সন্দেহ বলতে মূলত নিরীক্ষামূলক চিন্তাভাবনা ও যৌক্তিক অনুসন্ধানকে বোঝায়। প্রশ্ন উত্থাপন ও প্রাপ্ত তথ্যপ্রমাণ যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত সত্যের কাছে পৌঁছাতে হয়।
চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে ফেলা কোনো কাজের কথা নয়। জ্ঞানবিজ্ঞানের বড় সব আবিষ্কারের উৎসই তো আসলে সন্দেহ।১৯৯০-এর দশকে প্রথম সন্দেহ পালিত হয়। দিনটি কিন্তু পালন করতে পারেন। যা বিশ্বাস করছেন, সেই সব বিশ্বাসের ভিত্তিগুলো সত্যের নিক্তিতে মেপে দেখবেন না একবার!
অতিরিক্ত সন্দেহ প্রবণতা এক ধরনের মানসিক রোগ। বিশ্বেোস মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর, এসব কথাকে মোটেও গায়ে মাখবেন না। কারণ সন্দেহকে একেবারেই নেতিবাচক ধরে নেওয়াটা ঠিক নয়। একমাত্র সন্দেহপ্রবণ মনই সত্য পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। সন্দেহপ্রবণ মন আপনাকে বিপদ থেকে বাঁচায়ও বৈকি। এছাড়া সংশয় থেকে শিখতে পারেন জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পাঠ।
তবে জেনে রাখুন সন্দেহ বিশ্বাসের বিপরীত কিছু নয়। এ ক্ষেত্রে জার্মান বংশোদ্ভূত আমেরিকান দার্শনিক পল টিলিকের (১৮৮৬-১৯৬৫) বক্তব্যকে আমলে নেওয়া যেতে পারে। তিনি বলেছেন, সন্দেহ বিশ্বাসের বিপরীত কিছু নয়, বরং এটা বিশ্বাসেরই অংশ।
সন্দেহ-সংশয়ের ওপর ভিত্তি করেই সত্য জ্ঞানের প্রসার ঘটে।
সন্দেহ করা মানে এই নয় যে সে তোমাকে বিশ্বাস করে না বরং তোমাকে হারানোর ভয়েই সন্দেহ করে । সন্দেহ থাকা ভালো তবে অতিরিক্ত সন্দেহ আবার নিচু মন মানসিকতার পরিচয় দেয় । গভীর রাতে ফোন দিয়ে যদি ওয়েটিং পাওয়া যায় তখন না চাইতেও সন্দেহ এসে ভীড় জমায় ।
বার বার বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে যদি কেউ এড়িয়ে চলে তখনও নানা রকমের প্রশ্ন মনে জায়গা করে বসে । বিশাল মেসেজ দেয়ার পর ঘন্টার পর ঘন্টা চলে গেলেও যদি রিপ্লে না আসে কিংবা ছোট করে রিপ্লে আসে তখনও মনে সন্দেহ বাসা বাধে।
সত্যের অনুসন্ধানে সন্দেহ একটি জরুরি মনোভাব। ফারসিতে প্রবাদ , সন্দেহই হলো জ্ঞানের চাবিকাঠি। কেননা, কোনো কিছু সম্বন্ধে সন্দেহ না থাকলে অধিকতর জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়।
লেখকঃ
কবির নেওয়াজ রাজ
সম্পাদক ও প্রকাশক
মানুষের কল্যাণে প্রতিদিন।