শুক্রবার সন্ধ্যার দিকের এই ঘটনায় নিহতের নাম নাসির বিশ্বাস (২৯), যিনি পেশায় রাজমিস্ত্রী। একই ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা শাওন নামে আরেক যুবক আহত হয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক বলেন, নাসিরের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি মোহাম্মদপুর থানাকে অবহিত করা হয়েছে।আহত শাওন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের ঘটনার বর্ণনা শোনান।
শাওন বলেন, তিনি রায়েরবাজার এলাকায় থাকেন। মোবাইল মেরামতের দোকান রয়েছে তার। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে বাসা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হওয়ার সময় একই মহল্লার নাসিরের সঙ্গে তার দেখা হয়। তিনি যেদিকে যাচ্ছিলেন, নাসিরও সেদিকে যাবেন বলে তার মোটরসাইকেলে উঠে বসেন।
পথে বুদ্ধিজিবী কবরস্থানের পাশে সাদেক খান কৃষি মার্কেটের সামনে দিয়ে কিছু এগিয়ে যাওয়ার পর তারা দুই দল অস্ত্রধারী তরুণের ধাওয়া, পাল্টা-ধাওয়ার মধ্যে পড়ে যান বলে ঘটনার বর্ণনায় বলেন শাওন।তার ভাষ্য- এ সময় কয়েকজন ‘ওই একজনরে পাইছি রে’ বলে মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা নাসিরকে কোপ দেয়। ভয়ে নাসির মোটরসাইকেল থেকে নেমে দৌড় দিলে তারা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। এ সময় নাসিরকে বাঁচাতে গেলে তাকেও মারধর করে তারা।
নাসিরকে কেন তারা হঠাৎ করে কোপাতে শুরু করল, তা তার জানা নেই বলে দাবি করেন শাওন। ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়ার সময় ধারালো অস্ত্র হাতে এক গ্রুপকে দোকানের ভেতরে, আরেক গ্রুপকে বাইরে অবস্থান নিতে দেখেছেন তিনি।
নাসিরকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় শিকদার মেডিকেল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন শাওন। ঢাকা মেডিকেলে আনার পর চিকিৎসকরা রাত পৌনে ৮টার দিকে নাসিরকে মৃত ঘোষণা করেন।খবর পেয়ে নাসিরের বড় ভাই ইসলাম বিশ্বাস ঢাকা মেডিকেলে আসেন। তিনি বলেন, নাসির মূলত দিনমজুরির ভিত্তিতে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। সম্প্রতি তিনি নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিকদের সর্দার বা সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করছিলেন।
ইসলাম বিশ্বাস বলেন, “বিকালে সে বাসা থেকে বের হইছিল। পরে সংবাদ পাই, তাকে ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী তারে কোপাইছে। পরে ঢাকা মেডিকেলে আইসা তো লাশ পাইলাম।”
কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড সে সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই, বলেন ইসলাম বিশ্বাস।
মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার বালিগ্রামের মো. শাহ আলম বিশ্বাসের ছেলে নাসির। ঢাকার রায়েরবাজার বারৈইখালী এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন তিনি। পাঁচ ভাই, দুই বোনের মধ্যে নাসির ছিলেন চতুর্থ।
তবে সাদেক খান কৃষি মার্কেটে সংঘর্ষে জড়ানো দুই পক্ষের বক্তব্য জানতে পারেনি, মানুষের কল্যানে প্রতিদিন সংবাদ মাধ্যমকে।