মিউনিখ, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪:
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে মনোযোগের অন্যতম প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন।
জার্মানির মিউনিখে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় উপস্থিত বাংলাদেশি গণমাধ্যমকে দেওয়া ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এই কনফারেন্সে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতি ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। সমস্ত বিশ্বনেতারা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং তিনি এ সম্মেলনে মনোযোগের অন্যতম প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ড. হাছান জানান, সম্মেলনের প্রথম দিন শুক্রবার শেখ হাসিনা অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করেছেন, সাতটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও একটি প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
তিনি জানান, কাতার ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে রোহিঙ্গা ও ফিলিস্তিন বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক, প্রেসিডেন্ট অভ উইমেন পলিটিকাল লিডারস, ফেসবুক, হোয়াটসএপ, ইনস্টাগ্রাম পরিচালনা প্রতিষ্ঠান ‘মেটা’র গ্লোবাল চেয়ারম্যানের সাথে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. সায়মা ওয়াজেদকে সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক নির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানান।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংক ৫৬টি চলমান প্রকল্পে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন করেছে। তারা এ বছর ৫০৯ মিলিয়ন ডলার বাজেট-সহায়তা এবং রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিউনিটির জন্য ৭০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার অঙ্গীকার করেছে। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ দেন ও বাজেট-সহায়তা অর্থ দ্রুত ছাড়ের অনুরোধ জানান।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য জার্মান প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত নাগরিক সম্বর্ধনায় বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, নির্বাচনবিরোধী দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে, রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বাংলাদেশে একটি ভালো নির্বাচন হয়েছে। ভারত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘে ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোসহ ৭০টিরও বেশি দেশ এ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দেশে সংসদ নির্বাচনে ৪২ শতাংশ ভোটকে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নির্বাচনের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, ২০২১ সালে পর্তুগালে নির্বাচনে ২৯.৭ শতাংশ ভোট পড়ে। রোমানিয়ার নির্বাচনে ৩১.৮৪ শতাংশ এবং হংকংয়ের নির্বাচনে ৩০ শতাংশ ভোট পড়ে। এ দেশগুলোতে কোনো বিরোধী দল ছিল না।
###
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য পর্যাপ্ত তহবিল যোগানের বিকল্প নেই : মিউনিখে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মিউনিখ, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪:
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন,
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় শক্তিশালী বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব, সমষ্টিগত পদক্ষেপ ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পর্যাপ্ত তহবিল যোগানের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য তহবিলের যোগান ক্রমেই কমে আসছে। কিন্তু বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন ও সহনশীলতা অর্জনে এ দেশগুলোর জন্য পর্যাপ্ত তহবিল নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
জার্মানির মিউনিখে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় বার্ষিক আন্তুর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠক হিসেবে আয়োজিত ‘কারণ ও প্রভাব : জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দ্বিমুখী লড়াই’ (Cause and Effect : A Two Front Battle against Climate Change) শীর্ষক ফোরামে মন্ত্রী এ আহবান জানান।
কার্বন নি:সরণে নগণ্যতম (বৈশ্বিক নি:সরণের ০.৪৮%) দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বোচ্চ হুমকির মুখে থাকা দেশগুলোর অন্যতম উল্লেখ করে পরিবেশবিদ মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, একইসাথে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবেও চিহ্নিত। ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্ল্যান’ এ ক্ষেত্রে একটি শীর্ষ পরিকল্পনা।
ফোরামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ ক্ষেত্রে বহুমাত্রিক উদ্যোগের কথা জানান এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধি, দেশের উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা বৃদ্ধি, উত্তরাঞ্চলে খরা, দক্ষিণাঞ্চলে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, সারাদেশে বন্যার প্রকোপ মোকাবিলায় জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড, বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এবং জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনাসহ বাংলাদেশের নীতি এবং কর্মসূচি তুলে ধরেন।
ফোরামে নরওয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী অ্যান বিথ টিভিনেরিম (Anne Beathe Tvinnereim), পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জলিল আব্বাস জিলানি (Jalil Abbas Jilani), সংযুক্ত আরব আমিরাতের জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ মন্ত্রী মরিয়ম বিনতে মোহাম্মদ সাইদ আলমেইরি (Mariam binte Mohammed Saeed Almheiri)
প্রমুখ প্যানেলিস্টরা বিশ্বব্যাপী সমন্বিত প্রচেষ্টার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।