বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতকে সমৃদ্ধ করার কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুর রহমান।
আজ ১১ই জুন মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ওয়ার্ল্ড ফিশ বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত ফাইনাল ওয়ার্কশপ এন্ড ফেয়ার অব আর্টিমিয়া ফর বাংলাদেশ প্রজেক্ট এর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
মৎস্য মন্ত্রী বলেন, আর্টিমিয়া মৎস্য খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা উৎপাদনের মাধ্যমে আমরা মাছের উৎপাদন আরও বাড়াতে পারি। এছাড়া আর্টিমিয়া উৎপাদনের মাধ্যমে আমরা বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করতে পারি। তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে এবং ওয়ার্ল্ড ফিশের উদ্যোগে আমাদের সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে লবণ চাষের পাশাপাশি আর্টিমিয়া চাষ করা হচ্ছে যার ফলে মাছ বিশেষত চিংড়ি জাতীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মাছের এ ধরনের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা জরুরী বলে তিনি এসময় বলেন। তিনি আর্টিমিয়া ফর বাংলাদেশ প্রকল্পসহ এধরনের উৎপাদনশীল প্রকল্প গ্রহণ করে বাংলাদেশের মৎস্য খাতকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ল্ড ফিশকে ধন্যবাদ প্রদান করেন।
মৎস্যমন্ত্রী জানান, মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে আমরা বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় স্থান থেকে দ্বিতীয় স্থানে উত্তরণ করেছি। আর এটি সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণেই। ২০৪১ সালে আমাদের ৮৫ লক্ষ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে মৎস্যমন্ত্রী আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যুগান্তকারী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে যেমনি দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তেমনি মাছ উৎপাদনেও আমরা তার নির্দেশনায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হব।
মৎস্য মন্ত্রী বলেন, আমাদের এই জাতি এমন এক জাতি, যে জাতি সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে, সকল বাধা, প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। এ জাতি একটি সশস্ত্র বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন হয়েছে। এ জাতি বাহাত্তর, তিয়াত্তর ও চুয়াত্তর সালে যে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছিল তা মোকাবেলা করেছে এবং আজকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ উন্নয়নে বিস্ময়কর দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।
তিনি বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে আমরা যেখানে দেখতে চাই, সেখানে দেখতে হলে আমাদের এই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদকে সমৃদ্ধ করতে হবে। শুধু এই দুই খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনই নয়, এই খাত থেকে আমরা যাতে কাঙ্খিত পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি সে ব্যাপারেও আমাদের প্রস্তুত হতে হবে।
তিনি ওয়ার্ল্ড ফিস ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে আগামী দিনেও নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ তথা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠন। আর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতকে সমৃদ্ধ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
আর্টিমিয়া চাষ ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য পলিসি সাপোর্ট প্রদানের বিষয়ে তিনি বলেন, এ খাতকে উত্তরোত্তর এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে ধরনের পলিসি সাপোর্টের প্রয়োজন হবে তা অবশ্যই মন্ত্রণালয় থেকে প্রদান করা হবে।
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মোঃ আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এবং প্রতিনিধিদলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া গেস্ট অব অনার হিসেবে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ জুলফিকার আলী ও বেলজিয়ামের ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক প্যাট্রিক সরগেলুস উপস্থিত ছিলেন।