বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড ২৭ মার্চ ২০২৪ তারিখে জারিকৃত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয় তাঁতী সমিতি পরিচালনার জন্য গঠিত এডহক ব্যবস্থাপনা কমিটি বাতিল করেছে। বাংলাদেশ জাতীয় তাঁতী সমিতি পরিচালনার জন্য ২০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে ১২ সদস্য বিশিষ্ট একটি এডহক ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছিল: যা ২০২৩ সালে পুনরায় আরও দুই বছর সময় বৃদ্ধি করা হয়। বিধি-বর্হিভূতভাবে কমিটির নিয়োগ, কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, এমপি বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা নেয়ার নির্দেশ দেন। এ প্রেক্ষিতে এডহক কমিটি বাতিল করা হয়।
তাঁতী সমিতি বিধিমালা-১৯৯১ এ তাঁতী সমিতির গঠন ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বিষয়গুলি বর্ণনা করা আছে। বিধিমালা এর ২য় পরিচ্ছেদের ০৪ এর বিধান অনুসারে “জাতীয় পর্যায়ে একটি মাত্র তাঁতী সমিতি থাকিবে। মাধ্যমিক তাঁতী সমিতিসমূহের সমন্বয়ে জাতীয় তাঁতী সমিতি গঠিত হইবে। জাতীয় তাঁতী সমিতির প্রধান কার্যালয় ঢাকায় হইবে”। অর্থাৎ উপবিধি অনুযায়ী মাধ্যমিক তাঁতী সমিতির একজন করে প্রতিনিধি জাতীয় তাঁতী সমিতির সদস্য হবে।
জাতীয় তাঁতী সমিতি বিধিমালা-১৯৯১ এর ৫ম পরিচ্ছেদ এর ২২(ঘ) এর বিধান মতে যথাসময়ে নির্বাচন না হলে তথা নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠিত না হলে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এডহক কমিটি নিযুক্ত করতে পারেন। সে অনুযায়ী ২০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান দুই বছরের জন্য একটি এডহক কমিটি গঠন করেছিলেন। কিন্তু দুই বছরের মধ্যে কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। উপরন্তু ৬ জুলাই ২০২৩ তারিখে এক অফিস আদেশের মাধ্যমে এডহক কমিটির মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়িয়ে অর্থাৎ ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। এতে সাধারণ তাঁতী ও তৃণমূল তাঁতী নেতারা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। একে অনিয়ম হিসেবে অবহিত করে তাঁরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। তারা এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন ও আন্দোলন শুরু করেন।
এ বছর জানুয়ারি মাসে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর জনাব জাহাঙ্গীর কবির নানকের কাছে সংক্ষুব্ধ তাঁতীরা ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড ২৭ মার্চ ২০২৪ তারিখে ইস্যুকৃত অফিস স্মারক নং-২৪.০৫.০০০০.৫২১.০৬.১৫(অংশ-৩).২১-১০৩ এর মাধ্যমে বিদ্যমান বাংলাদেশ তাঁতী সমিতির এডহক ব্যবস্থাপনা কমিটি বাতিল করে।