দেশব্যাপী জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছে মাদারীপুর সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী নাহিদা।
মাদারীপুর শহরের অদূরে আড়িয়াল খাঁ নদীর পাশে কুলপদ্দী গ্রামে ওর বাড়ী। নদীর সাথে নাহিদার মিতালী সেই শৈশব থেকেই। তার শৈশবের প্রিয় খেলাই ছিল পাড় থেকে আড়িয়াল খাঁর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়া। উদ্দাম সাহস নিয়ে সে অসংখ্য বার সাঁতরে পার হয়েছে উত্তাল আড়িয়াল খাঁ।
তার সৌদি আরব প্রবাসী বাবা একসময় ছিলেন এলাকার অন্যতম সাঁতারু। মূলত বাবার অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহে নাহিদা আজ দেশের অন্যতম সাতারুতে পরিণত হয়েছে।
আজ সকালে মাত্র কলেজে ঢুকেছি, প্রত্যয়ী দৃষ্টি নিয়ে সামনে এসে নাহিদা বললো- ‘ স্যার এবার জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় আমি সারা দেশে দ্বিতীয় হয়েছি।’ দেখলাম ওর গলায় ছ’টি মেডেল। ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারে সে দ্বিতীয় আর ২০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারে সে তৃতীয় হয়েছে।
বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশন আয়োজিত জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন বসেছিল গত ৮ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায়। মিরপুরের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সুইমিং ফেডারশনে ৫ দিনের এই জাতীয় আয়োজনে দ্বিতীয় শীর্ষস্থান অর্জন করে নাহিদা।
নাহিদা আমার ক্লাসেরই ছাত্রী। তাঁর অর্জনের ভাললাগা ছুঁয়ে গেল আমাকেও। শিক্ষকদের এই একটা সুবিধা- একজন শিক্ষক একাধারে গায়ক, নায়ক, নৃত্যশিল্পী, আঁকিয়ে, ক্রিকেটার, সাঁতারু, বিজ্ঞানী, পাইলট, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, প্রশাসক, মন্ত্রী সব হতে পারবে না, কিন্তু ক্লাসের একেকজন শিক্ষার্থী এরকম একেকটি কিংবদন্তি হয়ে ওঠে। ছাড়িয়ে যায় শিক্ষককে, আর শিক্ষক সকল সাফল্যের স্বাক্ষী হয়, অংশীদার হয়।
নাহিদার সাফল্যের তরঙ্গ সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজকে তরঙ্গায়িত করেছে। কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং শিক্ষকগণ নাহিদাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।