ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
ভোলায় আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের ক্যাম্পের ছাদ থেকে ঝুটন চন্দ্র শীল নামে এক আনসার সদস্যের (সিপাহি) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকাল ৯টার দিকে ভোলা সদর মডেল থানা পুলিশ ঝুটনের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। নিহত ঝুটন চন্দ্র শীল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার ছতরপুর গ্রামের সুধাংশু চন্দ্র শীলের ছেলে।
নিহত ঝোটন চন্দ্র শীল এর লাশ পোস্টমর্টেম এর পর ২ জানুয়ারি মঙ্গলবার ভোররাতে বিজয়নগরের ছতরপুরে নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছে। তার মৃত্যুতে পরিবার, বন্ধু মহল ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহত ঝোটন চন্দ্র শীলের বন্ধুরা জানায়, ঝুটন অনেক ভাল মানুষ ছিল। সে সবসময় হাসি মুখে কথা বলত। আমাদের কারো সাথে কখনো ঝগড়া হয়নি। তার কোনো অহংকার বা হিংসা ছিল না। সে আমার কাছে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সবকিছু শেয়ার করত। সে সবসময় আমাদেরকে সর্তক হয়ে চলতে বলত৷ সে কখনোই আত্মহত্যা করতে পারে না।
প্রতিবেশীরা জানাই, ঝুটন একটি অমায়িক ছেলে ছিল। তার মত ভাল ছেলে হয় না। আপনারা এলাকায় খবর নিয়ে দেখেন সে কেমন ছিল। সে পরিবারের একমাত্র ছেলে সন্তান ও উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি ছিল। ঝুটনের মৃত্যুতে তার পরিবারটি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।
ঝোটন চন্দ্র শীলের পরিবার জানায়, আমাদের পরিবারে কোনো ঝগড়াঝাটি নাই। ঝোটনের বিয়ের জন্য মেয়ে দেখা হচ্ছে। ঝুটন রাত ১০ টার দিকে প্রতিদিনের ন্যায় কথা বলেছে। ঝুটন আত্মহত্যার কোনো কারণ নেই। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের সাব্যস্ত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
ঝুটনের চাচা শ্যামল চন্দ্রশীল জানায়, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। যেখানে ঝুটনের দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল তা নিছ থেকে হাত দিয়ে লাগাল পাওয়া যায়। ঝুলন্ত অবস্থায় একটি ছবিতে দেখা যায় তার পায়ে জুতা রয়েছে, চিকন একটি রশির মাঝখানে গলায় প্যাঁছানো আর বাকী অর্ধেক রশি মাটিতে বাজ করে পরে আছে। আরো বেশ কিছু কারণ রয়েছে যা থেকে বুঝা যায় সে আত্মাহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এর সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
তার পরিবার ও কাছের বন্ধুদের থেকে জানা যায়, ঝুটন আত্মহত্যার কোন কারন নাই, সে আত্মহত্যা করিনি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।ঝুটন অনেক ভালো মানুষ ছিল, সে সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলতো। তাকে হত্যার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
ভোলা আনসার ও ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট রুবায়েত বিন সালাম জানান, নির্বাচনের ডিউটি করার জন্য গেল কয়েকদিন আগে পটুয়াখালী ক্যাম্প থেকে ভোলা ক্যাম্পে এসেছিল ঝুটন। সে এই ক্যাম্পেই থাকত। সকালে প্যারেড গ্রাউন্ডে প্যারেড চলাকালীন তাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। একপর্যায়ে অন্যান্য আনসার সদস্যরা দেখতে পায় ঝুটনের মরদেহ ক্যাম্পের ছাদের সিঁড়ির সঙ্গে ঝুলানো। এরপর তিনি পুলিশকে ঘটনাটি অবগত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেন।
ভোলা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন কুমার সাহা বলেন, এ ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে এখনো তার মৃত্যুর আসল কারণ জানা যায়নি।