দুর্নীতি ও দারিদ্র্য দূরীকরণে অবদান রাখায় ঠাকুর পিস অ্যাওয়ার্ড-২০১৮ পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। দ্য এশিয়াটিক সোসাইটির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। ঠাকুর পিস অ্যাওয়ার্ড হচ্ছে সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির জন্য নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেড়শতম জন্মবার্ষিকীর স্মরণে দেওয়া একটি পুরস্কার।
ভারত সরকার ২০১২ সালে এই পুরস্কার প্রবর্তন করে। সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির মূল্যবোধ প্রচারের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ব্যক্তি, সমিতি, প্রতিষ্ঠানকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। ঠাকুর পিস পুরস্কার মনোনয়নের ক্ষেত্রে সাধারণত পূর্ববর্তী ১০ বছর সময়কালের অবদানগুলো বিবেচনা করা হয়। ২০১২ সালে প্রথম ঠাকুর পিস পুরস্কার প্রদান করা হয়েছিল। প্রথম ঠাকুর পিস পুরস্কার পান ভারতের আধ্যাত্মিক নেতা রবি শঙ্কর।দ্বিতীয়বার ২০১৩ সালে এই পুরস্কার পান ভারতের জুবিন মেহতা। এবার পেলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্ববাসীর কাছে দৃষ্টান্ত : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক বিশ্ববাসীর কাছে সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের দৃষ্টান্ত। দুই দেশের মধ্যকার এই সম্পর্ক ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। বিগত এক দশকে বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশের মধ্যে বিভিন্ন প্রথাগত খাত যেমন নিরাপত্তা, বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, জলবায়ু ও পরিবেশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, জনযোগাযোগ বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা প্রভূত পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
শনিবার নয়া দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিভিন্ন নতুন ও অপ্রচলিত খাত যেমন ব্লু-ইকোনমি এবং মেরিটাইম, পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, মহাকাশ গবেষণা, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রপ্তানি ও সাইবার সিকিউরিটি প্রভৃতি খাতে উভয় দেশের সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত হয়েছে। এসব বহুমুখী ও বহুমাত্রিক সহযোগিতার ফলে আমাদের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিশ্ববাসীর সম্মুখে সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের দৃষ্টান্তরূপে পরিগণিত হচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সারা বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্ত : মোদি
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে সারা বিশ্বের জন্য অনন্য দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল শনিবার দিল্লিতে সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের পর মোদি বলেছেন, এই আলোচনা দুই দেশের জনগণের কল্যাণ ও অগ্রগতিতে আরও জোরালো ভূমিকা রাখবে।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ব্যাপারে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে মূল্য দেয়। সারা বিশ্বের মধ্যে দুই বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশীর মধ্যে সহযোগিতার অনন্য উদাহরণ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক। আমাদের আজকের এই আলোচনা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরও জোরালো করবে। আমাদের বিশেষ এই বন্ধুত্বের লক্ষ্য হলো দুই দেশের জনগণের কল্যাণ ও অগ্রগতি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে এবং তার প্রতিনিধি দলকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য নরেন্দ্র মোদির সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় ভারত : এস জয়শঙ্কর
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের এমন অনুভূতি ব্যক্ত করেন তিনি। গতকাল শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।পারস্পরিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে এই সাক্ষাতে উষ্ণ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে টুইট করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাভীশ কুমার। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ভারত যে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘সর্বোচ্চ গুরুত্ব’ দেয়, তা তুলে ধরেছেন জয়শঙ্কর।