।
শব্দ নিয়ে কবির পথচলায় ক্লান্তি নেই। অসংখ্য শব্দ হুড়মুড় করে কবির কাছে আসতে থাকে। যেমন মুষলধারে বৃষ্টির দিনে হুড়মুড় করে শিল পড়তে থাকে। একসময় মুষলধারে বৃষ্টির নাম পাল্টে যায়, হয়ে যায় শিলাবৃষ্টি। আমরা কবি সৌমিত বসুর কবিতার মাঝে শব্দের বৃষ্টি দেখি। অত্যন্ত সাদাসিধা ভাবে শব্দ এসে জমা হয়েছে। কিন্তু একটার পর একটা শব্দ এমনভাবে বসেছে, যা পাঠে আমরা শিহরিত হই। মনে হয় শব্দ বৃষ্টি হয়ে গেছে। পরের বাক্য পাঠের জন্য তৃষ্ণার্ত হয় পাঠকের হৃদয়। এখানেই কবি সৌমিত বসু দারুণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। উপমার এমন যাদুকরী প্রভাব, আশির দশকে বিরল ঘটনা। আমরা লক্ষ্য করি,
” সকাল সকাল মা আমার যখন উঠোন ঝাঁট দেয়
আমি তখন মেঘগুলোকে নামিয়ে আনি আমাদের একচিলতে বারান্দার ওপর
এর ভেতর দু দুটো মৃত্যু ঘটে গেছে আমাদের পরিবারে
সেসব শুনে মেঘ কাঁদে, আমি সাহস দিয়ে তাকে আবার উড়ে যেতে বলি
লাভ হয়,তাদের ফেলে যাওয়া চোখের জলে,ধূলোগুলো বেশিদূর উড়তে পারেনা।
চোখের জল কতোমানুষের ওড়া এর আগে থামিয়ে দিয়েছে
কতো উড়ে যাওয়া স্বপ্নকে চোখের জল নামিয়ে এনেছে মাটির ওপর
ঘাসের ডগায় জমে থাকা কুয়াশা সেইসব কথা ঘসে মেজে তাকে তুলে রাখে।”( বাঁচা, চাঁদের ফ্যাকাশে বুকে)
০২.
সৌমিত বসুর কবিতার মধ্যে বাস্তবতা ও আবেগের সংমিশ্রণে বর্ননা এমন ভাবে নির্মাণ হয়েছে যা পাঠে আমরা চমকে উঠি। বাংলা কবিতার ভাষা নির্মাণে সৌমিত বসু একটা নিজস্ব ভাষা সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছেন, তা কবির কবিতার ভেতর প্রবেশ করলে অনুভব করা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে কবিতার প্যাটার্ন পাল্টে গেছে বলে অনেকেই নানান কথা বলে থাকেন।কিন্তু কবিতার প্যাটার্ন পাল্টে যায়নি। কবিতার ভাষায় নতুনত্ব সংযোজন হচ্ছে। সৌমিত বসু সেই পথে হাঁটছেন। কালিদাসের মেঘদূতে যেমন অলকার ধ্যানের সৌন্দর্যমূর্তিতে পৌঁছাতে গেলে ভারতবর্ষের নদ নদী গিরিপর্বতমালার প্রাথমিক বাস্তব স্তরটি অতিক্রম করে যেতে হয় তেমনি কবি সৌমিত বসুর কবিতায় প্রবেশ করতে কাব্যচেতনায়, কাব্যসৃষ্টির মধ্যেও এক লহমায় পাড়ি দিতে হয় আমাদের দারুণ সব উপমায় নির্মিত চিত্রকল্প। এই চিত্রকল্পগুলো সৌমিত বসুর শিল্পকর্মের উপাদান। এদের তিনি প্রয়োজনমতো কাব্যশরীরে গেঁথে দেন যার ফলে সব মিলিয়ে একটি অখণ্ড শিল্পকর্ম রচিত হয়। পাঠক উপমার এমনসব দারুণ চিত্রকল্পের স্বাদ পেতে পেতে এক অদ্ভুত জায়গায় এসে দাঁড়িয়ে যান, যেটা সুখানুভূতি। পাঠক যেন পেয়ে যান টাটকা ফুলের ঘ্রাণ, সজীব মাটির উর্বরতা, যা সৌমিত বসুর কবিতাকে নিয়ে যায় অনন্য মর্যাদায়। আমরা কবির আর একটা কবিতা লক্ষ্য করিঃ
“একটা উন্মাদ শহরের পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সে এসে পৌঁছালো আমাদের গ্রামে।এখানে মানুষ প্রাকৃত ভাষায় কথা বলে,এখানে জলের ভেতর থেকে শব্দ করে হেসে ওঠে সমস্ত বুদ্বুদ। পা থেকে খুলে রাখা অহংকার ছড়িয়ে রয়েছে মাটিতে। জ্যোৎস্নারাতে যাকে চিনে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসা। এখন দেখার কথা সে কিভাবে মানিয়ে নেয় এই গ্রাম।সারা উঠোন দাঁড়িয়ে রয়েছে তারই প্রতীক্ষায়।” (সে)
” পা থেকে খুলে রাখা অহংকার “…. গভীর অর্থবহ।উপমা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কবির বনেদি রুচির পরিচয় পাওয়া যায়।অত্যন্ত সাদাসিধা কবিতার লাইনগুলো দারুণ অভিনব। অনেক ইংগিতবহ। অসীম এক আকুলতার ব্যাপ্তিলাভ করেছে। ভাষা চিত্রকল্প ইত্যাদির মধ্যে আশির দশকের স্বাতন্ত্র্য কন্ঠস্বর ঘোষিত হলেও এর মধ্যে ত্রিশের আধুনিকতার স্টাইল অস্পষ্ট নয়। আমরা এই কবিতা লক্ষ্য করিঃ
” আপনি আমায় উড়োজাহাজ চিনতে শিখিয়েছিলেন।
চিনতে শিখিয়েছিলেন,একহাঁটু জ্যোৎস্নায় নুয়ে পড়া অন্ধকারে
আকাশ থেকে খসে পড়া তারা,
আমি বাধ্য ছাত্রের মতো হাতের তালুতে তালু ঘসে
ফাটল পেরিয়ে দেখি উবু হয়ে বসে আছে রাত
আর তার ফাঁক বেয়ে নেমে আসছে নানান মাপের সমুদ্র
এসব আমার আপনার কাছ থেকে শেখা”…..
( কালো, বিষম অসুখ)
চিত্র আঁকতে যেয়ে সৌমিত বসু বিশুদ্ধ আবেগের ডানায় চেপে যেখানে পাঠককে নিয়ে যান শব্দের আদরে আদরে তা পাঠক পাঠ করে থমকে যান, আবেশের আনন্দে। পাঠক বুঝতে চেষ্টা করে কবিতা কি শেষ নাকি আরো আছে। আবেগ আলোড়িত কবিতার প্রতি বাক্য বাস্তব ও উপমার মিশেল স্রোত। এই রহস্যময় আলো আঁধারির জগতে কবির বাস।
০৩.
বুদ্ধদেব বসু ‘ এ যুগের কবিতা’ প্রবন্ধে লিখেছেন, কীটস যে একবার বলেছিলেন,পৃথিবীতে কবিতার শেষ নেই, তার এ মন্তব্যের ভিত্তি ছিল শীতের কূজনহীন কাননে দুটি পোকার গুঞ্জন। কিন্তু কথাটির প্রয়োগ আরও বেশি ব্যাপক বলে মনে হয়। ১৮২১ এ মারা না গিয়ে কীটসই যদি কায়াকল্প বা অন্য কোনও জাদুবলে ১৯২১ পর্যন্ত বেঁচে থাকতেন, তা হলে পৃথিবীতে অজস্র নতুন কাব্যময় বস্তু আবিষ্কার করে তিনি চমৎকৃত হতেন। উনিশ শতকের প্রথম দিকেও এ পৃথিবী ছিল কবির চিরকালের লীলাভূমি – অর্থাৎ সেখানে ফুল ফুটত,পাখি ডাকত,চাঁদ উঠত আকাশে।'( উত্তর তিরিশঃ বুদ্ধদেব বসু, পৃষ্ঠা ৭৬)। কীটস ঠিকই বলেছেন, পৃথিবীতে কবিতা মৃত্যুহীন। বিভিন্ন ঋতুর উপঢৌকন যদি আমরা হারিয়ে থাকি এবং সে জায়গা দখল করে নিয়েছে যন্ত্র, এবং যন্ত্র অর্থাৎ বিজ্ঞান এনে দিয়েছে নিত্য নতুন উপহার,এখন এই যন্ত্র কবিতার সেবায় লেগে গেছে। বিজ্ঞানের প্রবল প্রতাপের এ যুগের কবি সৌমিত বসু। তিনি পাখির ডাক শোনেন। জোনাক পোকার আলোয় পথ চলেন। চাঁদের জোছনায় লুটোপুটি খায় তাঁর কবিতার শব্দেরা। তিনি গদ্য ঢঙে কবিতা লিখেন। সেই বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জামানা থেকে শুরু গদ্য কবিতা। যে কথা প্রাবন্ধিক ও গবেষক আবদুল মান্নান সৈয়দ তাঁর “ঈশ্বরগুপ্ত থেকে শহীদ কাদরী ” প্রবন্ধ গ্রন্থে লিখেছেন, ” গদ্যকবিতা কথাটি আমি যতদূর জানি, বঙ্কিমচন্দ্রই প্রথম ব্যবহার করেন; এবং কাব্যের গদ্যের উদাহরণ – স্বরূপ কয়েকটি কবিতা বাংলা সাহিত্যে তিনিই প্রথম উপস্থিত করেন। ফরাশি সাহিত্যে গদ্যে সজ্জিত কবিতার একটি ধারাই বর্তমানঃগত শতাব্দীর জাঁ আর্তুর রঁ্যাবো বা আমাদের শতাব্দীর সাঁ জাঁ পার্স ও পল ক্লোদেল প্রমুখ এ ধরনের কবিতা লিখতে অভ্যস্ত। উত্তররৈবিক বাংলা কবিতায় অরুণ মিত্র ও লোকনাথ ভট্টাচার্য এই ধারার পথিক”। ( পৃষ্ঠা ৯১)। গদ্য কবিতার প্যাটার্ন নিয়ে কথা বলছিলাম। শুরুর ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত রূপ লিখলাম সৌমিত বসুর গদ্য কবিতার আলোচনা করতে যেয়ে। সৌমিত বসু অরুণ মিত্রে ধারাবাহিকতার আশির দশকের নায়ক। আধুনিক বাংলা কবিতার জনক মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪-৭৩) বিশ্ব কবিতার সঙ্গে বাংলা কবিতার প্রথম যোগ স্থাপন করেন, গদ্য ফরমেটে। সৌমিত বসুর কবিতা যতটুকু পাঠ পরবর্তী ভাবনায় নিমজ্জিত সেখানে একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় তিনি বিজ্ঞানের প্রবল উপস্থিতির এ জামানায় তাঁর কবিতার রাজপথ ত্রিশের কবিদের কবিতার রাজপথের পাশ দিয়ে নির্মাণ করেছেন। আধুনিকতার স্টাইল ওইটাই রয়ে গেছে কিন্তু উপমা প্রয়োগে নিজস্ব মুন্সিয়ানায় তৈরি করেছেন নিজের কবিতার পথ। যা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত নির্মাণ প্রকৌশল। উপমার যাদুকর বলা যায় তাঁকে।আধুনিকতার চরিত্র ও লক্ষ্মণ নির্ধারণ করতে যেয়ে একদা আবু রূশদ বলেছিলেন, ” আধুনিক আমরা তাকেই বলবো যাতে যুগের ছবি পরিস্ফুট এবং যার পশ্চাৎভূমি বাস্তবতাকে স্বীকার করে চলেছে। ফুল নিয়ে কবিতা লেখা আজকালকার দিনেও অমার্জনীয় নয়, কিন্তু সে কবিতা অাধুনিক হবে কিনা তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে কবির দৃষ্টিভঙির উপর। সমাজসচেতন সংস্কারমুক্ত নৈব্যক্তিক দৃষ্টিভঙিই আধুনিকতার সহজ মাপকাঠি “।( ঈশ্বরগুপুপ্ত থেকে শহীদ কাদরীঃ আবদুল মান্নান সৈয়দ, পৃষ্ঠা ২৪৯-২৫০)। আমরা সৌমিত বসুর একটি কবিতা লক্ষ্য করিঃ
” সব কিছু হয়ে গেলে সে আবার বুকের উপর উঠে আসে
স্বামীর গল্প বলে, ছেলেমেয়েদের গল্প
এমনকি আমার ছেলের পড়াশোনার খোঁজও নিয়মিত নিয়ে থাকে সে
শুধু আমার স্ত্রী বিষয়ে কোনো প্রশ্ন কখনো করেনা।
সবকিছু হয়ে গেলে আমি সংসার থেকে সরে আসি
হাত- পা ছুঁড়ে নির্ভার হয়ে যাই খুব
অনেক আলোকবর্ষ দূরে জলে ভেসে গিয়েছিল যারা
সবুজ নৌকা নিয়ে তারা যেন অহেতুক স্বপ্নে ফিরে আসে
সবকিছু হয়ে গেলে আমি গুটিসুটি নৌকায় উঠে পড়ি রোজ” ( দাবা)।
আধুনিক কবিতা জীবনের সকল বৈপরীত্যকে স্বকীয় করে নিয়েছে। সৌন্দর্য, কৌৎসিত্য,সুখ দুঃখ, আশা-নৈরাশ্যের সহাবস্থানে কবি জীবনের পূর্ণ রূপটির পরিচয় পেতে চান। এখানেই আধুনিক কবিতার জয়জয়কার। এখানেই সৌমিত বসুর সার্থকতা। তিনি তাঁর কবিতার রাজপথ আলোছায়ার মধ্যে দিয়ে অচিন্তনীয় অকল্পনীয় উপমার ডালি সাজিয়ে ক্রমাগত সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সৌমিত বসুর কবিতা পাঠ করলে চেনা যায়, এ কবিতার জনক কে? একজন কবির স্বার্থকতা এখানেই। তাঁর কবিতা পাঠে পাঠক বুঝে যায়, এটি কে লিখেছেন। সৌমিত বসুর এই নিজস্ব উপমার প্যাটার্ন তাঁর সমসাময়িক দের থেকে তাঁকে আলাদা করেছে। তিনি তাঁর সময়ের পরিপূর্ণ কবি।##

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
14151617181920
21222324252627
28293031   
       
  12345
20212223242526
2728293031  
       
15161718192021
2930     
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com